আখেরাতর ছামান কামাই করো
১২
 অউ সময় আজার আজার মানুষ দলা অইগেলা,
তারা ঠেলাঠেলি করি একে-অইন্যর উপরে পড়লা।
ইছায় পয়লা তান সাহাবি অকলরে কইলা,
“তুমরা ফরিশি মজহবর খামির থাকি হুশিয়ার রইও,
অউ খামির অইলো তারার ভন্ডামি।
 ঠিক অউ খামিরর লাখান,
ইলা লুকাইল কুন্তাউ নাই,
যেতা জাইর অইতো নায়।
ইলা গোপন কুন্তাউ নাই,
যেতা জানা যাইতো নায়।
 তুমরা আন্দাইর ঘরো যেতা মাতিছো,
মানষে ইতা ফরর মাজে হুনবো।
ঘরর ভিতরে কানে কানে যেতা কইছো,
ইতা চালর উপরে রটাইল অইবো।
 “ও আমার দুস্ত অকল,
আমি তুমরারে কইয়ার,
যারা খালি শরিলরে বিনাশ করা ছাড়া আর কুন্তাউ করতো পারে না,
তারারে ডরাইও না।
 তে কারে ডরাইতায় এওখানও কইরাম,
মারার বাদে দোজখো হারানির খেমতাও যান আছে,
খালি তানরেউ ডরাইও।
আমি হিরবার কইরাম,
তুমরা খালি তানেউ ডরাইও।
 মাত্র দুই আনায় পাচগু চড়া পাখি মিলে না নি?
আল্লায় তো অউ চড়ার কথাও ফাউরইন না।
 আর কিতা কইতাম,
তুমরার মাথার চুলর হিসাবও তান গেছে আছে।
তুমরা ডরাইও না,
বউত চড়া পাখি থনেও তুমরার দাম তান গেছে বেশি।
 “হুনো,
আমি তুমরারে কইরাম,
যে মানষে সমাজর ছামনে আমারে কবুল করে,
আমি বিন-আদমেও আল্লার ফিরিস্তা অকলর ছামনে তারে কবুল করমু।
 অইলে যে মানষে সমাজর ছামনে আমারে অস্বীকার করবো,
আমিও তারে আল্লার ফিরিস্তা অকলর ছামনে অস্বীকার করমু।
১০ আমি বিন-আদমর বিরুদ্ধে কেউ কুন্তা মাতিলেও মাফি পাইবো।
অইলে কেউ যুদি পাক রুহর বিরুদ্ধে কুফুরি করে,
তে তার কুনু মাফি নাই।
১১ “মানষে যেবলা তুমরারে মছিদর পাইঞ্চাইতো,
বিচারি অকলর ছামনে,
বা থানাত নিবো,
অউ সময় কিতা জুয়াপ দিতায় বা কিতা কইতায়,
ইতা লইয়া কুনু চিন্তা করিও না।
১২ কিতা মাতিতায় ইতা পাক রুহে তুমরারে হউ সময় বাতাই দিবা।”
১৩ ভিড়র মাজ থাকি একজনে ইছারে কইলো,
“হুজুর,
আপনে আমার ভাইরে কউক্কা,
আমার বাবায় যেতা ধন-ছামানা থইয়া গেছইন,
অতা বাট-বাটুরা করিয়া দিতা।”
১৪ ইছায় তারে কইলা,
“ওবা,
তুমরার বিচার করতাম আর ধন-ছামানা বাটিতাম,
ইতা এখতিয়ার আমারে খেগুয়ে দিছে?”
১৫ তাইন মানষরে কইলা,
“খবরদার!
হক্কল নমুনার লোভ-লালছ থনে নিজরে বাচাও।
কারন ধন-ছামানা বাইয়া গেলেও ইতায় মানষর জান বাচায় না।”
১৬ বাদে ইছায় তারারে অউ কিচ্ছা হুনাইলা,
কইলা,
“এক ধনি বেটার জমিনো বউত ধান ফলিছিল।
১৭ ধান দেখিয়া হে মনে মনে কইলো,
অতো ধান অখন কিতা করতাম?
আমার তো থইবারউ জাগা নাই।
১৮ তে আমি এক কাম করি,
আমার উগার ভাংগিয়া বড় করি কয়টা উগার বানাইলাই।
তেউ আমার হকল ধান আর মাল-ছামানা জাগা অইবো।
১৯ হেশে আমার জানরে কইমু,
ও জান,
বউত বছরর মাল-ছামানা আর খানি-খুরাকির লাগি নিচিন্তা অইগেছো।
অখন আরাম-আয়েশে তুমি খাইয়া ফিন্দিয়া ফুর্তি করো।
২০ অইলে আল্লায় তারে কইলা,
ওরে বেআখল,
তোর জান তো আইজ রাইতউ কবজ করা অইবো।
তে তুই যেতা জমাইছছ,
ইতা খেগুয়ে খাইবো?”
২১ হেশে ইছায় কইলা,
“যে মানষে খালি দুনিয়াবি ধন-ছামানা দলা করে,
অইলে আখেরর ধন না জমায়,
তার হালত অউলাউ অয়।”
২২ বাদে ইছায় তান সাগরিদ অকলরে কইলা,
“এরদায়উ আমি তুমরারে কইরাম,
কিতা খাইয়া বাচতাম,
আর কিতা ফিন্দিতাম,
ইতা লইয়া তুমরা চিন্তা করিও না।
২৩ জান থাকি তো খানি বড় নায়,
আর শরিল থাকি কাপড় বড় নায়।
২৪ অউ কাউয়া গুইন্তর বায় খিয়াল করো,
তারা তো খেতও করে না,
ফসলও কাটে না।
তারার উগারও নাই,
ভান্ডারও নাই।
আল্লায় তারার রিজেক যুগাইয়া দেইন।
তে তুমরা তো অউ কাউয়া থাকি বউত দামি।
২৫ কওছাইন,
তুমরার মাজে কেউ চিন্তা-ভাবনা করিয়া তার হায়াতি একখান ঘন্টাও বাড়াইতো পারবো নি?
২৬ আর অউ হুরু কামখানউ যেবলা পারো না,
তে কেনে বাড়তি চিন্তা করো?
২৭ “তুমরা অউ জংলি ফুলর বায় চাও,
ইতা কতো সুন্দর!
ইতায় তো নিজর সুন্দরর লাগি কুন্তাউ করেনা,
কুনু রংগ সিলাইও করে না,
বাইনও করে না,
এমনেউ অয়।
তে আমি কইয়ার,
বাদশা সুলাইমান অতো জাক-জমকর মাজে রইলেও তান লেবাছ তো অতা এগু জংলি ফুলর লাখানও সুন্দর আছিল না।
২৮ দেখরায় নি,
জংগলর মাজে অউ যতো সুন্দর ফুল অখন আছে,
কাইল অইলেউ মানষে ইতা দারু বানাইয়া আগুইনদি জালাইবো।
আল্লায় যুদি অউ জংগলরে অলা সুন্দর করি হাজাইছইন,
তে ও কমজুর ইমানদার অকল,
তুমরারেও তাইন সুন্দর করি হাজাইতা নায় নি?
২৯ তে কিলা খাইতাম,
কিলা চলতাম,
ইতা বেয়াপারে চিন্তা করিও না,
বা অস্থির অইও না।
৩০ ই দুনিয়ার মানষে খালি অতা লইয়াউ ধান্দা করে।
অইলে তুমরার বাতুনি বাফে তো এমনেউ জানইন,
তুমরার কিতা কিতা লাগবো।
৩১ এরদায়উ তুমরা ইতা বাদ দিয়া,
খালি আল্লার বাদশাইর ধান্দাত রও,
তেউ ইতা হক্কলতাউ তাইন যুগাইবা।
৩২ “তুমরাউ আমার মেড়ার পাল,
তুমরার দল হুরু-মুরু অইলেও ডরাইও না,
তুমরার বাতুনি বাফর মর্জি অইলো,
তুমরা তান বাদশাইর ভিতরো হামাও।
৩৩ তুমরার যততা আছে,
হক্কলতা বেচিয়া গরিব অকলরে বিলাই দেও,
আর নিজর লাগি খালি অউলা এক কুথি-বেগ তিয়ার করো,
যে কুথি কুনুদিন পুরান অয় না।
অউ বেহেস্তো ছামানা জমা করো,
যেখানো ছামানা ক্ষয় অয় না,
চুরেও নেয় না,
পুকেও খায় না।
৩৪ কারন তুমরার ধন যেনো রয়,
মনও হনো রইবো।
হামেশা তিয়ার রইও
৩৫ “তুমরা কাপড়-চুপড় ফিন্দিয়া আর বাত্তি জালাইয়া তিয়ার রইও।
৩৬ তুমরা অউ জাত কামলার লাখান অও,
যারা তারার মুনিবর লাগি বার চায়,
তাইন বিয়ার দাওত থাকি ফিরত আইয়া দুয়ারো ঠুকা দিলেউ,
লগে লগে দুয়ার খুলতো পারে।
৩৭ হউ গুলাম অকলউ কপালি,
যেরারে তারার মুনিবে আইয়া হজাগ পাইবা।
আমি হাছা কথা কইরাম,
মুনিবে আইয়া হারি তান নিজর কমরো গামছা বান্দিয়া তারারে খানিত বওয়াইবা,
আর নিজর আতে বাড়িয়া খাওয়াইবা।
৩৮ তারাউ বড় কপালি,
যেরারে তারার মুনিবে আধা রাইত বা হেশ রাইতে আইয়া ডাক দিলেউ হজাগ পাইবা।
৩৯ মনো রাখিও,
চুর কুন সময় আইবো,
গিরস্তে ইখান জানলে তো হে হজাগ রইলো অনে,
তার ঘরো হিং কাটতে দিলো না অনে।
৪০ তুমরাও অলা তিয়ার রইও,
কারন যে অখতর কথা তুমরা চিন্তাউ করতায় নায়,
হউ সময়উ বিন-আদমে তশরিফ আনবা।”
৪১ তেউ সাহাবি পিতরে কইলা,
“হুজুর,
ই নছিয়ত খালি আমরার লাগি,
না হকল মানষর লাগি?”
৪২ হুজুরে জুয়াপ দিলা,
“আখলদার আর হক-হালালি অউ জন কে,
যার আতো মালিকে তান গুলাম-বান্দিরে দেখা-হুনার ভার দিবা,
হে অখতর কালো তারার খানি বাটিয়া দিবো?
৪৩ হউ গুলামউ কপালি,
যারে তার মুনিবে আইয়া অউ লাখান কাম করাত দেখবা।
৪৪ আমি তুমরারে হাছা কথা কইরাম,
হউ মুনিবে তারে তান নিজর হকল ধন-ছামানা তদারকির এখতিয়ার দিবা।
৪৫ অইলে ধরিলাও,
হউ গুলামে মনে মনে কইলো,
আমার মুনিব আইতে তো বউত দেরি আছে,
আর অউ ফাকে হে হক্কল বান্দি-গুলামরে মাইর-ধইর করলো,
খাইয়া-দাইয়া ফুর্তি করিয়া,
মদ খাইয়া টাল অইয়া পড়ি রইলো।
৪৬ বাদে যে দিন আর যে অখতর কথা হে চিন্তাউ করতো নায়,
হউ দিন আর হউ অখতো তার মুনিব আইয়া আজির অইবা।
তাইন তারে এক ছেদে দুই টুকরা করিয়া নাফরমান অকলর কাতারো মিশাইবা।
৪৭ “আর যে গুলামে তার মুনিবর মর্জিরে বুজিয়াও তিয়ার অইছে না,
তান হুকুম মাফিক কাম করছে না,
তারে বেজুইতা মাইর মারা অইবো।
৪৮ অইলে না জানিয়া যুদি হে সাজা পাইবার কাম করিলায়,
তে তার সাজা কম অইবো।
যারে বেশি দেওয়া অইছে,
তার গেছ থনে বেশি চাওয়া অইবো,
আর যার গেছে বেশি পরিমানে থওয়া অইছে,
তার গেছেউ বেশি দাবি করা অইবো।
৪৯ “আমি তো দুনিয়াত আগুইন লাগানিত আইছি।
অখন যুদি ই আগুইনখান জলিযিতো,
তে বড় ভালা অইলো অনে।
৫০ আমি তো এক খাছ গোছল করাউ লাগবো।
তে আমার দুখ-কষ্টর ই গোছল যতদিন না অইছে,
অতো দিন আমার পেরেশানির কুনু সীমা নাই।
৫১ তুমরা মনো কররায় নি,
আমি দুনিয়াত শান্তি দিতাম আইছি?
না,
মোটেউ নায়,
আমি কইরাম,
আমি তো দুনিয়াত এক মতোভেদ লাগানিত আইছি।
৫২ অখন থাকি এক ঘরর পাচজন যারযির আলগ অইযিবো।
তিনজন দুইজনর বিপক্ষে,
আর দুইজন তিনজনর বিপক্ষে লাগব।
৫৩ বাফে পুয়ার বিপক্ষে আর পুয়া বাফর বিপক্ষে।
মা পুড়ির বিপক্ষে আর পুড়িয়ে মাʼর বিপক্ষে।
হড়ি বউর বিপক্ষে আর বউয়ে হড়ির বিপক্ষে লাগবো।”
৫৪ বাদে ইছায় মানষরে কইলা,
“তুমরা তো পইচমেদি কালনি দেখলেউ কও,
মেঘ আইওর।
আর হাছাউ মেঘ আয়।
৫৫ হিরবার দকিনা বাতাস চালু অইলে তুমরা কও,
খরা অইবো,
আর অলাউ অয়।
৫৬ ও ভন্ড অকল!
তুমরা আছমান আর জমিনর ছুরত বুজতায় পারো,
তে আখেরি জমানার হাল-হকিকত কেনে বুজো না?
৫৭ “কুনখান ঠিক,
ইতা তুমরা নিজে নিজেউ বিচার করো না কেনে?
৫৮ কুনু নালিশ লইয়া হাকিমর ছামনে যাইবার আগে,
বিপক্ষর লগে পথো বইয়াউ মিট-মাট করার চেষ্টা করিও।
আরনায় হে তুমারে ধরিয়া হাকিমর ছামনে নিবো,
হাকিমে পুলিশর আতো দিবো,
আর পুলিশে নিয়া জেলো হারাইবো।
৫৯ হেশে শেষ পয়সাটা আদায় না করা পর্যন্ত,
কুনুমন্তেউ জেল থাকি ছাড়া পাইতায় নায়,
ইতা আমি তুমরারে কইরাম।”