হজরত ইছা রুহুল্লার নুরানি ছুরত
 হজরত ইছায় তান সাহাবি অকলরে কইলা,
“আমি তুমরারে হাছাউ কইরাম,
ইনো ইলাখান কয়জন আজির আছইন,
যেরা আল্লার বাদশাইর শান-তজল্লিরে নিজর চউখে না দেখার আগে মউত অইতো নায়।”
 ইখান কওয়ার ছয়দিন বাদে তাইন খালি হজরত পিতর,
ইয়াকুব আর হান্নানরে লইয়া উচা এক পাড়র উপরে উঠিলা।
অউ তিনো জনর চউখর ছামনে তান নিজর ছুরত বদলি গেল।
 তান ফিন্নর লেবাছ অতো বেশি ধলা চকচকা অইলো যেন,
দুনিয়ার কুনু ধুপায়উ ইলা চকচকা করি ধোয়ার তাক্কত নাই।
 সাহাবি অকলে হজরত মুছা আর ইলিয়াছ নবীরে দেখলা,
এরা আইয়া হজরত ইছার লগে বাতচিত কররা।
 তেউ পিতরে কইলা,
“হুজুর,
আমরা তো অনো আছি,
খুব ভালা অইছে।
আমরা তিনখান ডেরা-ঘর তিয়ার করিলাই,
একখান আপনার লাগি,
একখান হজরত মুছা আর একখান ইলিয়াছ নবীর লাগি।”
 এরা খুব বেশি ডরাইগেছলা,
এরদায় কিতা মাতিতা কুনু তাল পাইলা না।
 অউ সময় গাইবি এক মেঘর টুকরায় আইয়া এরারে গুরিলিলো,
আর অউ টুকরা থাকি গাইবি আওয়াজ অইলো,
“এইনউ আমার খাছ মায়ার জন,
তুমরা এন নছিয়ত হুনো।”
 ঠিক অউ সময় তারা চাইরোবায় চাইয়া খালি ইছা ছাড়া আর কেউররে ইনো দেখলা না।
 বাদে পাড় থাকি লামিয়া আইবার বালা ইছায় এরারে হুকুম দিলা,
“আইজ যেতা দেখলায়,
আমি বিন-আদম মরা থাকি জিন্দা অইয়া উঠার আগ পর্যন্ত ইতা আর কেউররে হুনাইও না।”
১০ এরা তান হুকুম মানলা,
অইলে মরা থাকি জিন্দা অওয়ার ভেদ কিতা অখান না বুজায়,
তারা একে-অইন্যে জিকাইলা।
১১ বাদে ইছার গেছে আরজ করলা,
“হুজুর,
মৌলানা অকলে কেনে কইন,
হজরত ইলিয়াছ নবীয়ে পয়লা তশরিফ আনা জরুর?”
১২ তাইন কইলা,
“ইখান হাছা কথা,
পয়লা হজরত ইলিয়াছে আইয়া হক্কলতা আগর হালতো ফিরাই আনবা।
অইলে বিন-আদমর বেয়াপারে আল্লার কালামো কেনে লেখা অইছে,
তাইন খুব দুখ-মছিবত পুয়ানি লাগব,
মানষে তানরে কবুল করতা নায়?
১৩ আমি তুমরারে কইয়ার,
ইলিয়াছ নবীর বেয়াপারে পাক কিতাবো যেলা লেখা আছে,
অলাখানউ তাইন আইছলা।
মানষেও তান লগে যেতা মনোলয় অতা করছে।”
জিনর আছর আলা পুয়ারে ভালা করা
১৪ ইছায় অউ তিনো জনরে লইয়া পাড় থনে লামিয়া বাকি সাহাবি অকলর গেছে আইয়া দেখলা,
বউত মানুষ আইয়া চাইরোবায় দলা অইছইন,
আর কয়জন মৌলানায় এরার লগে তর্কা-তর্কি কররা।
১৫ ইছারে দেখিয়াউ মানুষ তাইজ্জুব অইয়া,
দৌড়াইয়া আইয়া তানরে ছালাম করলা।
১৬ তাইন অউ মৌলানা অকলরে জিকাইলা,
“আপনারা কিতা লইয়া এরার লগে তর্ক কররা?”
১৭ ভিড়র মাজ থাকি একজনে কইলো,
“ছাব,
আমার পুয়াগুরে লইয়া আপনার গেছে আইছলাম,
অগুরে বোবা জিনে আছর করছে।
১৮ অউ জিনে তারে যেবলাউ ধরে,
তারে আছাড় মারিয়া মাটিত ফালায়।
তার মুখ থাকি ফেনা বারয়,
দাতো কবট লাগিয়া ডাট্টা অইযায়।
আমি তারে লইয়া আপনার সাহাবি অকলর গেছে আইছলাম,
অইলে এরা পারছইন না।”
১৯ তেউ ইছায় কইলা,
“হায়রে বেইমান অকল!
আমি আর কতদিন তুমরার লগে রইমু,
তুমরার জালা কতদিন সইয্য করমু?
আইচ্ছা,
পুয়ারে অনো আনো।”
২০ মানষে পুয়ারে তান গেছে আনলা।
তানে দেখিয়াউ জিনে তারে খুব জাতিয়া ধরল।
পুয়ায় মাটিত পড়িয়া মুখর ফেনা বার করি গড়া-গড়ি লাগাইলো।
২১ ইছায় তার বাফরে জিকাইলা,
“তার ই দশা কতদিন থাকি?”
বেটায় কইলো,
“হুরুমান থাকিউ।
২২ আর ই জিনে তারে মারিলিতো করি বউত বার তারে আগুনিত আর পানিত ফালাইছে।
অখন আপনে যুদি পারইন,
তে আমরারে দয়া করউক্কা।”
২৩ ইছায় কইলা,
“যুদি পারইন,
ই কথার মানি কিতা?
যে একিন করে তার লাগি হক্কলতাউ অয়।”
২৪ অউ বেটায় জুরে জুরে কইলো,
“হুজুর,
আমি একিন করছি।
আমার ইমানর কমজুরি হরাই দেউক্কা।”
২৫ আরো বউত মানুষ দৌড়াইয়া তান গেছে আইরা দেখিয়া,
তাইন জিনরে ধামকি মারি কইলা,
“অই খালুয়া আর বোবা জিন,
আমি হুকুম দিয়ার,
এর গেছ থাকি বার অই যা।
তারে আর কুনুদিন ধরিছ না।”
২৬ ইখান হুনিয়া জিনে তারে খুব জুরে চিক দিয়া জাতা মারি ছাড়িয়া গেলোগি।
তেউ ই পুয়া মুর্দার লাখান মাটিত পড়ি রইছে দেখিয়া মানষে কইলা,
“এ তো মারা গেছে।”
২৭ অইলে ইছায় তারে আতো ধরি তুলতেউ হে উবাই গেল।
২৮ বাদে তাইন ঘরো হামাইয়া হারলে সাহাবি অকলে তানরে নিরালায় জিকাইলা,
“হুজুর,
আমরা পারলাম না কেনে?”
২৯ তাইন জুয়াপ দিলা,
“দোয়া না করলে আর কুনুমন্তেউ ই লাখান জিন ছাড়াইল যায় না।”
দুছরা বার নিজর মউতর আগাম খবর
৩০ বাদে হকলে মিলি ই জাগা ছাড়িয়া গালিল জিলার মাজেদি রওয়ানা অইলা।
চাইলা,
মানষে যানু ইতা না জানইন।
৩১ অউ সময় তো তান সাহাবি অকলরে তালিম দেওয়াত আছলা,
তাইন কইলা,
“আমি বিন-আদমরে মানষর আতো ধরাই দেওয়া অইবো,
কাতল করা অইবো,
আর মউতর তিন দিন বাদে হিরবার জিন্দা অইয়া উঠমু।”
৩২ সাহাবি অকলে তান ই তালিমর কুনু ভেদ বুজলা না,
আর তান গেছে জিকানিরও সাওস পাইলা না।
দামি মানুষ কে?
৩৩ বাদে ইছায় তান সাহাবি অকলরে লইয়া কফরনাউম টাউনো আইলা।
আইয়া ঘরো হামাইয়া এরারে জিকাইলা,
“পথো তুমরা কিতা লইয়া তর্ক করলায়?”
৩৪ এরা মুখ বন্দ করি বইরইলা।
আসলে পথো তারা তর্ক করছলা,
তারার মাজে কে হকল থাকি দামি মানুষ।
৩৫ ইছা বইগেলা,
বইয়া এরা বারোজনরে তান ধারো নিয়া কইলা,
“কেউ যুদি দামি মানুষ অইতো চায়,
তে হে হকলর খরে রইতে অইবো।
আর হকলর খেজমত করা লাগবো।”
৩৬ বাদে এক হুরুতারে আনিয়া এরার ছামনে উবা করাইলা।
তারে কুলো লইয়া কইলা,
৩৭ “যে জনে আমার লাগি অউ হুরুতার লাখান কুনু ছাবালরে কবুল করে,
হে আমারেউ কবুল করে।
আর আমারে যে কবুল করে,
হে খালি আমারে নায়,
আমারে যেইন বেজিছইন তানরেও কবুল করলো।”
৩৮ তান সাহাবি হান্নানে কইলা,
“হুজুর,
আমরা এক বেটারে দেখছি,
হে আপনার নাম লইয়া জিন্নাত ছাড়ায়।
দেখিয়া আমরা তারে নিষেধ করছি,
হে তো আমরার তরিকার মানুষ নায়।”
৩৯ তাইন কইলা,
“এরে নিষেধ করিও না।
আমার নাম লইয়া কেউ কেরামতি দেখানির বাদে,
হে অতো জলদি আমার গিবত গাইতো পারতো নায়।
৪০ যেরা আমরার বিপক্ষে নায়,
তারা তো আমরার পক্ষে।
৪১ হুনো,
আমি হাছা কথা কইয়ার,
আল-মসীর তরিকার মানুষ অওয়ার খাতিরে,
কেউ যুদি তুমরারে এক গেলাস পানি খাওয়ায়,
তে হে এর পুরুস্কার পাইবোউ পাইবো।
রিপু থাকি হুশিয়ার রওয়া
৪২ “আর আমার তরিকার অউ হুরু-মুরু একজনরে যুদি কেউ তার ইমানর পথে বাধা দেয়,
তে এর চাইতে তার লাগি আরো ভালা অইবো,
তার গলাত পাথর বান্দিয়া দরিয়াত ফালাই দেওয়া।
৪৩ তুমার আত যুদি তুমার রিপু অইযায়,
তে আত কাটিয়া ফালাই দেও।
৪৪ দুইও আত লইয়া জাহান্নামি অওয়া থাকি,
এক আত লইয়া জান্নাতো যাওয়া তুমার লাগি ভালা।
জাহান্নামর আগুইন তো কুনুদিন নিভে না।
৪৫ তুমার পাও যুদি তুমার রিপু অইযায়,
তে পাও কাটিয়া ফালাই দেও।
দুইও পাও লইয়া জাহান্নামো জলা থাকি,
লেংড়া অইয়া জান্নাতো যাওয়া তুমার লাগি ভালা।
৪৬-৪৭ তুমার চউখ যুদি তুমার রিপু অইযায়,
তে চউখ তুলিয়া ফালাই দেও।
দুইও চউখ লইয়া জাহান্নামো জলা থাকি,
কানা অইয়া আল্লার বাদশাইত দাখিল অওয়া তুমার লাগি ভালা।
৪৮ ই জাহান্নামর বিচ্ছু অকল মরে না,
আর হিনর আগুইনও কুনুদিন নিভে না।
৪৯ “হুনো,
পরতেক মানুষউ আগুনিত নুনতা অইবো।
৫০ নুন তো ভালা জিনিস,
অইলে নুনে যুদি তার নুনতা গুন খুয়াইলায়,
তে তারে আর নুনতা বানাইল যাইবো নি?
তুমরা যারযির দিলর মাজে ই নুন কাইম রাখো,
আর একে-অইন্যে শান্তিয়ে বসত করো।”