আংগুর খেতর গিরস্তর কিচ্ছা
১২
 তেউ হজরত ইছায় হউ মৌলানা অকলরে কিচ্ছা হুনাইয়া বুজাইলা,
“একজন মানষে আংগুর খেত করিয়া তার চাইরোবায় বেড়া দিলা।
বাদে আংগুরর রস বার করার লাগি এক গাত খুদিলা আর চকিদারর লাগি উচা করি একখান টং-ঘর বানাইলা।
হেশে মানষর গেছে খেত বাগি দিয়া মালিক বিদেশ গেলাগি।
 আংগুর পাকিয়া হারলে মালিকে তান এক গুলামরে বাগিদারর গেছে পাঠাইলা,
তান বাট আনার লাগি।
 অইলে বাগিদার অকলে ই গুলামরে ধরি মাইর-ধইর করি,
খালি আতে বিদায় করি দিলো।
 তেউ মালিকে তান আরো এক গুলামরে পাঠাইলা।
বাগিদার অকলে তারেও গালা-গালি করিয়া মারিয়া তার মাথা ফাটাইলিলো।
 এরবাদে তাইন আরো একজনরে পাঠাইলা।
এনরে তারা জানে মারিলিলো।
অলাখান করি তাইন আরো বউত জনরে পাঠাইলা।
এরার মাজর কয়জনরে তারা মাইর-ধইর করলো,
আর কয়জনরে জানে মারিলিলো।
 হেশে মালিকর খালি একজন মানুষ বাকি রইছিল,
হে অইলো তান মায়ার পুত।
হেশ-মেশ তাইন অউ পুয়ারেউ তারার গেছে পাঠাইলা,
মনো করলা,
আমার পুয়ারে তারা ইজ্জত দিবো।
 অইলে বাগিদার অকলে একে-অইন্যে পরামিশ করি কইলো,
‘অউ পুয়াউ তো বাদে ই সম্পত্তির মালিক অইবো।
তে আও,
এরেও আমরা মারিলাই,
তেউ আমরাউ ইতার মালিক বনিযিমু।’
 কইয়াউ তারা পুয়ারে ধরিয়া জানে মারিয়া,
আংগুর খেতর বারে নিয়া ফালাই দিলো।
 “তে অখন কউক্কা ছাইন,
খেতর মালিকে কিতা করবা?
তাইন আইয়া তো অউ বাগিদার অকলরে মারিলিবা আর খেত অইন্য মানষর গেছে বাগি দিবা।
১০ আপনারা আল্লার কালামো পড়ছইন না নি,
 
রাজ মেস্তইর অকলে যে পাথররে বেকামা কইয়া ফালাই দিছিল,
অকটা দিয়াউ ঘরর ইয়ান খুটি অইলো।
১১ মাবুদে নিজেউ ইতা অওয়াইলা,
ইতা দেখিয়া তো আমরার তাইজ্জুবি লাগের।”
 
১২ ইতা হুনিয়া তারা ইছারে ধরিলিতো চাইলো।
তারা বুজিলিলো,
তাইন ই কিচ্ছা তারার বিপক্ষেউ কইরা।
অইলে মানষরে ডরাইয়া তানরে ছাড়িয়া গেলগি।
খাজনা দিবার বেয়াপারে তালিম
১৩ বাদে অউ মুরব্বি আর মৌলানা অকলে ইছারে ফান্দো ফালানির লাগি,
ফরিশি আর রাজা হেরোদর দলর কয়জন মানষরে তান গেছে পাঠাইলো।
১৪ তারা আইয়া কইলো,
“হুজুর,
আমরা তো জানি,
আপনে একজন হক মানুষ।
মানষে কিতা মনো করে বা না করে,
ইতায় আপনার কুন্তাউ যায় আয় না,
আপনে তো কেউরর মুখর বায় চাইয়া কুন্তা করইন না।
হক-হালাল নিয়মে মানষরে আল্লার রাস্তা বাতাই দিরা।
তে আমরারে বাতাই দেউক্কা,
হজরত মুছার শরিয়ত মাফিক রোমান বাদশারে খাজনা দেওয়া জাইজ নি?
১৫ আমরা তানরে খাজনা দিতাম নি,
না দিতাম না?”
তাইন তারার ভন্ডামি বুজিলিলা,
বুজিয়া কইলা,
“তুমরা কেনে আমারে পরিক্ষা কররায়?
দেখি,
একটা দিনার আনিয়া আমারে দেখাও।”
১৬ তারা দিনার লইয়া তান গেছে আইলে,
তাইন জিকাইলা,
“ই পয়সার উপরে কার নাম আর ছবি?”
তারা কইলা,
“রোমান বাদশার।”
১৭ তাইন কইলা,
“তে হুনো,
বাদশার যেতা ইতা বাদশারে দেও,
আর আল্লার যেতা ইতা আল্লারে দেও।”
ইখান হুনিয়া তারা আম্মক বনিগেলা।
মরন বাদে জিন্দা অওয়া
১৮ বাদে সিদ্দেকিয়া মজহবর কয়জন মানুষ ইছার কান্দাত আইলা।
এরা একিন করইন,
মউতর বাদে কুনু মানুষ আর জিন্দা অইয়া উঠইন না।
এরদায় তারা ইছারে জিকাইলা,
১৯ “হুজুর,
হজরত মুছায় আমরার লাগি অউ মুছলা লেখিয়া গেছইন,
কুনু মানষে বিয়া করিয়া,
তার বউরে নিআওলাদি হালতে থইয়া হে যুদি মারা যায়,
তে তার ভাইয়ে অউ বেটিরে বিয়া করিয়া তার ভাইর বংশ বাচাইতে অইবো।
২০ তে ধরউক্কা,
এক পরিবারো সাত ভাই আছিল।
বড় জনে বিয়া করিয়া নিআওলাদি হালতে মারা গেল।
২১ বাদে দুছরা ভাইয়ে তার অউ ড়াড়ি ভাবিরে বিয়া করলো।
অইলে হে-ও নিআওলাদি রইয়া মারা গেল।
বাদে তিন নম্বর ভাইয়ে বিয়া করিয়া হে-ও অউলা মারা গেল।
২২ অউ নমুনায় তারা সাতো ভাইর কেউররউ হুরুতা অইলো না।
হেশে অউ বেটিও মারা গেল।
২৩ তে মরন বাদে যেবলা মানুষ জিন্দা অইয়া উঠবা,
অউ সময় ই বেটি,
এরা কুন ভাইর বউ অইবো?
তারা হকলেউ তো ই বেটিরে বিয়া করছিল।”
২৪ তাইন জুয়াপ দিলা,
“আপনারা তো আল্লার কালামও জানইন না,
আল্লার কুদরতি তাক্কতও বুজইন না।
এরদায় আপনারা ই ভুল কররা।
২৫ হুনউক্কা,
মুর্দা অকল যেবলা জিন্দা অইয়া উঠবা,
অউ সময় তারা বিয়া-শাদি করতা নায়,
কেউ তারারে বিয়া দিতোও নায়।
এরা তো ফিরিস্তার লাখান বনিযিবা।
২৬ তৌরাত কিতাবো তুর পাড়র জংলা জলার বয়ানির মাজে,
মুর্দা অকল জিন্দা অওয়ার বেয়াপারে কিতা লেখা আছে,
ইতা আপনারা পড়ছইন না নি?
আল্লায় মুছা নবীরে কইলা,
‘আমিউ ইব্রাহিম,
ইছহাক আর ইয়াকুবর আল্লা’।
২৭ তে আল্লা তো মুর্দা অকলর আল্লা নায়,
তাইন জিন্দা অকলর আল্লা।
আপনারা তো বউত বড় ভুল করছইন।”
হকল থাকি বড় হুকুম
২৮ অউ সময় একজন মৌলানা আইয়া এরার তর্কা-তর্কি হুনলা।
আর ইছায় যেন ঠিক জুয়াপ দিছইন ইখান বুজিয়া এইন জিকাইলা,
“কউক্কা ছাইন,
তৌরাত শরিফর মাজে হকল থাকি বড় হুকুম কুনটা?”
২৯ ইছায় জুয়াপ দিলা,
“হকল থাকি বড় হুকুম অইলো,
ও বনি ইছরাইল,
আমরার মাবুদ আল্লা এক।
৩০ তুমরার আস্তা দিল,
জান,
মন আর হকল শক্তি দিয়া তুমরার মাবুদ আল্লারে মহব্বত করিও।
৩১ দুছরা হুকুম অইলো,
তুমরার আরি-ফরিরে নিজর লাখান মায়া করিও।
অউ দুইও হুকুম থাকি বড় আর কুনু হুকুম নাই।”
৩২ ইখান হুনিয়া হি মৌলানায় কইলা,
“হুজুর,
মারহাবা!
আপনে তো ঠিকউ কইছইন,
আল্লা এক,
তাইন ছাড়া আর কুনু মাবুদ নাই।
৩৩ আর আস্তা দিল,
বিবেক-বুদ্ধি,
হকল শক্তি দিয়া তানরে মহব্বত করা,
আরি-ফরিরে নিজর লাখান মায়া করা অইলো,
হকল নমুনার পশু কুরবানি আর লিল্লা-ছদগা থাকিও জরুরি।”
৩৪ ইছায় যেবলা দেখলা,
অউ মৌলানায় খুব সুন্দর করি জুয়াপ দিছইন,
অউ তাইন কইলা,
“আল্লার বাদশাই থাকি আপনে তো বেশি দুরই নায়।”
এরবাদে থনে ইছারে কুনু ছওয়াল করার সাওস আর কেউরর অইলো না।
আল-মসী কে?
৩৫ ইছায় বায়তুল-মুকাদ্দছো তালিম দেওয়ার সময় জিকাইলা,
“মৌলানা অকলে কেমনে কইন,
আল-মসী অইলা হজরত দাউদর আওলাদ?
৩৬ দাউদে তো পাক রুহর বলে কইছইন,
 
মাবুদে আমার মুনিবরে কইলা,
আমি যতো সময় তুমার দুশমন অকলরে
তুমার পাওর তলাত না ফালাই,
অতো সময় তুমি আমার ডাইনর তখতো বও।
 
৩৭ দাউদে যেবলা নিজেউ আল-মসীরে তান মুনিব কইছইন,
তে আল-মসী কেমনে দাউদর আওলাদ অইবা?”
বউত মানষে খুশি অইয়া ইছার বয়ান হুনাত আছিল।
৩৮ বয়ানর মাজে তাইন কইলা,
“মৌলানা অকলর বেয়াপারে হুশিয়ার রইও।
তারা খালি লাম্বা লাম্বা জুব্বা ফিন্দিয়া বাজার-আটো ঘুরা-ফিরা করইন আর ইজ্জত পাইতা চাইন।
৩৯ তারার শখ অইলো কুনু মজলিছো গেলে দামি জাগাত বওয়া,
খানির সময় ছামনর কাতারো বইয়া খাওয়া।
৪০ একবায় তারা লাম্বা লাম্বা দোয়া করিয়া মানষর মন গলাইন,
আরক বায় ড়াড়ি বেটিন্তর জমি-মিরাস দখল করি নেইন।
হাশরর ময়দানো এরার হকল থাকি বড় মছিবত অইবো।”
গরিব ড়াড়ি বেটির ছদগা দেওয়া
৪১ বাদে তাইন বায়তুল-মুকাদ্দছর লিল্লার ডেগর কান্দাত বইয়া দেখলা,
মানষে আইয়া কেমনে লিল্লা-ছদগা দিরা।
তাইন দেখলা,
বউত ধনি মানষে বেশ করি টেকা-পয়সা দান কররা।
৪২ বাদে এক গরিব ড়াড়ি বেটিয়ে আইয়া খালি দুইটা পয়সা দান করলো।
৪৩ দেখিয়া তান সাহাবি অকলরে কইলা,
“আমি তুমরারে হক কথা কইরাম,
হকল মানুষ থনে অউ বেটিয়ে বেশি দান করলো।
৪৪ হকল মানষে তারার বউত ধন-ছামান থাকি কিছু অংশ দান করছে,
অইলে ই বেটি অভাবি অইলেও,
বেটিয়ে নিজর লাগি কুন্তা না রাখিয়া,
হকলতাউ দান করি দিলো।”