তালাকর মুছলা
১০
 কফরনাউম থাকি হজরত ইছা এহুদিয়া জিলাত আইলা,
আর জর্দান গাংগর হপারো গেলা।
অনো আইলে হিরবার বউত মানুষ আইয়া তান গেছে দলা অইলা।
তাইনও তান রেওয়াজ মাফিক এরারে তালিম দিলা।
 অউ সময় তানরে পরিক্ষা করার নিয়তে ফরিশি মজহবর কয়জনে আইয়া জিকাইলো,
“ছাব,
কউক্কাছাইন,
বউরে তালাক দেওয়া জাইজ আছে নি?”
 তাইন জুয়াপ দিলা,
“হজরত মুছায় আপনাইন্তরে কিতা বাতাইছইন?”
 তারা কইলা,
“তাইন কইছইন,
তালাক নামা লেখিয়া হারি বউ তালাক দেওয়া জাইজ আছে।”
 ইছায় কইলা,
“তুমরার দিল পাষান,
এরলাগিউ মুছা নবীয়ে ই মুছলা লেখছইন।
 অইলে এওখান তো লেখা আছে,
আল্লায় পয়লা আদম আর হাওয়ারে মর্দ আর আওরত বানাই পয়দা করছইন।
 এরদায় মানষেও তারার মা-বাফরে থইয়া বউর লগে আশিক অইবা।
 জামাই আর বউ এক কায়া অইবা।
তারা দুই রইতা নায়,
এক অইবা।
 তে আল্লায় যেতা জুড়া লাগাইছইন,
মানষে ইতারে আলগ না করউক।”
১০ বাদে সাহাবি অকলে ঘরো হামাইয়া,
হিরবার তানরে অউ মুছলা জিকাইলা।
১১ তেউ ইছায় কইলা,
“যে মানষে তার বউরে তালাক দিয়া আরক বেটিরে নিকা করে,
হে তো অউ বউর লগে জিনা করে।
১২ অউলা বউয়েও যুদি নিজর জামাইরে তালাক দিয়া আরক বেটার গেছে নিকা বয়,
তে তাইও জিনা করে।”
হুরু হুরুতাইন্তর বেয়াপারে তালিম
১৩ বাদে মানষে হুরু হুরু হুরুতাইন্তরে লইয়া ইছার গেছে আইলা তারারে আতাই দিবার লাগি।
অইলে সাহাবি অকলে এরারে বকা-জকা করলা।
১৪ ইতা দেখিয়া ইছা নারাজ অইয়া তারারে কইলা,
“হুরুতাইন্তরে আমার গেছে আইতে মানা করিও না,
আল্লার বাদশাই তো এরার লাখান মানষর লাগিউ।
১৫ আমি হক কথা কইরাম,
হুরু হুরুতাইন্তে যেলা বড়র শাসন মানইন,
আল্লার শাসনরে অউ লাখান না মানলে,
মানুষ কুনুমন্তেউ আল্লার বাদশাইত হামাইতো পারতো নায়।”
১৬ বাদে তাইন তারারে কুলো লইয়া তারার মাথাত আত রাখিয়া দোয়া করলা।
গরিব আর ধনির বেহেস্ত
১৭ হজরত ইছা যেবলা বার অইয়া রওয়ানা অইলা,
অউ সময় এক বেটা দৌড়াইয়া আইয়া আটু গাড়িয়া তান ছামনে বইয়া কইলো,
“উস্তাদ,
আপনে তো মেহেরবান।
তে আমারে বাতাই দেউক্কা,
আখের পাওয়ার লাগি আমি কিতা করতাম?”
১৮ তাইন কইলা,
“আমারে কেনে মেহেরবান কইরায়?
এক আল্লা ছাড়া আর কেউ মেহেরবান নায়।
১৯ তুমি তো তৌরাত কিতাবর হুকুম জানো।
খুন করিও না,
জিনা করিও না,
চুরি করিও না,
মিছা সাক্ষি দিও না,
টগা-টগি করিও না,
মা-বাফরে ইজ্জত করিও।”
২০ বেটায় কইলো,
“ছাব,
আমি তো হুরুমান থনেউ ইতা আমল করিয়ার।”
২১ তেউ ইছায় মায়ার নজরে তার বায় চাইয়া কইলা,
“খালি একখান জিনিস তুমার বাকি রইছে।
তুমি যাও,
গিয়া তুমার হকল ধন-ছামানা বেচিয়া গরিব অকলরে বিলাই দেও।
তেউ তুমি বেহেস্তো তুমার ছামানা কামাইবায়।
বাদে আইয়া আমার উম্মত অইও।”
২২ ইখান হুনিয়া বেটার মুখ কালা অইগেল।
তার বউত ধন-ছামানা আছিল করি মনো দুখ লইয়া গেলগি।
২৩ তেউ ইছায় চাইরোবায় চাইয়া তান সাহাবি অকলরে কইলা,
“ধনি মানুষ আল্লার বাদশাইত হামানি বড় মশকিল।”
২৪ ইখান হুনিয়া এরা তাইজ্জুব অইগেলা।
ইছায় হিরবার কইলা,
“বাবা অকল,
দেখরায় নি,
দুনিয়াবি ধন-ছামানার উপরে যেরা ভরসা করে,
আল্লার বাদশাইত হামানি তারার লাগি বউত মশকিল।
২৫ ধনি মানুষ আল্লার বাদশাইত হামানির চাইতে,
ছুইর ফুড়েদি উট হামানি আরো সুজা।”
২৬ ইখান হুনিয়া সাহাবি অকল আরো তাইজ্জুব অইয়া একে-অইন্যে কইলা,
“তে কুন মানষে নাজাত হাছিল করব,
কে রেহাই পাইবো?”
২৭ ইছায় এরার বায় চাইয়া কইলা,
“মানষর লাগি অসম্ভব অইতো পারে,
অইলে আল্লার নজরো ইতা তো মামুলি।
তাইন হকলতাউ পারইন।”
২৮ সাহাবি পিতরে কইলা,
“হুজুর,
আমরা তো হকলতা ফালাই থইয়া আপনার খরে আইছি।”
২৯ তাইন কইলা,
“আমি তুমরারে হক কথা কইরাম,
যে মানষে আমার লাগি আর আল্লার বাতাইল খুশ-খবরির লাগি নিজর বাড়ি-ঘর,
মা-বাফ,
ভাই-বইন,
পুয়া-পুড়ি,
জমি-মিরাস ছাড়ি দিছে,
৩০ হে অউ দুনিয়াত ইতার একশো গুন বেশি বাড়ি-ঘর,
মা-বাফ,
ভাই-বইন,
পুয়া-পুড়ি,
জমি-মিরাস পাইব।
ইতার লগে হে জুলুম-তকলিফও পাইব।
বাদর জিন্দেগিত হে আখেরও পাইব।
৩১ অইলে যেরা পয়লা কাতারো আছইন,
এরার মাজে বউত জন খরে পড়িযিবা,
আর যেরা খরর কাতারো আছইন,
তারার বউত জন পয়লা কাতারো আইবা।”
তিছরা বার নিজর মউতর আগাম খবর
৩২ হজরত ইছায় সাহাবি অকলরে লইয়া জেরুজালেমো যাইরা।
তাইন আগে অইয়া আটিরা,
আর সাহাবি অকল ডরাই ডরাই খরে খরে যাইরা।
আরো যেরা তান খরে অইয়া যাইরা তারার জানোও ডর আছিল।
ইছায় তান বারোজন সাহাবিরে আলগা হরাইয়া নিয়া হিরবার কইলা,
তান কুন দশা ঘটিবো।
৩৩ তাইন কইলা,
“হুনো,
আমরা অখন জেরুজালেম যাইরাম।
হনো আমি বিন-আদমরে ধরিয়া বড় ইমাম আর মৌলানা অকলর আতো সপি দেওয়া অইবো।
তারা বিচার করিয়া কাতল করার রায় দিবা।
আমারে বিধর্মী জাতির আতো সমজাই দিবা।
৩৪ অউ বিধর্মী অকলে ঠাট্টা-মশকরা করিয়া,
শরিলো ছেফ ছিটাইয়া,
বেজুইতা চাবুক মারবা,
আর কাতল করবা।
মউতর তিন দিন বাদে হিরবার জিন্দা অইয়া উঠমু।”
মন্ত্রী অওয়ার লাগি অনুরোধ
৩৫ বাদে জিবুদিয়ার দুই পুত ইয়াকুব আর হান্নান নামর দুইও সাহাবি হজরত ইছার গেছে আইয়া কইলা,
“হুজুর,
আমরা একখান আরজি লইয়া আইছি,
মনো কররাম,
আপনে আমরার আরজিখান রাখবা।”
৩৬ তাইন কইলা,
“আমি তুমরার লাগি কিতা করতাম,
তুমরা কিতা চাইরায়?”
৩৭ এরা কইলা,
“আপনে যেবলা পুরাপুর দাপটর লগে রাজ-গদিত বইবা,
অউ সময় আমরা একজনরে আপনার ডাইনর গদি,
অইন্য জনরে বাউওর গদিখান দিবা।”
৩৮ ইছায় কইলা,
“তুমরা তো বুজরায় না তুমরা কিতা চাইরায়।
আমি যে তকলিফর পিয়ালাদি খাইমু,
ইতা কুনু তুমরা খাইতায় পারবায় নি?
আমি যে তকলিফর গোছল করমু,
তুমরা ইতা পারবায় নি?”
৩৯ তারা কইলা,
“জিঅয় পারমু।”
তাইন কইলা,
“আইচ্ছা,
আমি যে পিয়ালাদি খাইমু,
তুমরাও অগুদি খাইবায়।
আমি যে গোছল করমু,
তুমরাও অউলা করবায়।
৪০ অইলে আমার ডাইন বা বাউ গালাত বওয়ানির এখতিয়ার আমার আতো নায়।
ই গদি অকল যেরার লাগি জুইত করা অইছে,
খালি তারাউ পাইবা।”
৪১ বাকি দশজন সাহাবিয়ে ইয়াকুব আর হান্নানর ই আরজি হুনিয়া খুব বিরক্ত অইলা।
৪২ তেউ ইছায় এরা হকলরে একখানো দলা করিয়া কইলা,
“তুমরা তো জানো,
বিধর্মী জাতির রাজা অকল তারার প্রজার মুনিব অয়।
তারার জমিদার অকলে নিজর গুলামর উপরে বেটাগিরি করে।
৪৩ অইলে তুমরার মাজে ইলা অওয়া ঠিক নায়।
তুমরার কেউ দামি বনতে চাইলে,
হে তুমরার খেজমত করউক।
৪৪ আর কেউ বড় অইতে চাইলে,
হে হকলর গুলামি করউক।
৪৫ মনো রাখিও,
আমি বিন-আদমেও খেজমত পাওয়াত আইছি না,
আইছি তো খেজমত করাত।
আর বউত মানষর জান বাচানির লাগি নিজর জান বিলাই দেওয়াত আইছি।”
আন্দা বেটারে শিফা করা।
৪৬ হজরত ইছায় তান সাহাবি অকল লইয়া যিরিহো টাউনো আইলা।
বাদে এরারে আর আরো বউত মানষরে লইয়া টাউন থাকি বারনির বালা,
তীময়র পুয়া বরতীময় নামর এক আন্দা বেটায় পথর ধারো বইয়া ভিক করাত আছিল।
৪৭ এইনউ নাছারত গাউর ইছা,
ইখান হুনিয়া বেটায় জুরে চিল্লাই চিল্লাই কইলো,
“ও ইছা,
হজরত দাউদর আওলাদ,
আমারে রহম করইন।”
৪৮ চিল্লানি হুনিয়া বউতে কইলা,
“চুপ,
চিল্লাইছ না।”
অইলে হে আরো জুরে চিল্লাইয়া কইলো,
“দাউদর আওলাদ,
আমারে রহম করইন।”
৪৯ তার চিল্লানি হুনিয়া ইছায় দম লইয়া কইলা,
“এরে অনো আনো।”
মানষে অউ আন্দা বেটারে কইলা,
“ডরাইও না,
আও।
হুজুরে তুমারে ডাকিরা।”
৫০ তেউ বেটায় তার শরিলর চাদ্দর খুলিয়া,
ফালদি উঠিয়া তান কান্দাত গেল।
৫১ ইছায় তারে জিকাইলা,
“তুমি কিতা চাওবা?
আমি তুমারে কিতা করতাম?”
বেটায় কইলো,
“হুজুর,
আমি চউখে দেখতাম চাই।”
৫২ তাইন কইলা,
“আইচ্ছা যাও,
তুমার ইমানর বলেউ তুমি ভালা অইলায়।”
কইতেউ তার দেখার শক্তি আইলো আর ইছার খরে খরে রওয়ানা অইলো।