পাচ আজার মানষর গাইবি খানি
৬
১ এরবাদে হজরত ইছা গালিল আওরর হপারো গেলাগি,
অউ আওরর আরক নাম তিবিরিয়া আওর।
২ বউত মানুষ তান খরে অইয়া যাওয়াত আছলা,
তারা তো দেখছিলা,
বেমারি অকলর উপরে তাইন কিলা কেরামতি কাম করছইন।
৩ হনো গিয়া হারি তান সাহাবি অকলরে লইয়া এক পাড়র উপরে বইলা।
৪ অউ সময় ইহুদি অকলর আজাদি ইদ ঘনাই আইছে।
৫ ইছায় চাইয়া দেখলা,
বউত মানুষ তান গেছে উঠিয়া আইরা,
অউ তান সাহাবি ফিলিফরে কইলা,
“ইতা মানষরে খাওয়ানির লাগি আমরা রুটি পাইমু কুন জাগাত?”
৬ আসলে ফিলিফরে পরিক্ষা করার লাগি তাইন ইখান জিকাইলা,
অইলে কিলা কিতা করবা,
ইখান তাইন আগেউ জানতা।
৭ ফিলিফে জুয়াপ দিলা,
“এরারে থুড়া থুড়া খানি দিলেও দুইশো দিনারর রুটিয়ে কুলাইতো নায়।”
৮ হনো আন্দ্রিয়াছ নামে হজরত ইছার এক সাহাবি আছলা।
তাইন অইলা সাইমন-পিতরর ভাই।
৯ তাইন ইছারে কইলা,
“হুজুর,
অনো হুরু এক পুয়ার গেছে পাচখান আটার রুটি আর দুইটা বিরান মাছ আছে,
অইলে অতো মানষর মাজে ইতায় কিতা অইবো?”
১০ ইছায় হুকুম দিলা,
“তুমরা অতা মানষরে ঘাসর উপরে বওয়াই দেও।”
তেউ তারা ঘাসর উপরে বইগেলা।
ইনো খালি বেটা মানুষউ আছলা অনুমান পাচ আজার জন।
১১ বাদে তাইন অউ পাচখান রুটি আতো লইয়া আল্লার শুকরিয়া আদায় করিয়া এরারে বাটিয়া দিলা।
অউলা বিরান মাছও বাটিয়া দিলা।
যে যতো চাইলো,
হে অতখান পাইলো।
১২ হকল মানষে পেট ভরি খাইলো।
খাইয়া হারলে ইছায় তান সাহাবি অকলরে কইলা,
“খানির বাদে যেতা রইছে,
তুমরা অতা একখানো দলা করো,
কুন্তা ফালাইও না।”
১৩ এরা অউ পাচখান রুটির বাড়তি টুকরাইন দলা করিয়া বারো টুকরি ভরলা।
১৪ হজরত ইছার ই কেরামতি দেখিয়া মানষে মাতা-মাতি লাগাইলা,
“নিচ্চয় এইনউ হউ নবী,
যেইন দুনিয়াত তশরিফ আনার কথা।”
১৫ তেউ ইছায় বুজিলিলা,
মানষে জুর করিয়া তানরে তারার বাদশা বানানির লাগি ধরতো চার।
অখান বুজিয়া তাইন হিরবার একলাউ পাড়র উপরে গেলাগি।
আওরর পানির উপরেদি আটা
১৬ হাইঞ্জা বালা ইছার সাহাবি অকল আওরর পারো গেলা।
১৭ আর কফরনাউম টাউনো যাইতা করি নাও লইয়া আওর পাড়ি দেওয়াত লাগলা।
ই সময় আন্দাইর অইগেছিল আর ইছাও তারার লগে আছলা না।
১৮ আওরর মাজখানো যাইতেউ খুব তুফানি বাতাস আর বড় বড় ঢেউ শুরু অইলো।
১৯ অনুমান তিন-চাইর মাইল নাও বাইয়া যাওয়ার বাদে তারা দেখলা,
হজরত ইছা পানির উপরেদি আটিয়া তারার গেছে আইরা।
ইতা দেখিয়া সাহাবি অকলে খুব ডরাইগেলা।
২০ অউ সময় ইছায় তারারে কইলা,
“ডরাইও না,
ই তো আমি।”
২১ সাহাবি অকলে তানরে নাওয়ো তুলতা চাইলা,
আর তারা যে জাগাত যাওয়ার কথা,
লগে লগে নাও গিয়া হনো পৌছি গেল।
জিন্দেগি-রুটির বেয়াপারে বয়ান
২২ আওরর হপারো যেতা মানুষ উবা আছলা,
বাদর দিন তারা বুজলা,
আগর দিন ইনো একখান নাও ছাড়া দুছরা কুনু নাও আছিল না।
তারা এওখানও বুজলা,
ইছা তান সাহাবি অকলর লগে নাওয়ো উঠছইন না,
বরং তারা একলাউ আওর পার অইছইন।
২৩ অইলে যে জাগাত ইছায় আল্লার শুকরিয়া আদায় করিয়া হারি মানষরে রুটি খাওয়াইছলা,
অউ জাগার গেছে তিবিরিয়া টাউন থাকি কয়খান নাও আইলো।
২৪ মানষে যেবলা দেখলা,
ইছা বা তান সাহাবি অকল কেউ ই জাগাত নাই,
অউ তারা অতা নাওয়াইন্তো উঠিয়া ইছার তালাশে কফরনাউম টাউনো গেলাগি।
২৫ হনো গিয়া তারা ইছারে পাইয়া কইলা,
“হুজুর,
আপনে ইনো কুন সময় আইলা?”
২৬ তাইন জুয়াপ দিলা,
“আমি তুমরারে হাছা কথা কইরাম,
তুমরা আমার কেরামতি নিশানার মানি বুজিয়া আমারে তুকাইরায় না,
বরং পেট ভরি রুটি খাইছো করিউ তুকাইরায়।
২৭ অখন হুনো,
দুনিয়াবি যে খানি নষ্ট অইযায়,
তার খরে ঘুরিয়া লাভ কিতা?
যে খানি কুনুদিন নষ্ট অয় না,
বরং আখেরি জিন্দেগি দান করে,
তার খরে অইয়া ঘুরো।
ই খানি তো আমি বিন-আদমে তুমরারে দিমু।
অউ এখতিয়ার খালি আমার আছে,
আমার গাইবি বাফ আল্লায়উ ইতার পরমান দেখাইছইন।”
২৮ ইখান হুনিয়া তারা ইছারে জিকাইলা,
“তে আল্লার কাম করার লাগি আমরা কিতা করতাম?”
২৯ তাইন কইলা,
“আল্লায় যারে পাঠাইছইন,
তান উপরে ইমান আনাউ অইলো আল্লার কাম।”
৩০ এরবাদে তারা তানরে জিকাইলো,
“তে আপনে অমন কিতা নিশানা দেখাইবা,
যেতা দেখিয়া আমরা আপনার উপরে ইমান আনমু?
আপনে কুন কাম করবা?
৩১ আমরার বাফ-দাদায় তো মরুভুমিত মান্না খাইছলা।
পাক কিতাবো লেখা আছে,
আল্লায় তারারে বেহেস্তি খানি খাওয়াইলা।”
৩২ ইছায় জুয়াপ দিলা,
“আমি তুমরারে হক কথা কইরাম,
বেহেস্তি যে রুটি তুমরা পাইছলায়,
ইতা তো মুছা নবীয়ে দিছইন না,
বরং আমার গাইবি বাফেউ তুমরারে আসল বেহেস্তি রুটি দান করইন।
৩৩ আর আল্লার দেওয়া হউ রুটি অইলা অউ জন,
যেইন বেহেস্ত থাকি লামিয়া আইয়া হারা জগতরে জিন্দেগি দেইন।”
৩৪ তেউ তারা কইলো,
“হুজুর,
তে অউ রুটিউ আমরারে হর-হামেশা দেউক্কা।”
৩৫ ইছায় কইলা,
“আমিউ হউ জিন্দেগি-রুটি।
যে জন আমার গেছে আয়,
তার কুনু সময় ভুক লাগে না,
আর যে আমার উপরে ইমান আনে,
তার কুনু সময় পিয়াছেও ধরে না।
৩৬ আমি তো তুমরারে মুখদি কইছিও,
আর তুমরা আমারে দেখিয়াও ইমান আনলায় না।
৩৭ আমার গাইবি বাফে যেরারে আমার আতো দেইন,
তারা হকলউ আমার গেছে আইবো।
যে জন আমার গেছে আয়,
আমি কুনুমন্তেউ তারে বারে ফালাইতাম নায়।
৩৮ আমি কুনু আমার মর্জি মাফিক কাম করাত আইছি নি?
না,
বরং যেইন আমারে পাঠাইছইন,
তান মর্জি যুগাইয়া কাম করার লাগিউ আমি বেহেস্ত থাকি লামিয়া আইছি।
৩৯ হুনো,
যে বাফে আমারে পাঠাইছইন,
তান মুনশা অইলো,
তাইন যেরারে আমার আতো দিছইন,
আমি যানু এরা একজনরেও না আরাই বরং রোজ হাশরো এরারে জিন্দা হালতে তুলি।
৪০ আমার বাফর মুনশা অইলো,
যারা তান পুতরে দেখিয়া তান উপরে ইমান আনে,
তারা যানু আখের পায়।
আর আমিউ তারারে রোজ হাশরো জিন্দা করি তুলমু।”
৪১ ইখান হুনিয়া ইহুদি নেতা অকলে ইছারে লইয়া কানা-ঘুসা লাগাইলা।
কারন তাইন আগে কইছলা,
“বেহেস্ত থাকি যে রুটি লামিয়া আইছে,
আমিউ হউ রুটি।”
৪২ এরলাগি তারা নিজে নিজে কইলা,
“অগু তো ইউছুফর পুয়া ইছা নায় নি বা?
আমরা তো তার মা-বাফরেও চিনি।
তে হে কেমনে কয়,
হে বুলে বেহেস্ত থাকি লামিয়া আইছে?”
৪৩ ইছায় তারারে কইলা,
“তুমরা নিজর মাজে কানা-ঘুসা করিও না।
৪৪ আমার যে গাইবি বাফে আমারে পাঠাইছইন,
তাইন আশিক না বানাইলে কুনু মানুষউ আমার গেছে আইতো পারে না।
আর আমিউ তারে রোজ হাশরো জিন্দা হালতে তুলমু।
৪৫ জানো নি,
নবী অকলর কিতাবো লেখা আছে,
‘তারা হকলে আল্লার গেছ থাকি তালিম লইবা।’
আর যে জনে গাইবি বাফর গেছ থাকি তালিম পাইছে,
হউ জনউ আমার গেছে আয়।
৪৬ “অউ বাফরে তো কুনু মানষে দেখছে না,
খালি আল্লার গেছ থাকি যেইন আইছইন,
তাইনউ ই বাফরে দেখছইন।
৪৭ আমি তুমরারে নিচ্চিত হাছা কথা কইরাম,
যে জনে আমার উপরে ইমান আনছে,
হে লগে লগেউ আখের পাইলিছে।
৪৮ আমিউ জিন্দেগি-রুটি।
৪৯ তুমরার বাফ-দাদাইন্তে তো মরুভুমিত মান্না খাইছলা,
তা-ও তারার মউত অইছে।
৫০ অইলে ইখান অইলো হউ রুটি,
যে রুটি বেহেস্ত থাকি লামিয়া আইছে,
যাতে অউ রুটি খাইয়া মানুষ মরন থাকি রেহাই পায়।
৫১ হুনো,
আমিউ অইলাম হউ জিন্দা রুটি,
যে রুটি বেহেস্ত থাকি লামিয়া আইছে।
যে জনে ই রুটি খাইবো,
হে চিরকালিন জিন্দেগি পাইবো।
আমার কায়াউ অইলো অউ রুটি।
মানষরে চিরকালিন জিন্দেগি দিবার নিয়তে আমি আমার দেহ-কায়া বিলাই দিমু।”
৫২ ইখান হুনিয়া ইহুদি নেতা অকলর মাজে তর্কা-তর্কি লাগি গেল।
তারা একে-অইন্যে কইলো,
“ই বেটায় কেমনে তার শরিলর গোস্ত আমরারে খাওয়াইবো?”
৫৩ ইছায় কইলা,
“তে হুনো,
আমি নিচ্চিত হক কথা কইরাম,
তুমরা আমি বিন-আদমর লউ আর গোস্ত না খাইলে তো তুমরার মাজে জিন্দেগিউ নাই।
৫৪ কেউ যুদি আমার লউ আর গোস্ত খায়,
তে হে আখেরি জিন্দেগি পাইলিছে,
আর রোজ হাশরর দিনো আমি তারে জিন্দা করি তুলমু।
৫৫ আমার গোস্তউ অইলো আসল খানি আর আমার লউ-উ অইলো আসল পানি।
৫৬ যে জনে আমার লউ আর গোস্ত খায়,
হে আমার ভিতরে থাকে আর আমিও তার ভিতরে থাকি।
৫৭ যেলা আমার গাইবি জিন্দা বাফে আমারে পাঠাইছইন,
এরলাগিউ আমিও জিন্দা আছি।
অউলা যে জনে আমারে খায়,
হে-ও আমার লাগি জিন্দা রইবো।
৫৮ দেখরায় নি,
অউ রুটি তো বেহেস্ত থাকি লামিয়া আইছে।
যে রুটি খাইয়া তুমরার বাফ-দাদাইন মারা গেছইন,
ই রুটি তো আমার লাখান নায়।
আমার অউ রুটি যে জনে খাইবো,
হে চিরকাল জিন্দা রইবো।”
৫৯ হজরত ইছায় কফরনাউম টাউনর মছিদো তালিম দেওয়ার সময় ইতা হকলতা কইলা।
বউত উম্মতর মনো মত-বিরুধ
৬০ তালিম হুনিয়া হারি তান উম্মতর মাজর বউতে কইলা,
“ইতা তো বড় গরম তালিম।
ইতা খেগিয়ে মানবো?”
৬১ অইলে ইছায় তান গাইবি বলে বুজিলিলা,
কিতা লইয়া এরা কানা-ঘুসা কররা।
বুজিয়া এরারে কইলা,
“অউ তালিম হুনিয়া তুমরা ঘাবড়ি গেলায় নি?
৬২ তে আমি বিন-আদম আগে যে জাগাত আছলাম,
আমারে যেবলা হনো উঠি যাওয়াত দেখবায়,
অউ সময় তুমরা কিতা কইবায়?
৬৩ তুমরা বুজরায় নি,
মানষর শরিল তো বেকামা,
আসলে রুহ অইলোগি জিন্দেগি।
আমি তুমরারে যে বয়ানি কইলাম,
ইতা অইলোগি মানষর রুহ আর জিন্দেগির বেয়াপার।
৬৪ অইলে তুমরার মাজে কেউ কেউ অখনও আমার উপরে ইমান আনছে না।”
কে তান উপরে ইমান আনছে না,
আর কে তানরে দুশমনর আতো ধরাই দিবো,
ইছায় পয়লা থাকিউ ইতা জানতা।
৬৫ অউ তাইন কইলা,
“অউ কারনে আমি তুমরারে কইছি,
গাইবি বাফে বল না দিলে,
কুনুজনউ আমার গেছে আইতো পারে না।”
হজরত পিতরর সাক্ষি
৬৬ ইছার ইতা তালিম হুনিয়া তান বউত উম্মত ফিরিয়া গেলাগি,
তারা তান লগে চলা-ফিরা বাদ দিলাইলা।
৬৭ এরলাগি ইছায় তান বারোজন সাহাবিরে জিকাইলা,
“কিতাবা,
তুমিতাইনও যাইতায়গি নি?”
৬৮ সাইমন-পিতরে জুয়াপ দিলা,
“হুজুর,
আমরা আর কার গেছে যাইতাম?
আখেরি জিন্দেগানির তালিম তো খালি আপনার গেছেউ আছে।
৬৯ আমরা তো জানছি আর আপনার উপরে ইমানও আনছি,
আপনেউ আল্লার ওয়াদা করা হউ পবিত্র জন।”