আরাইল মেড়ার কিচ্ছা
১৫
 হজরত ইছার বয়ান হুনার লাগি বউত ঘুষখুর খাজনা তুলরা আর বে-শরিয়তি আম মানুষ তান গেছে দলা অইলা।
 ইতা দেখিয়া ফরিশি দলর মানষে আর মৌলানা অকলে কানা-কানি করি কইলা,
“ই মানুষগু খালি নাফরমান অকলর লগে উঠা-বওয়া আর খানা-পিনা খায়।”
 তেউ ইছায় তারারে অউ কিচ্ছাইন হুনাইলা।
তাইন কইলা,
 “মনো করউক্কা,
আপনারা কুনু একজনর একশোটা মেড়া আছে।
এরমাজর এগু মেড়া আরাই গেলে,
হে বাকি নিরান্নব্বইটা বন্দো থইয়া হউ আরাইল অগু তুকানিত যায় না নি?
 গিয়া অগু তুকাইয়া পাইলে,
খুশিয়ে ইটারে কান্দো করি আনে।
 বাদে বাড়িত গিয়া বন্ধু-বান্ধব আর আরি-ফরিরে কয়,
আও,
আমার লগে ফুর্তি করো।
আমার আরাইল মেড়াগু তুকাইয়া পাইলিছি।
 আমি আপনারারে কইরাম,
এক্কেরে অউ লাখানউ,
যারা গুনা থাকি তৌবা করার জরুর মনো করে না,
ইলা নিরান্নব্বই জন পরেজগার থাকি একজন গুনাগারে মন বদলাইয়া তৌবা করলে,
বেহেস্তো আরো বেশি খুশি-বাসি অয়।
আরাইল টেকার কিচ্ছা
 “বা ধরউক্কা,
কুনু এক বেটির গেছে রুপার দশটা টেকা আছিল।
এরথাকি এগু টেকা যুদি আরাইযায়,
তে বেটিয়ে হি টেকার লাগি লেম জালাইয়া হুরুইনদি হুরিয়া আস্তা ঘর তুকায় না নি?
 বাদে তুকাইয়া পাইলিলে বন্ধু-বান্ধব আর আরি-ফরিরে ডাকিয়া কয়,
আও না,
আমার লগে খুশিত সামিল অও।
আমার আরাইল টেকাগু তুকাইয়া পাইলিছি।
১০ আমি আপনারারে কইরাম,
এক্কেরে অউ লাখানউ,
একজন গুনাগার মানষে মন বদলাইয়া তৌবা করলে,
আল্লার ফিরিস্তা অকলে অউলা খুশি করইন।”
আরাইল পুয়ার কিচ্ছা
১১ বাদে ইছায় কইলা,
“এক গিরস্তর দুই পুয়া আছিল।
১২ একদিন হুরু পুয়ায় তার বাফরে কইলো,
বাবা,
আমি বাবাইতি জমি-জমা আর ধন-ছামানা যেতা পাইতাম,
আমার অউ বাট-খান অখনউ আলগাইয়া দিলাউক্কা।
অউ বাফে তান ছামানা দুইও পুয়ার নামে বাটিয়া দিলাইলা।
১৩ এর কয়দিন বাদে হুরু পুয়ায় তার হক্কল ছামানা বেচিয়া বিদেশ গেলগি।
বিদেশ গিয়া বাদ পথে চলিয়া তার টেকা-পয়সা হক্কলতা খুয়াইলিলো।
১৪ হকলতা খুয়াইয়া হারলে হউ দেশর হকল জাগাত খুব নিদান দেখা দিলো এরদায় হে খুব কষ্টত পড়লো।
১৫ হে হউ দেশর এক গিরস্তর বাড়িত গিয়া চাকরি চাইলো।
মালিকে তারে চাকরি দিয়া শুয়রর পাল রাখার লাগি বন্দো পাঠাইলো।
১৬ বন্দো গিয়া শুয়রে যেতা খায়,
হে-ও অতা খাইয়া পেটর ভুক মিটাইতো চাইলো,
অইলে অতাও কেউ তারে দিতো না।
১৭ “বাদে আখতা একদিন তার হুশ অইলো।
হে মনে মনে কইলো,
আমার বাবার বাড়িত তো বউত চাকর-বাকরে পেট ভরি ভাত খাইরা।
তে আমি অনো উপাসে মররাম কেনে?
১৮ আমি গিয়া আমার বাবারে কইমু,
বাবা,
আমি তো আল্লার গেছে আর তুমার গেছেও নাফরমান বনিগেছি।
১৯ তুমার পুয়া কইয়া আমি আর পরিচয় দিবার লাখ নায়।
খালি তুমার চাকরর লাখান আমারে একজরা আশ্রয় দেও।
২০ অখান কইয়া হে তার বাড়িত রওয়ানা দিলাইলো।
বাড়ির কান্দাত আইতেউ তার বাফে তারে দেখিলিলা।
দেখিয়া তান দিল গলি গেল।
তাইন দৌড়িয়া গিয়া তারে আইঞ্জা করি ধরিয়া হুংগা দিলা।
২১ তেউ পুয়ায় কইলো,
বাবা,
আমি তো তুমার পুয়া কইয়া পরিচয় দিবার লাখ রইছি না।
আমি আল্লার গেছে আর তুমার গেছেও নাফরমান বনিগেছি।
২২ অইলে বাফে লগে লগে কামলাইন্তরে কইলা,
হই,
জলদি করি ঘর থাকি ভালা জুব্বাটা আনিয়া আমার পুয়াগুরে ফিন্দাও।
তার আতো আংটি আর পাওত জুতা ফিন্দাই দেও।
২৩ আর হুনো,
পালো থাকি তাজা ডেকা-বাছুরগু আনিয়া জবো করো।
আও,
আমরা হকলে মিলিয়া খুশি-বাসি করি খানা খাই।
২৪ আমার ই পুয়াগু তো মরিগেছিল,
অখন হিরবার জিন্দা অইছে।
অগু নাই অইগেছিল,
অখন ফিরত পাইছি।
তেউ হকলে মিলিয়া খুশি-বাসিত লাগলা।
২৫ “অউ সময় বেটার বড় পুয়া বন্দো আছিল।
হে বাড়ির কান্দাত আইয়া নাচ-গান আর ডুল-ডপকির আওয়াজ হুনিয়া,
২৬ তারার এক চাকররে জিকাইলো,
কিতারে,
ইতা কিতা অর?
২৭ চাকরে কইলো,
ছাব,
আপনার হুরু ভাই বাড়িত আইছইন।
আপনার আব্বায় তানরে ছহি-ছালামতে পাইয়া,
তাজা অউ ডেকা-বাছুর জবো করছইন।
২৮ ইখান হুনিয়া বড় পুয়ায় গুছা করিয়া বাড়ির ভিতরে আইতো চাইলো না।
তেউ তার বাফ বার অইয়া আইয়া তারে মিনত-কাজ্জি করলা।
২৯ হে তার বাফরে কইলো,
দেখউক্কা,
আমি অতো দিন ধরিয়া আপনার খেজমত কররাম,
কুনুদিনউ আপনার হুকুম উল্টাইছি না।
অইলে আমার বন্ধু-বান্ধব লইয়া খুশি করার লাগি এগু বকরির বাইচ্চাও কুনুদিন দিছইন না।
৩০ আর আপনার যে পুয়ায় নটি বেটিন্তর তলে হকল ছামানা খুয়াইছে,
হে আইতেউ তাজা ডেকা-বাছুরগু আনিয়া জবো করিলাইলা!
৩১ বাফে কইলা,
পুতরে,
তুমি তো হামেশাউ আমার লগে আছো।
আমার যেতা ছামানা রইছে,
ইতা হক্কলতাউ তো তুমার।
৩২ অখন আমরা হকলে দিল ছাফ করিয়া খুশি-বাসি করা জরুর।
তুমার ই ভাই তো মরিউ গেছিল,
অখন হিরবার জিন্দা অইছে।
অগু এক্কেরে নাই অইগেছিল,
অখন ফিরত পাইছি।”