আল্লার বাদশাইত ফল ধরার নানান নমুনা
৪
১ হজরত ইছা হিরবার গালিল আওরর পারো আইয়া মানষরে তালিম দিতা লাগলা।
তান চাইরো গালাবায় বউত মানষে ভিড় বান্দিল্লা,
এরদায় তাইন এক নাওত উঠিয়া বইলা,
আর মানষে পারো থনে তান বয়ান হুনলা।
২ তাইন কিচ্ছা হুনাই-হুনাই মানষরে তালিম দেওয়াত আছলা,
এরমাজে তাইন কইলা,
৩ “ধরউক্কা,
এক গিরস্তে জালা বাইন করাত গেল।
৪ গিয়া বাইন করার সময় কিছু জালা পথর কান্দাত পড়লো,
আর পাখিন্তে আইয়া ইতা খাইলিলো।
৫ কিছু জালা পাথর আলা মাটিত পড়লো,
ইতার তলে বেশি মাটি আছিল না,
এরদায় তলেদি বল না করিয়াউ জলদি করি ফুটিগেল।
৬ বাদে সুরুজ উঠিয়া হারলে জইর খাইলিল,
আর তলর জড়ে রস না পাওয়ায় হুকাইয়া মরিগেল।
৭ কিছু জালা জংলার মাজে পড়লো,
তেউ জংলা বড় অইয়া ইতারে জাতিয়া ধরলো,
এরদায় কুনু ছড়া ছাড়লো না।
৮ অইলে কিছু জালা ভালা জমিনো পড়লো,
ইতায় আলি বার অইয়া বড় অইয়া ছড়া ছাড়ল,
কুনু ছড়ায় তিশ,
কুনু ছড়ায় ষাইট,
কুনু ছড়ায় একশো গুন বেশি ধান ধরলো।”
৯ হেশে ইছায় কইলা,
“হুনার লাখ কান যার আছে,
হে হুনউক।”
১০ বাদে ভিড় কমিয়া হারলে তান লগর মানষে আর বারোজন সাহাবিয়ে তানরে জিকাইলা,
“হুজুর,
ই কিচ্ছার মুল মানি কিতা?”
১১ ইছায় জুয়াপ দিলা,
“আল্লার বাদশাইর গোপন রহস্য জানার সুযোগ তুমরারে দেওয়া অইছে,
অইলে বাইরা মানষর গেছে কিচ্ছার মাজদি কওয়া অইছে।
১২ এর কারন অইলো,
আল্লার কালামর অউ আয়াত ফলিতে অইবো,
তারা চাইয়া থাকলেও কুন্তাউ দেখতো নায়,
হুনলেও কুন্তা বুজতো নায়।
কিযানু তারা যুদি আল্লার বায় ফিরিযাইন,
আর মাফি পাইলাইন।”
১৩ বাদে ইছায় তারারে কইলা,
“তুমরা অউ কিচ্ছার মানি খানও বুজলায় না নি?
তে বাকি কিচ্ছার মানি কিলা বুজবায়?
১৪ হুনো,
গিরস্তে যে জালা বাইন করের,
ই জালা অইলোগি আল্লার কালাম।
১৫ পথর কান্দাত পড়া জালা দিয়া তারার বেয়াপারে বুজাইল অইছে,
যেরা ই কালাম হুনে,
অইলে লগে লগে ইবলিছ আইয়া তারার দিল থাকি ই কালামরে কাড়িয়া নেয়গি।
১৬ পাথরর উপরে পড়া জালাদি বুজাইল অইছে,
যেরা ই কালাম হুনে আর খুব খুশি অইয়া লগে লগে কবুল করিলায়,
১৭ অইলে তারার দিলো ভালামন্তে হামায় না করিয়া,
ইতা খালি থুড়া কয়দিন কাইম রয়,
বাদে ই কালামর লাগি কুনু জুলুম-মছিবত আজির অইলে তারা পিছলাই যায়।
১৮ জংলার মাজে পড়া জালার মানি অইলো,
যেরা ই কালাম হুনে,
১৯ অইলে জগতর চিন্তা-ভাবনা,
ধন-ছামানার মায়া আর দুনিয়াবি লালছে ই কালামরে জাতিয়া ধরিলায়,
এরদায় কালামে কুনু আমল করে না।
২০ আর ভালা জমিনো পড়া জালার মানি অইলো,
যেরা ই কালাম হুনে,
কবুল করে আর ভালা ফল ধরে,
কেউ তিশ,
কেউ ষাইট,
কেউ একশো গুন ফল ধরে।”
২১ ইছায় আরো কইলা,
“কুনু মানষে লেম জালাইয়া টুকরির তলে বা চকির তলে থয় নি?
লেম জালাইয়া গাছার উপরে থইন না নি?
২২ তে ইলা লুকাইল কুন্তাউ নাই,
যেতা বার অইতো নায়।
আর ইলা কুনু বাতুনি বেয়াপারও নাই,
যেতা জাইর অইতো নায়।
২৩ হুনার লাখ কান যার আছে,
হে হুনউক।”
২৪ বাদে তাইন কইলা,
“তুমরা খিয়াল করিয়া হুনো,
তুমরা যেলা মাপিয়া দেও,
তুমরার লাগি অউলা মাপা অইবো।
ধরিলাও,
তুমরার লাগি আরো বেশ করি মাপা অইবো।
২৫ যার আছে তারে আরো দেওয়া অইবো,
অইলে যার নাই,
তার যেতা আছে এওতা নেওয়া অইযিব।”
২৬ তাইন আরকবার কইলা,
“হুনো,
আল্লার বাদশাই অইলো অউ লাখান।
ধরিলাও,
এক গিরস্তে তার জমিনো জালা বাইন করলো।
২৭ বাদে হে রাইত অইলে ঘুমাইলো আর দিনর বালা ঘুরা-ঘুরি করলো।
অইলে জালা ফুটিয়া কেমনে গাছ অইলো,
হে তো কুন্তা জানে না।
২৮ জমিনে নিজে নিজেউ ইতা ফলাইলো,
পয়লা চেরা,
বাদে ছড়া আর ছড়ার মাজে পুষ্ট ধান ধরল।
২৯ ধান পাকিয়া হারলে হে বুজিলায় দাওয়ার সময় অইগেছে,
তেউ কাচি লাগাইয়া দায়।”
ডেংগা বিচির কিচ্ছা
৩০ হজরত ইছায় কইলা,
“আল্লার বাদশাইরে আমরা কিতার লগে তুলনা করতাম?
কিতাদি বুজাইতাম?
৩১ আইচ্ছা,
মনে করো,
আল্লার বাদশাই অইলো এগু ডেংগা বিচির লাখান।
ই বিচি বাইন করার বালা দেখা যায়,
হকল জাতর বিচি থনে ইটা হুরু-মুরু।
৩২ অইলে বাইন করার বাদে ইটা হক্কল জাতর হাগ থনেও বড় বড় পাতা আর গাছ অয়।
আর মোটা মোটা ডাল বারয়,
ই ডালর ছায়াত পাখিন্তে আইয়া আশ্রয় লইন।”
৩৩ অউ লাখান বউত নমুনার কিচ্ছা কইতা,
আর যে যেলা বুজতো পারে,
তার বুজ মাফিক তারে আল্লার কালাম হুনাইতা।
৩৪ কিচ্ছা ছাড়া তারারে কুনু তালিম দিতা না।
অইলে খালি সাহাবি অকল যেবলা তান লগে রইতা,
অউ সময় তাইন হকল ভেদ ভাংগিয়া বুজাইতা।
আওরর তুফান বন্দ করা
৩৫ অউ দিন হাইঞ্জা বালা হজরত ইছায় তান সাহাবি অকলরে কইলা,
“আও,
আমরা আওরর হপারো যাইতাম।”
৩৬ তেউ সাহাবি অকলে মানষর গেছ থাকি বিদায় লইয়া,
ইছা যে নাওয়ো বওয়াত আছলা অউ নাওয়ো উঠিয়া রওয়ানা দিলাইলা,
এরলগে আরো নাওয়াইনও আছিল।
৩৭ নাও চলের,
অউ সময় আখতাউ খুব বড় এক তুফান আইলো,
তুফানর দায় আফালর পানি হামাইয়া নাও বুড়িযিবার দশা।
৩৮ ইছা নাওর খর গালাত এক বালিশো হিতান দিয়া ঘুমো আছলা।
সাহাবি অকলে তানরে হজাগ করিয়া কইলা,
“হুজুর,
আপনে খিয়াল কররা না নি,
আমরা তো মরি যাইয়ার।”
৩৯ তাইন উঠিয়া তুফানরে ধমক দিলা আর আওররে কইলা,
“দম লও,
থির অও।”
কওয়ার লগে লগে তুফান বন্দ অইগেল,
আর হক্কলতা থির অইলো।
৪০ বাদে তাইন সাহাবি অকলরে কইলা,
“তুমরা অতো ডরালোক কেনে?
তুমরা অখনও ইমান আনছো না নি?”
৪১ ইতা দেখিয়া সাহাবি অকলে খুব ডরাইলা,
আর একে-অইন্যে কইলা,
“এইন আসলে কে?
পানিয়ে আর বাতাসেও দেখি তান হুকুম মানে।”