নিজর গাউ নাছারতো হজরত ইছার অসম্মান
৬
১ হজরত ইছা হন থনে নিজর গাউ নাছারতো তশরিফ আনলা।
তান সাহাবি অকলও লগে আছলা।
২ জুম্মাবারে তাইন মছিদো গিয়া তালিম দিলা।
বউত মানষে তান তালিম হুনলা,
হুনিয়া তাইজ্জুব অইয়া কইলা,
“ই বেটায় ইতা তালিম কুয়াই থাকি পাইলো?
হে কেমনে ইতা ইলিম হাছিল করছে,
আর যেতা মোজেজা অকল দেখার,
ইতার ভেদ কিতা?
৩ এ তো হউ মরিয়মর পুয়া কাঠ-মেস্তইর নায় নি?
হে ইয়াকুব,
ইউছি,
এহুদা আর সাইমনর ভাই নায় নি?
তার বনিন তো আমরার গাউতউ রইরা।”
ইছার বেয়াপার লইয়া মানষর দিলর মাজে বিতিশনা দেখা দিলো।
৪ তেউ ইছায় তারারে কইলা,
“যেকুনু নবীউ নিজর গাউ,
নিজর দেশ,
নিজর বাড়ি,
খেশ-কুটুমর বাইরাখানো ইজ্জত পাইন।”
৫ বাদে তাইন কয়জন বেমারিরে আতাই দিয়া বেমার শিফা করলা।
অইলে হিনো আর কুনু মোজেজা জাইর করার উপায় অইলো না।
৬ মানষে তান উপরে ইমান না আনায় তাইন খুব তাইজ্জুব অইগেলা।
বাদে তাইন গাউয়ে গাউয়ে চাইরোবায় ছফর করিয়া মানষরে তালিম দিলা।
সাহাবি অকলরে তবলিগো পাঠানি
৭ ইছায় তান বারোজন সাহাবিরে নিজর ধারো আনিয়া,
জিন-ভুতর উপরে খেমতা দিয়া,
দুইজন দুইজন করি তবলিগ কামো পাঠাইলা।
৮ ছফরর সময় খালি আতর লাঠি ছাড়া আর কুন্তাউ এরারে লগে নিতে দিলা না।
খানি-খুরাকি,
বেগ বা কমরর থলিত বান্দিয়া কুনু পয়সা-কড়ি নিতেও না করলা।
৯ তাইন কইলা,
“পাওত জুতা ফিন্দিতায় পারবায়,
অইলে ফিন্নর এক কাপড় বাদে আর কুনু কাপড়-চুপড় নিও না।”
১০ আর হুকুম দিলা,
“তুমরা গিয়া পয়লা যে বাড়িত হামাইবায়,
ই গাউ ছাড়িয়া যাওয়ার আগ পর্যন্ত অউ বাড়িতউ রইও।
১১ কুনু জাগার মানষে যুদি তুমরারে কবুল না করে,
আর তুমরার বয়ান না হুনে,
তে হন থাকি বারনির বালা তুমরার পাওর ধুইল ঝাড়িয়া ফালাইও,
অউ ধুইল তারার নাফরমানির সাক্ষি রইবো।”
১২ তেউ সাহাবি অকলে গিয়া তবলিগ করলা,
মানষরে তাগিদ দিলা তৌবা করার লাগি।
১৩ এরা বউত ভুত ছাড়াইলা,
আর বউত বেমারি মানষর মাথাত তেল মাখাইয়া বেমাররে শিফা করলা।
হজরত এহিয়া (আঃ) রে কাতল করা
১৪ হজরত ইছার সুনাম চাইরোবায় রটি যাওয়ায় রাজা হেরোদর কানোও গিয়া আজিলো।
কুনু কুনু মানষে কইলা,
তাইন অইলা এহিয়া নবী,
এইন হিরবার জিন্দা অইয়া উঠিয়া আইছইন করিউ অউ কেরামতি দেখাইরা।
১৫ কেউ কইলো,
এইন অইলা হজরত ইলিয়াছ নবী।
আর কেউ কেউ কইলো,
এইন পুরানা জমানার কুনু নবীর লাখান নয়া এক নবী।
১৬ ইতা হুনিয়া হেরোদে কইলো,
“এইন তো হউ এহিয়া,
যেন কল্লা আমি কাটাইছলাম।
তাইন হিরবার জিন্দা অইয়া উঠছইন।”
১৭-১৮ এর আগে হেরোদে তার ভাবি হেরোদিয়ার মন যুগানির লাগি,
এহিয়া নবীরে আটক করাইয়া জেলো হারাই থইছিল।
হে তার ভাই ফিলিফর বউরে হাংগা করায় নবীয়ে তারে হামেশা কইতা,
“আপন ভাইর বউরে নিয়া হাংগা করা তুমার জাইজ অইছে না।”
১৯ এরদায় এহিয়া নবীর বায় হেরোদিয়ার খুব গুছা আছিল।
তাই এনরে কাতল করার নিয়ত করলো,
অইলে পারল না।
২০ হেরোদে এনরে ডরাইতো আর জানতো,
এইন একজন পাক-পরেজগার কামিল মানুষ,
এরদায় হামেশা এনরে তাইর আত থাকি বাচাইতো।
এন নছিয়ত হুনতে তার ভিতরে ধড়-ফড় করলেও হে ইতা খুব পছন্দ করতো।
২১ হেশে তাই এক সুযোগ পাইলো,
হেরোদর জনম দিনর অনুষ্ঠানো তার উজির-নাজির,
সিপাইর অফিসার অকল,
আর গালিল জিলার গইন্য-মাইন্য হকল মানষর লাগি খানি জুইত করা অইলো।
২২ অউ অনুষ্ঠানো হেরোদিয়ার পুড়িয়ে আইয়া নাচ দেখাইয়া হকল মেহমান আর হেরোদরে খুশি করলো।
খুশি অইয়া হেরোদ রাজায় পুড়িরে কইলো,
“ও মা,
তুমি আমার গেছে কিতা চাও?
যেতা চাইবায়,
অতাউ পাইবায়।”
২৩ হে কছম খাইয়া কইলো,
“তুমি আমার গেছে যেতা চাইবায়,
অতাউ দিমু।
আমার রাইজ্যর অর্ধেক চাইলেও দিলাইমু।”
২৪ অউ পুড়িয়ে তাইর মাʼর গেছে গিয়া জিকাইলো,
“মাই গো,
আমি কিতা চাইতাম?”
মা হেরোদিয়ায় হিকাই দিলো,
“তুমি হউ এহিয়ার কল্লা চাইও।”
২৫ পুড়িয়ে জলদি করি আইয়া রাজারে কইলো,
“আমি চাইরাম,
আপনে হউ এহিয়ার কল্লা কাটিয়া এক থালো করি আমারে দেউক্কা।”
২৬ ইখান হুনিয়া রাজা খুব বেজার অইগেল,
অইলে অনুষ্ঠানর মেহমান অকলর ছামনে কছম করায় অউ পুড়িরে না করার কুনু উপায় আছিল না।
২৭-২৮ তেউ লগে লগে রাজায় জল্লাদরে হুকুম দিলো এহিয়ার মাথা কাটিয়া আনার লাগি।
জল্লাদে গিয়া জেল খানাত বন্দি হজরত এহিয়ার মাথা কাটিয়া এক থালো করি লইয়া আইলো।
রাজায় ই থাল অউ পুড়ির আতো দিলে,
তাই নিয়া তাইর মাʼর গেছে দিলো।
২৯ এহিয়া নবীর সাগরিদ অকলে ই খবর হুনিয়া জেল থনে তান লাশ নিয়া দাফন করলা।
পাচ আজার মানষর গাইবি খানি
৩০ হজরত ইছার বারোজন সাহাবিয়ে তবলিগ থনে ফিরিয়া আইয়া তানরে জানাইলা,
তবলিগো গিয়া কিতা কিতা করছইন,
কিলাখান তালিম দিছইন।
৩১ অউ সময় বউত মানুষ ইছার গেছে আওয়া-যাওয়াত থাকায় সাহাবি অকলে কুনু খানা-পিনারও সুযোগ পাইলা না।
এরদায় তাইন সাহাবি অকলরে কইলা,
“তুমরা আমার লগে কুনু নিরাই জাগাত আইয়া থুড়া জিরাও।”
৩২ কইয়া নাওত উঠিয়া এক নিরাই জাগাত রওয়ানা অইলা।
৩৩ এরারে যাওয়াত দেখিয়া বউত মানষে চিনিলিলা,
তেউ এরা পৌছার আগেউ আশ-পাশর গাউয়াইন থাকি মানুষ দৌড়াইয়া গিয়া হনো পৌছিগেলা।
৩৪ ইছা নাও থাকি লামিয়াউ দেখলা,
বউত মানষে তান বার চাইরা।
দেখিয়া এরার বায় তান বড় দরদ হামাইলো।
এরা আছিল আ-রাখালি মেড়ার লাখান।
অউ ইছায় এরারে বউত লাখান তালিম দিলা।
৩৫ হাইঞ্জা অইয়া হারলে তান সাহাবি অকলে কইলা,
“হুজুর,
ইখান খুব নিরাই জাগা,
আর হাইঞ্জাও অইগেছে,
৩৬ তে অতা মানষরে বিদায় দিলাউক্কা,
এরা কান্দা-কাছার অতা গাউয়াইন্তো গিয়া তারার খানি-খুরাকি লউক।”
৩৭ ইছায় কইলা,
“তুমরাউ এরার খানির ইন্তেজাম করো।”
সাহাবি অকলে জুয়াপ দিলা,
“আমরা কিতা দুইশো দিনারর খানি লইয়া আনিয়া এরারে খাওয়াইতাম নি?”
দুইশো দিনার তো পইঞ্চাশ আজার টেকার হমান।
৩৮ তাইন কইলা,
“তুমরা চাইয়া দেখো,
তুমরার গেছে কি পরিমান রুটি আছে।”
তারা দেখিয়া কইলা,
“ছাব,
পাচখান রুটি আর দুইটা বিরান মাছ আছে।”
৩৯ তাইন সাহাবি অকলরে হুকুম দিলা,
“তুমরা অউ ঘাসর উপরে লাইন ধরাইয়া মানষরে বওয়াই দেও।”
৪০ তেউ মানষে একশো জন করি কাতার বান্দিয়া পইঞ্চাশ কাতার বইলা।
৪১ ইছায় হউ পাচখান রুটি আর দুইটা বিরান মাছ আতো লইয়া আল্লার আরশর বায় চাইয়া শুকরিয়া আদায় করিয়া,
মানষরে বাটিয়া দিবার লাগি অউ রুটি টুকরা টুকরা করি সাহাবি অকলর আতো দিলা।
অউ লাখান মাছ দুইটাও বাটিয়া দিলা।
৪২ হকল মানষে পেট ভরি খাইলা।
৪৩ খাইয়া হারলে বাড়তি রুটি আর মাছর টুকরাইন নিয়া বারোটা টুকরি ভরলা।
৪৪ ই দলর মাজে খালি বেটা মানুষউ পাচ আজার জনে বইয়া খাইলা।
পানির উপরেদি আটা
৪৫ খানির বাদেউ হজরত ইছায় সাহাবি অকলরে তাগদা দিলা,
তারা নাওত করি আওরর হপারো বায়ত-ছয়দা গাউত যাওয়ার লাগি,
তাইন অনর মানষরেও বিদায় দিলা।
৪৬ মানুষ বিদায় অইয়া হারলে তাইন দোয়া করার লাগি পাড়র উপরে উঠিলা।
৪৭ রাইতর বালা সাহাবি অকলর নাও আওরর মাজখানো আছিল,
অইলে ইছা একলা হুকনাত আছলা।
৪৮ তাইন দেখলা,
উফতা বাতাসর মাজে এরা খুব কষ্ট করি দাড় বাইরা।
পতাবালা ইছায় অউ আওরর পানির উপরেদি আটিয়া,
সাহাবি অকলর গালাবায় তারারে পার অইয়া আগেদি যাইরা।
৪৯-৫০ তানরে আওরর পানির উপরেদি আটিয়া যাওয়াত দেখিয়া,
ভুত মনো করিয়া ডরাইয়া এরা হকলে চিক-চিল্লানি লাগাইলা।
অউ তাইন কইলা,
“ডরাইও না,
হিম্মত করো,
ই তো আমি।”
৫১ তাইন আইয়া সাহাবি অকলর নাওত উঠতেউ উফতা বাতাস দম লইলিলো।
ইতা দেখিয়া এরা আচানক তাইজ্জুব বনিগেলা।
৫২ অইলে আগর হউ রুটি-মাছর গাইবি খানির ভেদ এরা বুজলা না।
এরার দিলর দুয়ার তো বন্দ আছিল।
৫৩ আওর পাড়ি দেওয়ার বাদে এরা গিনেসরত এলাকাত আইয়া নাও ভিড়াইলা।
৫৪-৫৫ নাও থাকি লামতেউ তানে দেখিয়া মানষে চিনিলিলা,
আর চাইরোবায় দৌড়া-দৌড়ি লাগাইলা।
দৌড়াইয়া তারা যারযির বেমারি অকলরে পলোদি বইয়া আনিয়া,
তাইন যে জাগাত আছলা অউ জাগাত লইয়া আইলো।
৫৬ টাউনো বা গাউত,
অল্লিয়ে-গল্লিয়ে তাইন যেনোউ তশরিফ নিতা,
অনোউ মানষে বেমারি অকলরে আনিয়া বাজারো দলা করতা।
আর তানরে মিনত-কাজ্জি করিয়া কইতা,
বেমারি অকলে যানু তান চাদ্দরর কুনাখানো ছইতা পারইন।
আর যেরা ছইতা,
হাছাউ এরার বেমার শিফা অইযিতো।