সত্তইর জন সাগরিদরে তবলিগো পাঠাইলা
১০
১ বাদে হজরত ইছায় আরো সত্তইরজন সাগরিদরে তবলিগো পাঠাইতা করি পছন্দ করলা।
তাইন নিজে যেতা টাউন বা গাউয়াইন্তো যাওয়ার ইরাদা করছিলা,
হনো যাইবার আগে এরারে দুইজন দুইজন করিয়া পাঠাইলা।
২ পাঠানির বালা এরারে কইলা,
“হুনো,
জমিনো তো ফসল বউত আছে,
অইলে কামলা খুব কম।
এরলাগি জমিনর মালিকর গেছে দোয়া করো,
তান ফসল তুলার লাগি তাইন কামলা পাঠাইবা।
৩ তুমরা অখন রওয়ানা অইযাও।
খিয়াল রাখিও,
বাঘর পালর মাজে মেড়া-বাইচ্চার লাখান আমি তুমরারে পাঠাইলাম।
৪ তুমরা যাওয়ার কালো টেকার থলি,
গাইট-বুছকি,
পাওর জুতা ইতা কুন্তাউ লগে নিও না,
আর পথর মাজে কেউররে ছালামও করিও না।
৫ যে বাড়িত গিয়া হামাইবায়,
হামাইয়াউ কইও,
আছছালামু আলাইকুম।
৬ ছালাম লওয়ার জুকা কেউ হিনো থাকলে,
তুমরার ছালাম তার উপরে বর্তিবো,
আর ইলা কেউ না থাকলে,
তুমরার ছালাম তুমরার গেছেউ ফিরত আইবো।
৭ পয়লা যে বাড়িত হামাইবায়,
হউ বাড়িতউ রইও।
ই বাড়ি ছাড়িয়া দুছরা বাড়িত যাইও না।
তারা যেতা দেইন অতা খাইও,
কারন কামলায় তার বেতন পাওয়ার যোইগ্য।
৮ “যেবলা কুনু গাউত যাইবায়,
হিনর মানষে তুমরারে কবুল করিয়া,
তারা যেতা খাইতে দেইন,
অতাউ খাইও।
৯ তারার বেমারি অকলর বেমার ভালা করিও।
তারারে কইও,
আল্লার বাদশাই তো তুমরার ধারো আইচ্ছে।
১০ অইলে কুনু গাউত গেলে হনর মানষে যুদি তুমরারে কবুল না করইন,
তে গাউত আটি আটি অখান কইও,
১১ হবা,
তুমরার গাউর যে ধুইল আমরার পাওত লাগছে,
ইতা আমরা ফুছিয়া ফালাই দিরাম,
অউ ধুইলেউ তুমরার বিপক্ষে সাক্ষি দিবো।
অইলে মনো রাখিও,
আল্লার বাদশাই কান্দাত আইচ্ছে।
১২ আমি তুমরারে কইরাম,
কিয়ামতর দিন লান্নতি ছাদুম টাউনর দশা থাকি,
হি গাউর দশা আরো কঠিন অইবো।
১৩ “হায়রে বায়ত-ছয়দা আর খুরাছিন গাউ,
তুমরা তো লান্নতি।
তুমরার মাজে যেতা কুদরতি কাম দেখাইল অইছে,
ইতা সোর আর সিদন এলাকাত দেখাইল অইলে,
তারা কাতর অইয়া তৌবা করলো অনে।
১৪ আসলে কিয়ামতর দিন সোর আর সিদন এলাকার দশা থাকিও,
তুমরার দশা বউত কঠিন অইবো।
১৫ আর ও কফরনাউম টাউন,
তুমি বুলে উচা অইয়া আছমানো গিয়া লাগতায়?
না,
পারতায় নায়!
তুমারে পাতালো লামাইল অইবো।
১৬ “তুমরা মনো রাখিও,
যেরা তুমরার কথা মানে,
তারা আসলে আমার কথাউ মানে।
আর যেরা তুমরারে মানে না,
তারা আমারেও মানে না।
যেরা আমারে মানে না,
তারা আসলে হউ আল্লারেও মানে না,
যেইন আমারে বেজিছইন।”
১৭ বাদে হি সত্তইরজন সাগরিদে তবলিগ করিয়া খুব খুশ মিজাজে ফিরত আইলা।
আইয়া কইলা,
“হুজুর,
আপনার নাম হুনলে জিন-ভুতেও আমরার কথা মানে।”
১৮ ইছায় তারারে কইলা,
“হুনো,
আমি দেখছি,
ইবলিছ-শয়তান মেঘর জিলকির লাখান বেহেস্ত থাকি পড়িযার।
১৯ তে আমি তুমরারে হাফ-বিচ্ছুর উপরেদি আটার খেমতা দিছি,
আর তুমরার দুশমন,
ইবলিছর হকল শক্তির উপরে তুমরারে খেমতা দিছি।
কুনুজাত কুন্তায়উ তুমরার খেতি করতো পারতো নায়।
২০ আর জিন-ভুতে তুমরার কথা হুনের দেখিয়া খুশি না অইয়া,
বরং বেহেস্তি খাতাত তুমরার নাম লেখা অইছে করিউ খুশি করো।”
২১ অউ সময় ইছাও পাক রুহর বলে খুশি অইয়া কইলা,
“ও গাইবি বাবা,
তুমিউ তো আছমান-জমিনর মালিক।
আমি তুমার শুকরিয়া আদায় কররাম,
কারন তুমি আখলদার-বুদ্ধিমান অকলর গেছে ইতা জাইর না করিয়া,
বেবুজ-হুরুতার লাখান মানষর গেছে জাইর করছো।
বাবা,
আসলে তো ইতা হকলতাউ তুমার মর্জি।
২২ আমার গাইবি বাবায় হকলতাউ আমার আতো সপি দিছইন।
বাফ ছাড়া দুছরা কেউ জানে না অউ পুত কে,
আর পুত ছাড়া দুছরা কেউ জানে না অউ বাফ কে।
পুতে বাফরে যার গেছে জাইর করার খিয়াল অয়,
খালি হে-উ বাফর পরিচয় পায়।”
২৩ বাদে তাইন সাগরিদ অকলর বায় ফিরিয়া কানে কানে কইলা,
“তুমরা যেতা যেতা দেখছো,
ইতা দেখার সুযোগ যার অয়,
হে-উ নেক-কপালি।
২৪ আমি তুমরারে কইরাম,
তুমরা যেতা দেখরায়,
ইতা বউত নবীয়ে আর রাজা-বাদশায় দেখার আশা করলেও,
দেখার কপাল অইছে না।
তুমরা যেতা হুনরায়,
ইতা তারা হুনতে চাইলেও হুনার কপাল অইছে না।”
হকল থাকি বড় হুকুম
২৫ একবার এক আলিম ছাব ইছার গেছে আইলা।
আইয়া তানরে পরিক্ষা করার লাগি জিকাইলা,
“হুজুর,
কিতা কাম করলে আমি বেহেস্ত পাইমু?”
২৬ ইছায় কইলা,
“মুছা নবীর কিতাবো কিতা লেখা আছে?
আপনে কিতা পাইছইন?”
২৭ আলিমে জুয়াপ দিলা,
“লেখা আছে,
তুমি তুমার আস্তা দিল দিয়া,
জান দিয়া,
হকল বল-শক্তি দিয়া,
তুমার ষোলআনা মন দিয়া,
তুমার মাবুদ আল্লারে মহব্বত করবায়।
আর,
তুমার আরি-ফরিরে নিজর লাখান মায়া করবায়।”
২৮ ইছায় তানরে কইলা,
“আপনে ঠিক কথা কইছইন।
তে আপনেও অউলা করউক্কা,
তেউ বেহেস্ত পাইবা।”
২৯ অউ আলিমে নিজর দাম বাড়ানির লাগি ইছারে কইলা,
“আইচ্ছা,
তে আমার আরি-ফরি কে?”
৩০ ইছায় কইলা,
“হুনউক্কা,
একজন মানুষ জেরুজালেম থাকি যিরিহো টাউনো যাওয়াত আছিল।
পথো ডাকাইতে পাইয়া তার কাপড়-চুপড় হকলতা কাড়িয়া নিয়া,
তারে মারিয়া আধ-মরা করি ফালাই থইয়া গেলগি।
৩১ বাদে এক ইমাম-ছাব অউ পথেদি যাইরা,
তাইন অউ বেটারে দেখিয়া গালাবায় হরিয়া গেলাগি।
৩২ অউ লাখান লেবির খান্দানর এক খাদিম ছাবও অউ পথেদি আইলা,
তাইনও এরে দেখিয়া গালাবায় গেলাগি।
৩৩ হেশে শমরিয়া জাতির এক বেটা অউ পথেদি আইলো,
হে বিধর্মী জাতির অইলেও এর হালত দেখিয়া তার দিলো দরদ হামাইলো।
৩৪ অউ হে এর জখমর উপরে তেল আর আংগুরর রস মালিশ করিয়া পট্টি বান্দিয়া দিলো।
বাদে তার নিজর গাধার উপরে তুলিয়া,
এক মুছাফির খানাত নিয়া তার যতন করলো।
৩৫ বাদর দিন অউ শমরিয় বেটায় মুছাফির খানার মালিকর আতো দুইটা দিনার দিয়া কইলো,
অউ মানুষগুর যতন করবা।
এর বেশি খরচ অইলেও,
আমি আইয়া দিমু।
৩৬ “তে আলিম ছাব,
আপনার কিতা মনো অয়,
অউ তিন জনর মাজে কুন জন,
ডাকাইতর আতো পিটা খাওরা বেটার আরি-ফরি?”
৩৭ আলিমে কইলা,
“যে মানষে তারে দরদ করলো হে-উ তো।”
তেউ ইছায় কইলা,
“তে আপনেও গিয়া অউলা করউক্কা।”
বিবি মার্থা আর তান বইন
৩৮ বাদে ইছা আর তান সাহাবি অকল আটি আটি এক গাউত গেলা।
হউ গাউর এক বেটি মানষে খুশি অইয়া ইছারে তান বাড়িত নিয়া মেহমানদারি করলা।
অউ বেটির নাম মার্থা।
৩৯ বেটির এক বইনর নাম অইলো মরিয়ম,
এইন হুজুরর পাওর কান্দাত বইয়া নছিয়ত হুনরা।
৪০ আর মার্থা গিয়া রান্দা-বাড়া আর খাতির-যতন করাত পেরেশানিত রইলা।
এরমাজে মার্থা আইয়া হুজুর ইছারে কইলা,
“হুজুর,
দেখরা নি আমার বইনে হক্কল কাম-কাজ একলা আমার উপরে থইয়া অনো আইছে?
তে আপনে কউক্কা,
আমারে সাইয্য করতো।”
৪১ হুজুরে কইলা,
“মার্থা,
তুমি বউত বেয়াপারে চিন্তা করিয়া পেরেশান অইগেছ।
৪২ হুনো,
আসলে একটা বেয়াপারউ খালি জরুর আছে।
তুমার বইন মরিয়মে হউ জরুরি বেয়াপাররে পছন্দ করছে।
ইতা তো তাইর গেছ থাকি কাড়িয়া নেওয়া যাইতো নায়।”