পবিত্র জেরুজালেমো হজরত ইছা
২১
১ হজরত ইছায় তান সাহাবি অকলরে লইয়া জেরুজালেমর কাছাত,
জয়তুন পাড়র লগে বায়ত-ফাইজ্জা গাউত আইয়া আজিলা।
অনো আইয়া তান দুইজন সাহাবিরে কইলা,
২ “তুমরা অউ ছামনর গাউত যাও।
গাউত হামাইতেউ দেখবায় এগু গাধা বান্দা আছে,
লগে তার বাইচ্চাও বান্দা।
অগুইন্তর গলার দড়ি খুলিয়া অনো লইয়া আইও।
৩ কেউ কুন্তা জিকাইলে কইও,
হুজুরর দরকার আছে,
এরদায় নিরাম।
তেউ হে লগে লগে রাজি অইযিবো।”
৪ ইতা অইলো যাতে আগর জমানার হউ নবীর মাজদি যেতা বাতাইল অইছে,
অতা অখন ফলিযায়।
৫ তাইন কইছলা,
“ছিয়ন-কইনা জেরুজালেমরে তুমরা কইও,
তুমার বাদশা তুমার গেছে আইরা।
তাইন খুব নরম মিজাজি।
তাইন গাধা চড়িয়া,
গাধীর বাইচ্চা চড়িয়া আইরা।”
৬ তেউ ইছায় যেলা হিকাই দিছলা,
দুইও সাহাবিয়ে গিয়া অলা করলা।
৭ অউ গাধা আর তার বাইচ্চা আনার বাদে সাহাবি অকলে নিজর গতরর চাদ্দর খুলিয়া গাধার পিঠিত বিছাই দিলা,
তেউ ইছা এর উপরে ছওয়ার অইলা।
৮ আরো বউত মানষে তারার গতরর চাদ্দর খুলিয়া পথর মাজে বিছাই দিলা,
আর বউতে সুন্দর সুন্দর গাছর পাতাইন ছিড়িয়া আনিয়া পথো বিছাইলা।
৯ ইছার আগে-খরে আরো বউত মানুষ যাওয়াত আছিল,
এরা জুরে জুরে মিছিল দিলা,
“বাদশা দাউদর আওলাদ,
মারহাবা!
মাবুদর নামে যেইন আইরা,
তান তারিফ অউক।
বেহেস্তোও মারহাবা!”
১০ হজরত ইছা জেরুজালেম আইয়া হারলে আস্তা টাউনো উলইস্তল লাগি গেল।
হকলে জিকাইলা,
“ওবা,
এইন কে?”
১১ মানষে কইলা,
“এইন তো হউ ইছা নবী,
এন বাড়ি গালিলর নাছারত গাউত।”
জেরুজালেম কাবা শরিফরে পাক-ছাফ করা
১২ বাদে জেরুজালেম আইয়া তাইন পবিত্র বায়তুল-মুকাদ্দছো হামাইলা।
হনো কাবা ঘরর সীমানাত যেরা খরিদ-বিকির কারবারি আছিল,
ইতারে খেদাই দিলা।
তাইন টেকার বাট্টার কারবারি অকলর কেশ বাক্স,
আর পারো বেচরা অকলর আসন উল্টাইয়া ফালাই দিলা।
১৩ তাইন কইলা,
“আল্লার কালামো বাতাইল অইছে,
আমার ঘর অইবো এবাদতর ঘর,
অইলে তুমরা ইখানরে ডাকাইতর আড্ডাখানা বানাইলিছো।”
১৪ এরবাদে আন্দা,
লুলা-লেংড়া মানুষ অকল ইছার গেছে বায়তুল-মুকাদ্দছো আইলা,
তাইন এরা হকলরে ভালা করলা।
১৫ হজরত ইছায় যে কুদরতি মোজেজা কাম করছলা,
বড় ইমাম আর মৌলানা অকলে ইতা দেখলা।
তারা হুনলা,
বায়তুল-মুকাদ্দছর ভিতরে হুরুতাইন্তে কইরা,
“মারহাবা,
দাউদর আওলাদ,
মারহাবা।”
ইখান হুনিয়া তারা জলি-পুড়ি উঠলা।
১৬ তারা ইছারে কইলা,
“অউ হুরুতাইন্তে কিতা চিল্লাইরা,
ইতা তুমি হুনরায় না নি?”
তাইন কইলা,
“অয়,
হুনিয়ার তো।
আল্লার কালামো পড়ছইন না নি,
‘নাবালিক হুরুতাইন্তর মুখ থাকি তুমি তুমার তারিফ আদায় করছো’?”
১৭ বাদে হজরত ইছা তারার গেছ থাকি গেলাগি,
গিয়া টাউনর বারে বায়ত-আনিয়া গাউত রাইত রইলা।
মজবুত ইমানর মুনাজাত
১৮ বাদর দিন বিয়ানে বায়ত-আনিয়া থাকি জেরুজালেম টাউনো আওয়ার সময় তান পেটো ভুক লাগলো।
১৯ অউ তাইন পথর কান্দাত এগু ডুমুর গাছ দেখিয়া,
অগুর ফল খাওয়ার খিয়ালে গাছর ধারো গেলা।
গিয়া দেখলা,
গাছর মাজে খালি পাতা,
কুনু ফল নাই।
তাইন অউ গাছরে কইলা,
“তুমার মাজে যানু আর কুনুদিন ফল না ধরে।”
অখান কওয়ার লগে লগেউ গাছটা হুকাইয়া মরিগেল।
২০ সাহাবি অকলে ইতা দেখিয়া তাইজ্জুব অইয়া কইলা,
“গাছটা অতো জলদি হুকাই গেল কিলা?”
২১ ইছায় জুয়াপ দিলা,
“আমি তুমরারে হাছাউ কইরাম,
তুমরা যুদি দিলর মাজে সন্দয় না করিয়া,
পুরাপুর ইমানে মজবুত থাকো,
তে আমি অউ ডুমুর গাছরে যেতা করছি,
তুমরাও অলা পারবায়।
খালি ইখান নায়,
তুমরা যুদি অউ পাড়োরে কও,
‘উড়িয়া গিয়া দরিয়াত পড়ো,’
তে অলাউ অইবো।
২২ তুমরা যুদি খালিছ নিয়তে একিন করিয়া দোয়া করো,
তে তুমরা যেতা চাইবায়,
অতাউ পাইবায়।”
বায়তুল-মুকাদ্দছো হজরত ইছা আল-মসী
২৩ বাদে হজরত ইছা হিরবার বায়তুল-মুকাদ্দছো আইয়া ওয়াজ-নছিয়ত করাত আছলা।
অউ সময় বড় ইমাম আর মুরব্বি অকল আইয়া তানরে জিকাইলা,
“আইচ্ছা,
কওছাইন,
তুমি কুন এখতিয়ারে ইতা কররায়?
কে তুমারে ই খেমতা দিছে?”
২৪ ইছায় জুয়াপ দিলা,
“আমিও আপনারারে একখান ছওয়াল করিয়ার,
আপনারা এর জুয়াপ দিলাইলে আমিও কইমু,
কুন এখতিয়ারে আমি ইতা কররাম।
২৫ আপনারা কউক্কাছাইন,
হজরত এহিয়ায় তরিকার গোছল দেওয়ার এখতিয়ার কার গেছ থাকি পাইছলা?
মানষর গেছ থাকি,
না আল্লার গেছ থাকি?”
ইখান হুনিয়া তারা কানে কানে মাতিলা,
“আমরা যুদি কই,
আল্লার গেছ থাকি,
তে হে কইবো,
তাইলে তুমরা তান উপরে ইমান আনলায় না কেনে?
২৬ আর যুদি কই,
মানষর গেছ থাকি,
তে মানষে আমরারে মারবা,
কারন মানষে তো এহিয়ারে নবী কইয়া মানইন।”
২৭ এরলাগিউ তারা জুয়াপ দিলা,
“আমরা ইখান জানি না।”
ইছায় কইলা,
“তে আমিও কইতাম নায়,
কুন খেমতায় আমি ইতা কররাম।”
২৮ এরবাদে ইছায় কইলা,
“আইচ্ছা,
আপনারা কিতা মনো করইন?
ধরউক্কা,
এক বেটার দুই পুয়া আছিল।
বেটায় তার বড় পুয়ারে কইলো,
‘তুমি আইজ আংগুরর বাগানো কামো যাও।’
২৯ পুয়ায় পয়লা কইলো,
‘আমি পারতাম নায়।’
অইলে বাদে তার মন বদলাইয়া কামো গেল।
৩০ বাদে বেটায় তার হুরু পুয়ার গেছে গেল,
গিয়া অউ কামর কথা কইলো।
হে জুয়াপ দিল,
‘আইচ্ছা আমি যাইমুনে,’
অইলে বাদে গেল না।
৩১ তে কউক্কাছাইন,
অউ দুইও পুয়ার মাজে কে বাফর হুকুম মানলো?”
তারা কইলা,
“বড় পুয়ায়।”
তেউ ইছায় কইলা,
“আমি আপনাইন্তরে হাছা কথা কইরাম,
ঘুষখুর তশিলদার আর ছিনাল বেটিন আপনাইন্তর আগে অইয়া আল্লার বাদশাইত হামাইযিরা।
৩২ কারন এহিয়া নবীয়ে হক পথ বাতাইয়া দেওয়াত আইছলা,
তা-ও আপনারা তান কথায় ইমান আনছইন না।
অইলে ঘুষখুর তশিলদার আর ছিনাল বেটিন্তে ইমান আনলা।
অতা দেখার বাদেও আপনারা ইমান আনছইন না,
তৌবাও করছইন না।”
আংগুর বাগানর গিরস্তর কিচ্ছা
৩৩ বাদে হজরত ইছায় কইলা,
“আপনারা অখন আরক কিচ্ছা হুনউক্কা।
একজন গিরস্তে আংগুরর বাগান করিয়া চাইরোবায় বেড়া দিলো।
বাদে চকিদারর লাগি উচা করি একখান টং-ঘর বানাইলো আর আংগুরর রস বার করার লাগি গাত খুদিলো।
হেশে খেত বাগি দিয়া গিরস্ত বিদেশ গেলোগি।
৩৪ আংগুর পাকিয়া হারলে গিরস্তে তার বাট নিবার লাগি,
বাগিদার অকলর গেছে তার চাকর অকল পাঠাইলো।
৩৫ অইলে বাগিদারে গিরস্তর এক চাকররে ধরিয়া খুব মাইর-ধইর করলো,
দুছরা চাকররে পাথরদি মারিয়া জখম করলো আর আরক চাকররে জানে মারিলিলো।
৩৬ বাদে তাইন আরো বেশ করি এক দল চাকর পাঠাইলা,
অইলে বাগিদার অকলে তারার লগেও অউলা বেবহার করলো।
৩৭ হেশ-মেশ গিরস্তে তান নিজর পুয়ারে তারার গেছে পাঠাইলা,
মনো করলা,
তারা তান পুয়ারে দাম দিবো।
৩৮ অইলে বাগিদার অকলে পুয়ারে দেখিয়া,
একে-অইন্যে পরামিশ করি কইলো,
অউ পুয়াউ তো বাদে ই সম্পত্তির মালিক অইবো।
তে আও,
অগুরে মারিলাই,
তেউ আমরাউ ইতার মালিক বনিযিমু।
৩৯ কইয়াউ তারা পুয়ারে ধরিয়া আংগুর বাগানর বারে নিয়া জানে মারিলিলো।
৪০ অখন কউক্কাছাইন,
বাগানর মালিক যেবলা আইবা,
আইয়া অউ বাগিদার অকলরে কিতা করবা?”
৪১ তারা কইলা,
“তাইন আইয়া তো অউ নাফরমান অকলরে খুন করবা আর সময় মত যেরা ফসলর বাট দিবো,
তারার গেছে খেত বাগি দিবা।”
৪২ হজরত ইছায় কইলা,
“আপনারা আল্লার কালামো পড়ছইন না নি,
রাজ মেস্তইর অকলে যে পাথররে বেকামা কইয়া ফালাই দিছিল,
অকটা দিয়াউ ঘরর ইয়ান খুটি অইলো।
মাবুদে নিজেউ ইতা অওয়াইলা,
ইতা দেখিয়া তো আমরার তাইজ্জুবি লাগের।
৪৩ এরলাগি কইরাম,
আল্লার বাদশাই আপনারার গেছ থাকি কাড়িয়া নেওয়া অইবো।
আর যেরার জিন্দেগিত অউ বাদশাইর ফল দেখা যাইবো,
তারারেউ অউ বাদশাই দেওয়া অইবো।
৪৪ হুনো,
অউ পাথরর উপরে যে জন পড়বো,
হে টুকরা টুকরা অইযিবো।
আর অউ পাথরও যার উপরে পড়বো,
হে-ও চুরমার অইযিবো।”