আল্লার কালাম মানিয়া চলা
৪
১ হজরত মুছায় তারারে কইলা, “ও বনি ইছরাইল, আমি অখন যে শরিয়ত আর হুকুম-আহকাম কইমু, ইতা তুমরা খিয়াল করি হুনো। তেউ তুমরা জানে বাচবায় আর তুমরার বাফ-দাদার মাবুদ আল্লায় তুমরারে যে দেশ দান কররা, হউ দেশো গিয়া দখল করতায় পারবায়। ২ আমি তুমরারে যে হুকুম দিয়ার, ই হুকুমর লগে দুছরা কুন্তা বাড়াইও না বা কমাইও না। আমি যেলাখান কইরাম, তুমরা ঠিক অলাউ তুমরার মাবুদ আল্লার হকল হুকুম-আহকাম মানিয়া চলিও।৩ “তুমরা তো নিজর চউখে দেখছো, আগে মাবুদে বাআল-পিয়োরর বেয়াপারে কিতা করছইন। তুমরার মাজর যতো জনে পিয়োর এলাকার বাআল দেবতার পুজা করছিল, আল্লা মাবুদে তুমরার ছামনে ইতা হক্কলটিরে বিনাশ করছইন। ৪ অইলে তুমরা যেরা দিলে-জানে আল্লা মাবুদর আশিক আছলায়, তুমরা হকলউ অখনও জিন্দা রইছো।
৫ “অখন হুনো, আমার মাবুদ আল্লায় আমারে যেলাখান হুকুম-আহকাম দিছলা, আমি তুমরারে ঠিক অউ হুকুম-আহকাম আর নিয়ম-কানুন হিকাইছি। যাতে তুমরা অখন যে দেশ দখল করাত যাইরায়, হউ দেশো ইতা কামো লাগাও। ৬ এরলাগি তুমরা খুব হুশিয়ার অইয়া ইতা মানিও, আর কামো লাগাইও। তেউ বাদ-বাকি তামাম জাতির গেছেউ ইতা তুমরার আখল-বুদ্ধি হিসাবে জাইর অইবো। অউ হুকুম-আহকামর কথা হুনলে তারা কইবা, হাছাউ এরা খুব বড় জাতি আর আখল-বুদ্ধি আলা জাতি। ৭ আর আমরার মাবুদ আল্লা যেলা আমরার লগে লগে রইন, তানরে ডাকিলে যেলা ধারো পাই, অউ দুনিয়ার বুকুত দুছরা কুনু বড় জাতি আছইন নি, যেতার দেবতা অলা লগে লগে রইন? ৮ বা আমি অখন যে শরিয়তর কথা কইরাম, ইতা দুছরা কুনু বড় জাতির আছে নি? ইলা নিয়ম-কানুন আর নিখুত হুকুম-আহকাম তারার আছে নি?
৯ “অইলে তুমরা যতদিন বাচিয়া রইবায়, অতদিন নিজর বেয়াপারে খুব হুশিয়ার রইও, নিজর দিলরে সাবধানে রাখিও, আরনায় নিজর চখুর দেখা ঘটনা অকল ফাউরিলিবায়, ইতা তুমরার দিল থাকি খুয়াইলিবায়। আর অউ হুকুম-আহকাম তুমরার পুয়া-পুড়িনরে হিকাও, তারাও অলা তারার আওলাদরে হিকাইবা। ১০ আর তুমরা হউ দিনর ঘটনা মনো করো, যে দিন তুমরা তুর পাড়ো আপন মাবুদ আল্লার ছামনে আজির অইছলায়। যেবলা তাইন আমারে কইছলা, আমার কালাম হুনার লাগি তুমি হক্কল মানষরে দলা করিয়া আমার ছামনে আনো, তেউ তারা হিকবা, ই জগতো তারা যতদিন জিন্দা রইবা, অতদিন আমারে ডরাইয়া রইতা, আর তারার হুরুতাইনরেও অলা চলার তালিম দিতা। ১১ অউ সময় তুমরা কান্দাত গিয়া অউ পাড়র লামাত উবাইছলায়, উবাইয়া দেখলায়, আস্তা পাড়ো দাউ দাউ করি নুরর আগুইন জলের, আগুইনে গিয়া আছমান ছইলিছে, আর গইন ঘনো মেঘর কালনিয়ে আন্দাইর আছিল। ১২ হউ নুরর আগুনির ভিতরে থাকি, মাবুদে তুমরারে তান কালাম হুনাইলা। তুমরা তান মুখর আওয়াজ হুনলায়, অইলে তান কুনু ছুরত-আকার দেখাইছইন না, খালি তান গলার আওয়াজ হুনছো। ১৩ তাইন নিজে তুমরারে তান লগে মিলনর উছিলার আল্লাই আপোস-চুক্তির খাছ দশটা হুকুম-আহকাম দিলা, আর কইলা অগুইন মানিয়া চলার লাগি। তান কুদরতি আতে দুই টুকরা পাথরর উপরে ইতা লেখিয়াও দিলা। ১৪ হউ সময় মাবুদে আমারে হুকুম দিলা, আমি তুমরারে তান শরিয়তর হুকুম-আহকাম হিকাইতাম, যাতে জর্দান গাংগর হপারো তুমরা যে দেশ দখলো যাইরায়, হনো গিয়া হারলে অতা মানিয়া চলো।
মুর্তিপুজা থাকি হুশিয়ার
১৫ “মাবুদে যেবলা নুরর আগুনির মাজ থাকি তুর পাড়ো তুমরার লগে বাতচিত করছলা, হউ দিন তো তুমরা তান কুনু ছুরত-আকার দেখছো না। এরলাগি তুমরা নিজর বেয়াপারে খুব হুশিয়ার রইও ১৬ যাতে কুনু মুর্তি না বানাও, বে-পথি বনিয়া পুজা করার খিয়ালে কুনু বেটা বা বেটির ছুরতে মুর্তি বানাইও না। ১৭ মাটির উপরে চলরা কুনু জীব-জানুয়ারর ছুরতে, আছমানো উড়রা কুনু পাখির ছুরতে, ১৮ বুক ছেছরাইয়া চলরা কুনু জানদারর ছুরতে, বা পানিত রওরা কুনু জানদারর ছুরতে মুর্তি বানাইও না। ১৯ আছমানেদি চাইয়া হারি চান্দ, সুরুজ, তেরা অকল দেখিয়া অউ নামর দেব-দেবী বা ফিরিস্তার পুজা করিও না, এরার খেজমতো লাগিও না। ইতারে তো তুমরার মাবুদ আল্লায় আছমানর তলর হকল জাতির লাগি দান করছইন। ২০ মনো রাখিও, মাবুদে তুমরারে পছন্দ করছইন লুয়া গলানির গরম আগুনির গাতো থাকি, তাইন মিসর দেশ থাকি তুমরারে বার করি আনছইন, যাতে তুমরা তান আপন প্রজা অও, আর অখন তো হাছাউ তান প্রজা অইছো।
২১ “ও বনি ইছরাইল, তুমরার কারনে মাবুদে আমার উপরেও গুছা করছইন। তাইন কছম খাইয়া কইছইন, আমারে জর্দান গাংগর হপারো যাইতে দিতা নায়, তুমরার মাবুদ আল্লায় তুমরারে যে দেশর মালিকানা দিরা, অউ আরামর দেশো আমার যাওয়া নিষেধ। ২২ আমার মউত অনোউ অইবো। জর্দান গাং পারনির হুকুম নাই। অইলে তুমরা গাং পার অইয়া হউ আরামর দেশ দখল করাত যাইরায়। ২৩ তে তুমরা নিজর বেয়াপারে হুশিয়ার রইও, তুমরার মাবুদ আল্লায় তুমরার লগে যে আপোস-চুক্তি কাইম করছইন, ইতা ফাউরিও না। তুমরার মাবুদ আল্লার নিষেধ অমাইন্য করিয়া কুনু জিনিসর মুর্তি বানাইও না। ২৪ মনো রাখিও, তুমরার মাবুদ আল্লা তো মহা ধ্বংসর আগুনির লাখান, তাইন তান নিজর পাওনা এবাদত চাইনউ চাইন।”
২৫ হজরত মুছায় তারারে এওখান কইলা, “হউ আরামর দেশো গিয়া হারি, তুমরা পুয়া-পুড়িন, নাতি-পুতির জনম দিয়া বউত দিন বসত করার বাদেও যুদি কু-পথে যাওগি, আর কুনু জিনিসর ছুরতে মুর্তি বানাও, তুমরার মাবুদ আল্লায় যেতারে ঘিন্না করইন, তুমরা অতা করো, ২৬ তে আমি অখন আছমান-জমিন সাক্ষি রাখিয়া তুমরার বিরুদ্ধে কইয়ার, জর্দান গাং পার অইয়া যে দেশ দখল করাত যাইরায়, হিনো খুব জলদি তুমরার নাম মিটিযিবো। বেশি দিন টিকতায় পারতায় নায়, নিচ্চিত বিনাশ অইবায়। ২৭ মাবুদে তুমরারে নানান জাতির মাজে ছিতরাই দিবা, তাইন খেদাই দিয়া যেখানো পাঠাইবা, হনো তুমরার খুব কম মানুষ জিন্দা রইবা। ২৮ অউ হালতে তুমরা মানুষ-আতে বানাইল মুর্তির পুজা করবায়, যেতায় চউখে দেখে না, কানে হুনে না, খাইতো পারে না, কুনুজাত ঘেরানও হুংগিতো পারে না, লাকড়ির আর পাথরর অতা মুর্তির পুজা করবায়। ২৯ তা-ও হনো রইয়া যুদি তুমরা নিজর মাবুদ আল্লার তালাশ করো, তে তাইন তুমরারে দিদার দিবা। কথা অইলো, দিলে-জানে কাতর অইয়া তানে ডাকিতে অইবো। ৩০ হেশ-মেশ তুমরা মছিবতো পড়িয়া হিরবার তৌবা করিয়া, তুমরার মাবুদ আল্লার নাম লইবায়, আর তান খুশি মাফিক চলবায়। ৩১ মনো রাখিও, তুমরার মাবুদ আল্লা রহমানুর রহিম, তাইন তুমরারে ফালাইতা নায় বা বিনাশ করতা নায়। আর তাইন কছম খাইয়া তুমরার ময়-মুরব্বির লগে যে ওয়াদা আর চুক্তি করছইন, ইতাও ফাউরিতা নায়।”
আল্লা ছাড়া দুছরা কুনু মাবুদ নাই
৩২ হজরত মুছায় তারারে এওখান কইরা, “আল্লা পাকে জমিনো মানুষ পয়দা করার বাদ থাকি অখন পর্যন্ত, তুমরার আগর হক্কল জমানার ইতিহাস তুকাও, আস্তা আছমান-জমিনর এক মাথা থাকি আরক মাথা তুকাইয়া দেখো, বনি ইছরাইলর উপরে যতো আজব ঘটনা ঘটিছে, ইতা লাখান দুছরা কুনু ঘটনা ঘটছে নি? বা ইলা কুন্তা কুনুদিন হুনা গেছে নি? ৩৩ আর নুরর আগুইন থাকি আল্লা পাকর বুলি হুনার বাদে, খালি তুমরা ছাড়া দুছরা কুনু জাতি জিন্দা রইছে নি? ৩৪ তুমরা তালাশ করি দেখো, তুমরার মাবুদ আল্লায় তুমরার চখুর ছামনে মিসর দেশো তুমরার লাগি যততা করছইন, আস্তা জগতর কুনু দেব-দেবীয়ে ইলা করতো পারছে নি? ইলা পরিক্ষা লওয়া, কুদরতি নিশানা দেখানি, লাড়াই-যুদ্ধ করা, মজবুত আতর বল দেখানি, বড় বড় তাইজ্জুবি লিলা-খেলা আর ডর-খফ দেখাইয়া, যেকুনু জাতিরে অইন্য জাতির ভিতরে থাকি বার করি আনিয়া নিজর প্রজা বানাইতো পারছে নি?
৩৫ “তে তুমরা যাতে পুরাপুর বুজো, অউ আল্লাউ অইলা মাবুদ, তাইন ছাড়া আর কুনু মাবুদ নাই, অখান বুজানির লাগিউ তুমরারে অততা দেখানি অইছিল। ৩৬ তুমরারে হেদায়ত করার খিয়ালে তাইন বেহেস্তর আরশ থাকি তান নিজর বুলি হুনাইলা, আর জমিনর উপরে দেখাইলা নুরর আগুনির কুন্ডলি। অউ আগুনির মাজ থাকি বার অইল আল্লাই বুলি তুমরা হুনছো। ৩৭ তাইন তুমরার ময়-মুরব্বি অকলরে মহব্বত করতা, এরলাগি এরার মউতর বাদে তারার আওলাদ অকলরেও পছন্দ করছইন। আর তাইন স্বয়ং আজির অইয়া তান মহা কুদরতি খেমতা খাটাইয়া তুমরারে মিসর দেশ থাকি বার করি আনছইন। ৩৮ তান খিয়াল আছিল, তুমাতান থাকি বড় আর বলবান জাতি অকলরে তুমরার ছামন থাকি খেদাইয়া হারি, তারার দেশো নিয়া হউ হকল দেশর মালিকানা তুমরারে দিতা। অখন দেখরায় নি, তাইন তো ইতা করছইন।
৩৯ “তে অখনকুর অউ তালিম মনো রাখিও, দিলর মাজে গাথিয়া থইও, হুনো, খালি অউ আল্লাউ উপরে আছমান আর তলে জমিনর মালিক, তাইন ছাড়া দুছরা কুনু মাবুদ নাই। ৪০ এরলাগি আমি অখন যে শরিয়ত আর হুকুম-আহকাম জানাইরাম, তুমরা ইতা মানিয়া চলিও, তেউ তুমরা আর তুমরার আওলাদ অকলর ভালাই অইবো। তুমরার মাবুদ আল্লায় চিরকালর লাগি তুমরারে যে দেশ দান কররা, অউ দেশো তুমরার হায়াতি লাম্বা অইবো।”
আশ্রয় টাউন ঠিক করা
৪১ বাদে মুছা নবীয়ে জর্দান গাংগর পুব-পারর তিনখান টাউন আলগাইলা, ৪২ যাতে কুনু খুনি মানুষ বাগিয়া গিয়া অউ টাউনো জান বাচাইতো পারে। যে মানষে খুন করার কুনু চিন্তা বা দুশমনি ভাব আছিল না, খালি আখতা অনিচ্ছায় কেউররে মারিলায়, হে বাগিয়া বনবাসি বনিয়া অনো রইতো পারবো। ৪৩ তিনো টাউন অইলো, রুবেন খান্দানর লাগি মরুভুমির কিনারার পাড়িয়া থল জাগার বাছির নামর টাউন। ছাদু খান্দানর লাগি গিলিয়দ এলাকার রামোত টাউন। মানশা খান্দানর লাগি বাশন দেশর গোলান টাউন।
হজরত মুছা (আঃ) অর দুছরা নছিয়ত (৪:৪৪—২৬:১৯)
শরিয়তর হুকুম-আহকাম জানানি
৪৪ মুছা নবীয়ে বনি ইছরাইলর ছামনে শরিয়তর অউ হুকুম বয়ান করলা, ৪৫ মিসর দেশ থাকি বার অইয়া আওয়ার বাদে, হকল হুশিয়ারির কথা, শরিয়তর নিয়ম-কানুন আর হুকুম-আহকাম বনি ইছরাইলরে জানাইলা। ৪৬ তাইন জর্দান গাংগর পুবর পারো, হিশবন এলাকার আমোরী জাতির রাজা সীহোনর দেশর বায়ত-পিয়োরর ছামনর তল জাগাত ইতা কইলা। মিসর থাকি বার অইয়া আইয়া হারলে মুছা নবীয়ে আর বনি ইছরাইলে যুদ্ধ করি অউ বাদশা সীহোনরে আরাইছলা। ৪৭ তারা বাদশা সীহোনর দেশ আর বাশনর বাদশা উজর দেশ দখল করছলা। আমোরী জাতির অউ দুইও বাদশার বাদশাই আছিল জর্দান গাংগর পুবর পারো। ৪৮ অরনন খালর পারর আরোয়ার টাউন থাকি সিরিয়ন পাড়, মানি হর্মোন পাড় পর্যন্ত অউ দুইও রাজার সীমানা আছিল। ৪৯ এর ভিতরে আছে জর্দান গাংগর পুবর পারর আস্তা এলাকা। ইকটা পিছগা পাড়র টিল্লার তলেদি আরাবা সাগরর কিনারা পর্যন্ত গেছে।