হজরত ইয়াকুব (আঃ) (২৭:১—৩৬:৪৩)
হজরত ইছহাক (আঃ)-এ হুরু পুয়ারে দোয়া দিলা
২৭
 মুরব্বি বয়সো ইছহাকর চউখর জুতি কমি যাওয়ায় তাইন আর চউখে দেখতা না। তাইন তান বড় পুয়া ঈষʼরে আনাইয়া কইলা, “বাবারে।” ঈষে জুয়াপ দিলা, “অউনু আমি।”  তাইন কইলা, “দেখো, আমি তো বুড়া অইগেছি, কুন দিন মরিযিমু কইতাম পারিয়ার না।  তুমি এগু কাম করো; তুমার আতিয়ার, তীর ধনুক লইয়া জঙ্গলো শিকারো যাও, আর আমার লাগি কুন্তা শিকার করিয়া,  আমার পছন্দর ভালা খানি তৈয়ার করি আনো, তেউ মরার আগে ইতা খাইয়া আমার জানে তুমারে দোয়া দিবো।”
 ইছহাকে যেবলা তান পুয়া ঈষʼর লগে ইতা মাতিরা, ই সময় রেবেকায় ইতা হুনছিলা। তেউ ঈষ যেবলা শিকারো গেলাগি,  তাইন আইয়া তান পুয়া ইয়াকুবরে কইলা, “হুনো, আমি হুনলাম তুমার বাফে তুমার ভাই ঈষʼরে কইরা,  ‘তুমি আমার লাগি কুন্তা শিকার করি ভালা খানি তৈয়ার করো, তেউ আমি মরার আগে অতা খাইয়া, মাবুদর ছামনে তুমারে দোয়া দিমু।’  তে রে পুত, আমি তুমারে অখন যেতা করতায় কইমু, তুমি অউলা হুনিও।  তুমি গিয়া পাল থাকি দুইটা তাজা খসি আনো। আমি ইতাদি তুমার বাফর শখর খানি, আচানক মজা করি রান্দিয়া দেই। ১০ তেউ তুমি অতা লইয়া তুমার বাফর গেছে যাইও, তাইন ইতা খাইয়া মরার আগে তুমারে দোয়া করবা।” ১১ ইয়াকুবে তান মাʼরে কইলা, “হুনো, আমার ভাই ঈষʼর শরিল তো রুমাআলা, আমার শরিলো তো রুমা নায়। ১২ যুদি বাবায় আমার শরিলো আতাইন, তে মনো করবা আমি তানে ধুকা দিয়ার, তাইলে আমি দোয়ার বদলা আরো লান্নত ডাকিয়া আনমু।” ১৩ তেউ তান মাʼয় কইলা, “পুতরে, তুমার ই লান্নত আমার উপরেউ পড়উক। তুমি খালি আমার মাতখান হুনো আর খসিগুইন আনিয়া দেও।” ১৪ অউ ইয়াকুবে গিয়া খসি আনিয়া তান মাʼরে দিলা। আর তান বাফে যেলা শখ করইন, তাইন অউলা মজা করি রান্দিলা। ১৫ বাদে তাইন ঘরর মাজে থোয়া বড় পুয়া ঈষʼর ভালা ভালা কাপড়-চুপড় আনিয়া তান হুরু পুয়া ইয়াকুবরে ফিন্দাইলা। ১৬ ইয়াকুবর আতো আর গলাত যে জাগাত রুমা নায়, হউ জাগাত অউ খসির চামড়া লাগাই দিলা। ১৭ আর নিজর রান্দা হউ মজার খানি আর রুটি তান পুয়া ইয়াকুবর আতো দিলা।
১৮ ইয়াকুবে তান বাফর গেছে গিয়া ডাক দিলা, “বাবা।” ইছহাকে জুয়াপ দিলা, “অউনু আমি, তুমি কে রে পুত?” ১৯ ইয়াকুবে তান বাফরে কইলা, “আমি আপনার বড় পুয়া ঈষ। আপনে আমারে যেলা কইছলা, আমি অউলা করছি। দয়া করি উঠিয়া বউক্কা, আমার শিকারর গোস্ত খাউক্কা, খাইয়া হারলে আপনে আমারে দোয়া দিবা।” ২০ ইছহাকে তান পুয়ারে কইলা, “বাবারে, তুমি অতো জলদি শিকার পাইলায় কিলা?” তাইন কইলা, “আপনার মাবুদ আল্লায় মিলাই দিছইন।” ২১ অউ ইছহাকে ইয়াকুবরে কইলা, “বাবা, আমার কাছাত আও তেউ তুমার গতরো আত দিয়া বুজমু, তুমি হাছাউ আমার পুয়া ঈষ নি।” ২২ ইয়াকুব তান বাফ ইছহাকর আরো কাছাত গেলা। তাইন শরিলো আতাইয়া কইলা, “গলার আওয়াজটা ইয়াকুবর, অইলে আত দুইওখান তো ঈষʼর।” ২৩ ইয়াকুবর আত তান ভাই ঈষʼর মত রোমে ভরা আছিল করি ইছহাকে তানরে চিনলা না। অউ তাইন ইয়াকুবরে দোয়া দিলা। ২৪ তাইন জিকাইলা, “তুমি কিতা হাছাউ আমার পুয়া ঈষ নি?” ইয়াকুবে কইলা, “জিঅয় বাবা।” ২৫ অউ ইছহাকে কইলা, “পুয়ার শিকারর গোস্ত আমার গেছে আনো, ইতা খাইয়া হারলে আমার জানে তুমারে দোয়া দিবো।” ইয়াকুবে গোস্ত লইয়া আইলে তাইন খাইলা। বাদে তানরে আংগুরর শরবত দিলে তাইন এওতা খাইলা। ২৬ হেশে তান বাফে কইলা, “ও পুত আও, কাছাত আইয়া আমারে হুংগা দেও।” ২৭ অউ ইয়াকুবে কাছাত গিয়া হুংগা দিলা, আর ইছহাকে তান শরিলর কাপড়র ঘেরান হুংগিয়া তানরে দোয়া দিলা, “দেখো, আমার পুয়ার ঘেরান তো মাবুদর বরকতি খেতর ঘেরানর লাখান। ২৮ আল্লায় আছমানর খুয়া থনে আর রসাইল জমিন থনে তুমারে দেউক্কা; বউত ফসল আর আংগুরর শরবত তুমারে দেউক্কা। ২৯ হকল মানুষ তুমার গুলাম অউক, হকল জাতিয়ে তুমার গেছে মাথা নোয়াউক। নিজর জাতর মাজে তুমি বড় মুরব্বি অও, তুমার মাʼর পেটর ভাইয়াইন্তে তুমার গেছে মাথা নোয়াউক। যে তুমারে লান্নত দিবো, তার উপরে লান্নত পড়উক। যে তুমারে দোয়া করব, হে রহমতি অউক।”
শেখ ঈষে বাবাইতি পাওনা দোয়া আরাইলা
৩০ ইছহাকে ইয়াকুবরে দোয়া করা শেষ অইলে, ইয়াকুব তান বাফ ইছহাকর ছামনে থনে হরতেউ, তান ভাই ঈষে শিকার লইয়া ঘরো আইলা। ৩১ তাইনও ভালা খানি তৈয়ার করিয়া বাফর গেছে লইয়া আইয়া কইলা, “বাবা, উঠিয়া বইয়া আপনার পুয়ার শিকারর গোস্ত খাউক্কা, খাইয়া হারলে আপনার জানে আমারে দোয়া দিবা।” ৩২ অউ তান বাফে কইলা, “তুমি কে?” তাইন কইলা, “বাবা, আমি তো আপনার বড় পুয়া ঈষ।” ৩৩ আর ইছহাকর শরিলো বেজুইতা কাপা শুরু অইলো। কাপি কাপি তাইন কইলা, “তাইলে আমার গেছে শিকারর গোস্ত লইয়া যে আইছিল, হে কে? তুমি আইবার আগেউ আমি অতা খাইয়া তারে দোয়া করছি, আর দোয়ার ফল হে-উ পাইব।” ৩৪ বাফর মাত হুনিয়াউ ঈষে একেবারে বুক ভাংগিয়া চিল্লাইয়া তান বাফরে কইলা, “বাজান, আমারে, আমারেও দোয়া করো!” ৩৫ ইছহাকে কইলা, “তুমার ভাইয়ে আইয়া চতুরি করিয়া তুমার পাওনা দোয়া নিছেগি।” ৩৬ ঈষে কইলা, “তার নাম ইয়াকুব [মানি, ধুকাবাজ] নায় নি? হাছাউ হে দুইবার আমারে ধুকা দিছে। বড় পুয়া হিসাবে আমার মালিকানা হে আগে চুরি করি নিছিল, আর দেখউক্কা, ইফিরা আমার দোয়াও লইয়া গেলগি।” তাইন ফিরিয়া কইলা, “আপনে আমার লাগি কুনু দোয়াউ রাখছইন না নি?” ৩৭ ইছহাকে জুয়াপ দিলা, “হুনো, আমি তারে তুমার নেতা বানাইছি, আর তার গুষ্টিরে তার গুলাম বানাইছি, তারে ফসল আর আংগুরর শরবত দিয়া ছামানি করছি; অখন তুমার লাগি আর কিতা করতামরে পুত?” ৩৮ ঈষে ফিরিয়া তান বাফরে কইলা, “ও বাজান, আপনার গেছে কিতা অউ এক দোয়াউ আছিল নি? বাজান রে-বা, আপনে আমারে, আমারেও দোয়া করউক্কা!” অতা কইয়া তাইন জুরে জুরে চিল্লাইয়া কান্দাত লাগলা।
৩৯ অউ তান বাফ ইছহাকে কইলা, “তুমার বসতখানার মাটি নিরস অইবো, হিনো আছমানর খুয়াও পড়তো নায়। ৪০ তলোয়ারউ তুমার জিন্দেগি অইবো, আর নিজর ভাইর গুলাম অইবায়; অইলে যেবলা তুমি না-মানরা অইযিবায়, অউ সময় নিজর গর্দনা থাকি তার জুয়াল হরাইবায়।”
হজরত ইয়াকুব (আঃ) শেখ ঈষʼর গেছ থনে বাগিলা
৪১ ইয়াকুবে তান বাফর গেছ থনে দোয়া পাইছলা করি ঈষে তানরে ইংসাইতা লাগলা। ঈষে মনে মনে কইলা, “আমার বাফর লাগি মউতর কান্দনর দিন আইচ্চে। এরবাদেউ তারে খুন করমু।” ৪২ রেবেকায় তান বড় পুয়া ঈষʼর ইতা মাতা-মাতি হুনলা, তেউ হুরু পুয়া ইয়াকুবরে আনাইয়া কইলা, “হুনো, তুমার ভাই ঈষে তুমারে খুন করার নিয়তে দিলরে বান্দিলাইছে। ৪৩ আমার পুত, তুমি আমার মাতখান হুনো, তুমি হারান টাউনো আমার ভাই লাবনর গেছে হরিয়া যাওগি, ৪৪ আর তুমার ভাইর গুছা না কমা পর্যন্ত তান গেছে থাকো। ৪৫ তার গুছা কমিগেলে, তুমি তার লগে যেতা করছো ইতা হে ফাউরিলিলে, আমি খবরিয়াদি তুমারে আনাইমু। কিতাল্লাগি আমি একদিনে তুমরা দুইও জনরে আরাইতাম?”
৪৬ বাদে রেবেকায় ইছহাকরে কইলা, “অউ হিট্টী পুড়িন্তর লাগি আমার আর বাচার স্বাদ নাই। ইয়াকুবেও যুদি অউ লাখান, ই দেশর কুনু হিট্টী পুড়িরে শাদি করিলায়, তাইলে আমার আর বাচিয়াউ লাভ কিতা?”