হজরত ইছা দুশমনর মুকাবিলা অইলা
২০
১ অউ ছফরর কালো একদিন হজরত ইছা বায়তুল-মুকাদ্দছর মাজে,
মানষর গেছে আল্লাই খুশ-খবরি তবলিগ করাত আছলা।
আখতাউ বড় ইমাম আর আলিম অকল তারার মুরব্বি অকলরে লইয়া আইয়া কইলা,
২ “আইচ্ছা কওছাইন,
তুমি কুন খেমতায় ইতা কাম কররায়,
তুমারে ইতার এখতিয়ার খেগিয়ে দিছে?”
৩ ইছায় জুয়াপ দিলা,
“তে আমিও আপনাইন্তরে জিকাইরাম,
কউক্কাছাইন,
৪ এহিয়া নবীয়ে তৌবার গোছল করানির খেমতা পাইছলা,
মানষর গেছ থাকি না আল্লার গেছ থাকি?”
৫ অউ তারা একে-অইন্যে যুক্তি-পরামিশ করলো,
“যুদি কই আল্লার গেছ থাকি,
তে হে কইবো,
তাইলে তান উপরে ইমান আনলায় না কেনে?
৬ আর যুদি কই মানষর গেছ থাকি,
তে মানষে আমরারে পাথরদি মারবা।
এহিয়ারে তো তারা আল্লার নবী কইয়া মানইন।”
৭ অউ তারা কইলো,
“ই খেমতা কুয়াই থাকি পাইছলা,
আমরা জানি না।”
৮ ইছায় তারারে কইলা,
“তে আমিও কইতাম নায়,
কুন খেমতায় ইতা কররাম।”
আংগুর বাগান বাগিদারর কিচ্ছা
৯ বাদে ইছায় মানষরে অউ কিচ্ছা হুনাইলা,
“এক গিরস্তে আংগুরর বাগান করলা,
বাদে তান বাগানরে খেতাল অকলর গেছে বাগি দিয়া বউত দিনর লাগি বিদেশ গেলাগি।
১০ আংগুর পাকার সময় অইলে মালিকে তান বাট নিবার লাগি এক গুলামরে পাঠাইলা।
অইলে খেতাল অকলে তারে মাইর-ধইর করিয়া খালি আতে ফিরাই দিলো।
১১ বাদে তাইন আরক গুলামরে পাঠাইলা।
তারা ই গুলামরেও মাইর-ধইর করি বেইজ্জত করিয়া খালি আতে ফিরাই দিলো।
১২ বাদে তিন নম্বর গুলামরে পাঠাইলে,
তারা এও গুলামরে মারিয়া জখম করিয়া বারে ফালাই দিলো।
১৩ তেউ বাগানর মালিকে কইলা,
আমি কিতা করতাম?
অখন আমি আমার মায়ার পুতরে পাঠাইমু,
তেউ তারা মানতো পারে।
১৪ অইলে মালিকর পুয়ারে দেখিয়া খেতাল অকলে কইলো,
অউ পুয়াউ তো তার বাফর হকলতার মালিক অইবো।
আও,
এরে মারিয়া ফালাই দেই।
তেউ মালিকর হকলতা আমরা পাইলিমু।
১৫ অখান কইয়া হারি তারে বাগানর বারে নিয়া খুন করিলাইলো।
“অখন কউক্কা ছাইন,
বাগানর মালিকে ই বাগিদার অকলরে কিতা করবা?
১৬ তাইন আইয়া তারারে নিপাত করিলিবা না নি?
আর তান বাগান দুছরা মানষর গেছে দিবা না নি?”
ইতা হুনিয়া তারা কইলা,
“নাউজুবিল্লা!
আল্লায় ফানা দেউক!”
১৭ তেউ ইছায় তারার বায় চাইয়া কইলা,
“তে আল্লার কালামো কেনে ইলা লেখা আছে,
রাজ মেস্তইর অকলে যে পাথররে বেকামা কইয়া ফালাই দিছিল,
অকটা দিয়াউ ঘরর ইয়ান খুটি অইলো।
১৮ ই পাথরর উপরে কেউ পড়লে,
ই জন ভাংগিয়া টুকরা টুকরা অইযিব,
আর ই পাথরও কেউরর উপরে পড়লে,
হে-ও জন চুরমার অইযিব।”
১৯ অখান হুনিয়াউ মৌলানা আর বড় ইমাম অকলে ইছারে ধরিলতা চাইলা।
তারা বুজিলিলা,
ইছায় ই কিচ্ছা তারার নিয়তেউ কইরা।
অইলে মানষরে ডরাইয়া তারা কুন্তা করলা না।
বাদশার খাজনা দেওয়া জাইজ নি
২০ এরলাগি তারা ইছারে চউখে চউখে রাখলা,
তান খরে কয়জন গুইয়া লাগাইলা।
গুইয়া অকলে মুমিনি বেশ ধরিয়া চললেও,
তারার নিয়ত অইলো ইছারে কথার ফান্দো ফালাইতা,
যাতে তানে দেশর পরধান হাকিমর আদালতো চালান করাইল যায়।
২১ অউ গুইয়া অকলে ইছারে কইলা,
“হুজুর,
আপনে তো হকলরে হমান চউখে দেখইন।
আপনে হক মাত মাতইন,
হক তালিম দেইন।
কেউররে তোয়াক্কা না করিয়া,
মানষরে আল্লার হক পথ দেখাইন।
২২ তে কউক্কা ছাইন,
রোমান বাদশা কৈছররে খাজনা দেওয়া জাইজ নি,
না নাজাইজ?”
২৩ ইছায় তারার কু-মতলব বুজিলিলা।
বুজিয়া কইলা,
২৪ “দেখি,
আমারে একটা দিনার দেখাও।”
দিনার দেখিয়া কইলা,
“ইগুর উপরে কার ছবি আর নাম আছে?”
তারা কইলা,
“বাদশা কৈছরর।”
২৫ ইছায় কইলা,
“তে কৈছররতা কৈছররে দেও,
আর আল্লারতা আল্লারে দেও।”
২৬ তান জুয়াপ হুনিয়া তারা তাইজ্জুব বনিয়া নিরাই অইগেলা।
গুইয়া অকলে মানষর ছামনে তানরে কথার ফান্দো ফালাইতো পারলো না।
আখেরাতর বেয়াপারে প্রশ্ন
২৭ বাদে সিদ্দেকিয়া মজহবর কিছু মানুষ ইছার গেছে আইলা।
অউ মজহবর মানষে মনো করইন,
মরার বাদে কুনু জানদারউ আর জিন্দা অইতা নায়।
২৮ তারা ইছারে জিকাইলা,
“হুজুর,
মুছা নবীয়ে আমরার লাগি অউ নিয়ম লেখিয়া গেছইন,
কুনু মানষে তার বউ থইয়া নিআওলাদি হালতে মরিগেলে,
তার ভাইয়ে অউ বউরে বিয়া করিয়া মরা ভাইর ওয়ারিশ পয়দা করবো।
২৯ অখন মনো করউক্কা,
এক ঘরো সাত ভাই আছিল।
পয়লা জনে বিয়া করিয়া নিআওলাদি হালতে মরিগেল।
৩০-৩১ বাদে দুই নম্বর আর তিন নম্বর ভাইয়ে অউ বেটিরে বিয়া করলো।
অউ লাখান তারা সাতো ভাইয়েউ অউ বেটিরে বিয়া করিয়া নিআওলাদি হালতে মরিগেল।
৩২ হেশে অউ বেটিও মরিগেল।
৩৩ তে কিয়ামতর দিন ই বেটি কার বউ অইবো?
সাতো জনেউ তো ই বেটিরে বিয়া করছিল।”
৩৪ ইছায় কইলা,
“ই দুনিয়ার মানষে বিয়া-শাদি করইন,
আর বিয়া-শাদি দেইন।
৩৫ অইলে মউতর বাদে জিন্দা অইয়া যেরা আখেরাতো কামিয়াবির লাখ অইযায়,
তারা আর বিয়া-শাদি করতা নায়,
বা বিয়া-শাদি বইতাও নায়।
৩৬ তারার কুনু মউতও অইতো নায়,
তারা ফিরিস্তার লাখান অইযিবা।
মউতর বাদে আখের পাওয়ায় তারা আল্লা পাকর আওলাদ বনিযিবা।
৩৭ তুর পাড়র জালাইল জংলার বয়ানির মাজে মুছা নবীয়ে বুজাইছইন,
মুর্দা অকল তো জিন্দা অইয়া উঠইন,
এরলাগিউ বউত আগে যে নবী অকল মারা গেছইন মুছায় মাবুদরে হউ নবী অকলর আল্লা কইয়া ডাকিলা।
তাইন মাবুদরে কইলা,
ইব্রাহিমর আল্লা,
ইছহাকর আল্লা আর ইয়াকুবর আল্লা।
৩৮ তে আল্লা তো মুর্দা অকলর আল্লা নায়,
তাইন জিন্দা অকলর আল্লা।
তান নজরো হক্কল মানুষউ জিন্দা আছইন।”
৩৯ তেউ কয়জন আলিমে কইলা,
“হুজুর,
আপনে তো খাটি মাত মাতছইন।”
৪০ হেশে তারা ইছারে আর কুনু ছওয়াল করার সাওস পাইলো না।
আলিম অকলরে হেদায়ত
৪১ এরমাজে ইছায় অউ আলিম অকলরে জিকাইলা,
“মানষে কেনে আল-মসীরে দাউদ নবীর আওলাদ কইন?
৪২-৪৩ জবুর শরিফর মাজে দাউদে নিজেউ তো অখান কইরা,
মাবুদে আমার মুনিবরে কইলা,
যতদিন তুমার দুশমন অকলরে
তুমার পাওর তলে না ফালাই,
অতো দিন তুমি আমার ডাইন গালাত বইরও।
৪৪ দাউদে তো আল-মসীরে তান মুনিব কইয়া ডাকিলা,
তে আল-মসী কেমনে দাউদর আওলাদ অইবা?”
৪৫ মানষে ইছার বয়ান হুনরা,
অউ সময় তাইন সাগরিদ অকলরে কইলা,
৪৬ “আলিম অকলর বেয়াপারে হুশিয়ার অও।
তারা লাম্বা লাম্বা জুব্বা ফিন্দিয়া ঘুরিতে খুব ভালা পাইন।
বাজার-আটো গিয়া ছালাম পাইতে পছন্দ করইন।
মছিদো গিয়া ছামনর কাতারো বইতে আর মজলিছো গিয়া দামি জাগাত বইতে পছন্দ করইন।
৪৭ তারা মানষরে দেখানির লাগি লাম্বা লাম্বা দোয়া করইন।
হিরবার ড়াড়ি বেটিন্তর ঘর-বাড়ি দখল করইন।
কিয়ামতর দিন এরার বড় কঠিন সাজা অইবো।”