হজরত ইছার খেজমতো বেটি মানুষ
 বাদে ইছায় অউ বারোজন সাহাবিরে লইয়া গাউয়ে গাউয়ে,
টাউনে টাউনে ঘুরিয়া আল্লার বাদশাইর তবলিগ করাত রইলা।
 তারার লগে কয়জন বেটিনও আছলা।
অউ বেটিন জিনর আছর আর বউত জাতর বেমার থাকি ভালা অইয়া তান লগ ধরছলা।
এরার নাম অইলো:
মগদিলিনী মরিয়ম,
এন গেছ থাকি সাতগু জিন ছাড়াইল অইছিল;
 রাজা হেরোদর উজির কুজাইর বউ সোহানা;
সুসানা;
আর আরো বউত বেটিন আছলা।
অউ বেটিন্তে তারার নিজর ছামানা দিয়া ইছা আর তান সাগরিদ অকলর খরচ-পাতি চালাইতা।
গিরস্তি কামর লগে ইমানর তুলনা
 বাদে যেবলা নানান জাগা থাকি বউত মানুষ আইয়া ইছার গেছে দলা অইলা,
অউ সময় তাইন এক কিচ্ছা হুনাইলা।
 তাইন কইলা,
“এক গিরস্তে ধানর জালা বাইন দেওয়াত গেল।
গিয়া বাইন দেওয়ার বালা কিছু জালা আইলর মাজে পড়িগেল,
মানষে পাওদি উড়িয়া ই জালা নষ্ট করিল্লো,
আর পাখিন্তেও আইয়া খাইলিলো।
 গিরস্তর কিছু জালা হুকনা-শক্ত মাটির উপরে পড়লো,
ইতায় আলি বার অইলেও হেশে রস না পাইয়া হুকাইয়া মরিগেল।
 কিছু জালা বন-জংলার মাজে পড়লো,
ই জালায় আলি ফুটলেও ইতারে বন-জংলায় জাতিয়া ধরলো।
 অইলে কিছু জালা ভালা জমিনো পড়লো,
ই জালায় ভালা ধান অইলো,
আর একশো গুন বেশি ধান ধরলো।”
অউ কিচ্ছা কইয়াউ তাইন জুরে জুরে কইলা,
“যার কান আছে,
হে হুনউক।”
 সাগরিদ অকলে আরজ করলা,
“হুজুর,
ই কিচ্ছার মানি কিতা?”
১০ তাইন কইলা,
“আল্লার বাদশাইর গোপন রহস্য জানার সুযোগ খালি তুমরারে দেওয়া অইছে,
অইলে বাকি মানষর গেছে তো ইতা কিচ্ছার লাখান কইরাম,
যাতে তারা দেখিয়াও না দেখে,
হুনিয়াও না বুজে।
১১ “তে ই কিচ্ছার মানি অইলো,
ই ধানর জালা অইলো আল্লার কালাম।
১২ আইলর মাজে পড়া জালাদি বুজাইল অইছে,
যেরা আল্লার কালাম হুনে,
বাদে ইবলিছে আইয়া তারার দিল থাকি ইতা কাড়িয়া নেয়গি।
ইবলিছে চায় না মানষে ইমান আনিয়া নাজাত হাছিল করউক।
১৩ আর হুকনা-শক্ত মাটির উপরে পড়া জালাদি বুজাইল অইছে,
যারা ই কালাম বেশ খুশি অইয়া হুনে,
অইলে কালামে তারার দিলো ভালামন্তে জড় করে না।
এরদায় ই ইমান থুড়া কয়দিন টিকে,
কুনু পরিক্ষাত পড়লেউ তারার ইমান খুয়াইলায়।
১৪ বন-জংলাত পড়া জালাদি বুজাইল অইছে,
যেরা ইমানর দাওত হুনে,
অইলে দুনিয়াবি ধান্দাত পড়িয়া ধন-ছামানার লালছ,
আর আরাম-আইশর বায় চাইয়া ইতা ফাউরিলায়।
এরদায় তারার জিন্দেগিত কুনু ভালা ফল ধরে না।
১৫ ভালা জমিনো পড়া জালাদি বুজাইল অইছে,
যেরা হক আর ছহি দিলে আল্লার কালাম হুনে,
হুনিয়া নিজর দিলো ভালামন্তে গাথিয়া রাখে,
আর ইমানে মজবুত রইয়া জিন্দেগিত ভালা ফল ধরে।
১৬ “কুনু মানষে লেম জালাইয়া হারি চকির তলে থয়নি বা টুকরিদি গুরিলায় নি?
নিচয় না,
তারা গাছার উপরে থয়,
যাতে ঘরর ভিতরে ফর দেখা যায়।
১৭ তে ইলা গাইবি কুন্তাউ নাই যেতা জাইর অইতো নায়।
ইলা লুকাইলও কুন্তা নাই যেতা কেউ হুনতো নায় বা জানতো নায়।
১৮ এরদায় তুমরা কিলা হুনরায় খিয়াল করিও,
যার আছে তারে আরো দেওয়া অইবো,
আর যার নাই,
তার যেতা আছে বলিয়া হে মনে করের,
অতাও নেওয়া অইযিবো।”
হজরত ইছার মা ভাই কে
১৯ এরমাজে ইছার মা আর ভাইয়াইন তান গেছে আইয়া আজিলা,
অইলে ভিড়র লাগি তারা কাছাত আইতা পারলা না।
২০ তেউ একজন মানষে আইয়া ইছারে কইলা,
“আপনার মা আর ভাইয়াইন আপনার লগে দেখা করাত আইয়া বারে উবাই রইছইন।”
২১ ইছায় জুয়াপ দিলা,
“আমার মা-ভাই তো এরাউ,
যেরা আল্লার কালাম হুনইন আর আমল করইন।”
হজরত ইছায় আওরর তুফান বন্দ করলা
২২ একদিন ইছা আর তান সাহাবি অকল গিয়া নাওয়ো উঠলা,
উঠিয়া তাইন সাহাবি অকলরে কইলা,
“আও,
আমরা আওরর হপারো যাই।”
তেউ সাহাবি অকলে নাও ভাসাইলা।
২৩ নাও চলতির মাজে ইছা ঘুমাই গেলা।
আখতাউ আওরর মাজে অমন তুফান আইলো,
তুফানে নাওত পানি হামাইয়া ভরিযার,
তারা দেখলা বড় মছিবত আইছে।
২৪ সাহাবি অকল ইছার ধারো গিয়া তানে হজাগ করিয়া কইলা,
“হুজুর,
হুজুর,
আমরানু মরিযিরাম।”
ইছা উঠিয়া পানির ঢেউ আর বাতাসরে ধামকি দিলা।
লগে লগেউ ঢেউ আর তুফান থামিয়া হকলতা থির অইগেল।
২৫ ইছায় তারারে কইলা,
“অউ অতানি তুমরার ইমান?”
তারা ডরাইয়া তাইজ্জুব অইয়া একে-অইন্যরে কইলা,
“এইন আসলে কে,
দেখরায়নি বাতাসে আর পানিয়েও তান হুকুম মানে?”
জিনে ধরা বেমারিরে ভালা করা
২৬ ইছায় তান সাহাবি অকল লইয়া গালিল আওর পার অইয়া জেরাসিনি এলাকাত গেলা।
২৭ গিয়া হারি তাইন নাও থাকি লামলা,
অউ সময় হউ গাউর জিনর আছর আলা এক বেটা তান গেছে আইলো।
জিনর পালে আছর করায় হে বউত দিন ধরি লেমটা আর কুনু বাড়ি-ঘরো রইতো না,
খালি কবরস্থানো রইতো।
২৮ ইছারে দেখিয়াউ হে চিল্লাইয়া উঠলো,
তান ছামনে পড়িয়া জুরে জুরে কইলো,
“ও আল্লার খাছ মায়ার জন,
আপনে কেনে আমার ইনো তশরিফ আনলা?
মেহেরবানি করি আমারে ছাতাইন না যানু।”
২৯ ইখান কওয়ার কারন অইলো,
ইছায় হি জিনরে হুকুম দিছলা অউ বেটারে ছাড়িয়া যাওয়ার লাগি।
ই জিনে তারে বউত দিন থাকি আছর করছিল,
বেটারে ডান্ডা-বেড়ি আর শিকলদি বান্দিয়া রাখলেও,
হে ইতা ছিড়িলিতো,
হউ জিনে তারে নিরাই জাগাত নিতোগি।
৩০ ইছায় তারে জিকাইলা,
“তোর নাম কিতা?”
হে কইলো,
“ফৌজ পাল” কারন তারা বউত জিন একলগে আছিল।
৩১ তেউ হি ফৌজ পালে ইছারে মিনত-কাজ্জি করিয়া কইলা,
তাইন যানু তারারে রসাতলে না গাড়ইন।
৩২ হিনো পাড়র এক গালাত বড় এক শুয়রর পাল আছিল।
ফৌজ পালে তানরে মিনত করিয়া কইলা,
তারারে হউ শুয়রর ভিতরে হামানির ইজাজত দিতা।
তাইন ইজাজত দিলা।
৩৩ অউ তারা হি বেটারে ছাড়িয়া শুয়রর ভিতরে গিয়া হামাইলো,
এতে শুয়রর পাল পাড়র ঢালেদি দৌড়িয়া গিয়া আওরর পানিত বুড়িয়া মরলা।
৩৪ ইতা দেখিয়া শুয়রর রাখাল অকল দৌড়িয়া গিয়া টাউনো আর গাউয়ে গাউয়ে খবর দিলো।
৩৫ খবর পাইয়া চাইরোবায় থনে মানুষ আইলা,
আইয়া দেখলা,
যে বেটার লগ থাকি ফৌজ পাল বার অইয়া গেছইন,
হে পুরাপুর ভালা অইয়া কাপড়-চুপড় ফিন্দিয়া ইছার পাওর কান্দাত বইরইছে।
দেখিয়া তারা চমকি গেলা।
৩৬ আর অউ ঘটনা ঘটিতে যেরা দেখছিল,
তারা হকল মানষরে হুনাইলা,
ই বেটা কিলা ভালা অইছে।
৩৭ হুনিয়া জেরাসিনি এলাকার হকল মানুষ ডরাইগেলা।
ডরর চুটে তারা ইছারে মিনত-কাজ্জি করিয়া কইলা,
তাইন তারার গেছ থাকি তশরিফ নিতাগি।
তেউ ইছা নাওয়ো উঠিয়া হিরবার গালিলো আইলা।
৩৮ অইলে যে বেটারে জিনে ধরছিল,
হে আরজ করলো তান লগে রইবার লাগি।
ইছায় তারে অখান কইয়া বাড়িত পাঠাই দিলা,
৩৯ কইলা,
“তুমি তুমার বাড়িত যাও,
আর আল্লায় তুমার লাগি যে কুদরতি কাম করছইন,
অতা গিয়া কও।”
তেউ হে গেলগি,
গিয়া টাউনর হকল মানষরে জানাইলো,
ইছায় তার লাগি অতো বড় কাম করছইন।
এক মরা পুড়ি আর বেমারি বেটি
৪০ ইছা গালিলো আইয়া হারলে হিনর মানষে খুশি অইয়া তানরে কবুল করলা,
তারা তান লাগি বার চাওয়াত আছিল।
৪১ অউ সময় যায়ীর নামে মছিদ কমিটির এক মতল্লী আইয়া ইছার পাওয়ো পড়িয়া মিনত লাগাইলা,
হুজুররে তান বাড়িত নিবার লাগি।
৪২ কারন তান একমাত্র পুড়ি ছরখাতো আছিল,
পুড়ির বয়স বারো বছর।
ইছা যেবলা অউ বাড়িত যাইবার লাগি রওয়ানা দিলা,
মানষে আইয়া তান চাইরোবায় ভিড় করিয়া ঠেলাঠেলি লাগাইলা।
৪৩ ভিড়র মাজে এক বেটি মানুষও আছলা,
এইন বারো বছর ধরিয়া মাসিক বেমারি।
তান হকল ধন-ছামানা ডাক্তরর তলে খুয়াইয়াও ভালা অইতা পারছইন না।
৪৪ তাইন ইছার খরেদি আইয়া ইছার চাদ্দরর কুনাত ছওয়ার লগে লগেউ তান বেমার কমিগেল।
৪৫ তেউ ইছায় জিকাইলা,
“আমারে কে ছইলো?”
কেউ স্বীকার না করায় পিতর আর তান লগর মানষে ইছারে কইলা,
“হুজুর,
আপনার চাইরোবায় কত মানষে ঠেলাঠেলি করিয়া আপনার গাʼত লাগের।”
৪৬ অইলে ইছায় কইলা,
“কেউ আমারে ছইছে,
কারন আমি বুজরাম,
আমার ভিতর থাকি গাইবি বল বার অইছে।”
৪৭ অউ বেটিয়ে যেবলা দেখলো ধরা পড়িগেছে,
তাই কাপি কাপি ইছার ছামনে আইয়া তান পাওয়ো পড়িয়া হকলর ছামনেউ কইলো,
কেনে তাই ইছারে ছইছিল আর কিলান লগে লগেউ ভালা অইগেছে।
৪৮ ইছায় বেটিরে কইলা,
“মাই গো,
তুমি একিন করছো করি ভালা অইছো।
অখন শান্তিয়ে বাড়িত যাও।”
৪৯ ইছায় অতা মাতিরা,
অমন সময় মছিদর মতল্লীর বাড়ি থাকি খবরিয়া আইয়া তানরে কইলো,
“ছাব,
আপনার পুড়ি দুনিয়া থাকি গেছইনগি,
তে হুজুররে আর কষ্ট দিবার কাম নাই।”
৫০ ইখান হুনিয়া ইছায় কইলা,
“ডরাইও না,
খালি একিন করো।
দেখবায়নে,
তাই ভালা অইযিবো।”
৫১ ইছা হউ বাড়িত গেলা,
গিয়া পিতর,
হান্নান,
ইয়াকুব আর পুড়ির মা-বাফ ছাড়া অইন্য কেউররে ঘরর ভিতরে হামাইতে দিলা না।
৫২ হকলে যেবলা পুড়ির লাগি কান্দা-কাটি আর আহাজারি কররা,
অউ সময় ইছায় কইলা,
“কান্দিও নারে,
তাই তো মরছে না,
ঘুমার।”
৫৩ ইখান হুনিয়া তারা তানরে ছিড়াইলা।
তারা হকলেউ জানতো পুড়ি মরি গেছে।
৫৪ তেউ ইছায় পুড়ির আতো ধরিয়া ডাক দিলা,
“মাই গো,
উঠো।”
৫৫ লগে লগেউ পুড়ির জান ফিরত আইলো।
তাই উঠিয়া বইগেল।
ইছায় কইলা,
পুড়িরে কুন্তা খাইবার দিতা।
৫৬ পুড়ির মা-বাফ এক্কেরে তাইজ্জুব বনিগেলা।
বাদে ইছায় কইলা,
“হুনো,
ইতা কেউররে হুনাইও না।”