বিদেশি ছুবেদারর গুলামর শিফা
 ইছায় তান বয়ান শেষ করিয়া মানষর গেছ থাকি বিদায় লইয়া কফরনাউম টাউনো গেলাগি।
 হিনো রোমান সিপাইর এক ছুবেদারর গুলাম বেমার পড়িয়া মরার পথি অইগেছিল,
ছুবেদার ছাবে ই গুলামরে খুব মায়া করতা।
 তাইন ইছার খবর হুনিয়া কয়জন ইহুদি মুরব্বিরে ইছার গেছে পাঠাইলা,
তান গুলামরে ভালা করতা সুপারিশর লাগি।
 মুরব্বি অকল আইয়া ইছারে মিনত-কাজ্জি করি কইলা,
“ছাব,
যে জনে আমরারে আপনার গেছে পাঠাইছইন তান গুলামর লাগি মিনত করতাম,
এইন আসলেও দয়া পাওয়ার লাখ।
 তাইন বিদেশি অইলেও আমরার ইহুদি জাতিরে খুব মায়া করইন।
আমরার মছিদ খানও তাইন বানাই দিছইন।”
 ইছা তারার লগে অইয়া রওয়ানা দিলা,
তাইন ছুবেদারর বাড়ির কান্দাত আইতেউ ছুবেদারে নিজর দুস্ত অকলরে পাঠাইয়া জানাইলা,
“হুজুরে আর কষ্ট করইন না যানু,
আপনার মতো জনে আমার বাড়িত তশরিফ আনরা,
আমি তো ইতার লাখ নায়।
 আপনার ছামনে উবানির যোইগ্যও আমি নায়,
এরদায় আমি আইরাম না।
তে আপনে খালি জবানদি কইলেউ,
আমার গুলামর বেমার শিফা অইযিবো।
 আপনে তো বুজরা,
আমি আমার কামান্ডারর হুকুমে চলি,
অউলা আমার সিপাই অকলও আমার হুকুমে চলইন।
আমি এরা একজনরে আও কইলে আয়,
যাও কইলে যায়,
আমার গুলামরে অউ কাম করো কইলে,
হে করে।
তে আপনেও অলা খালি মুখদি কইলেউ,
হক্কলতায় মানবো।”
 ইখান হুনিয়া ইছা এক্কেরে তাইজ্জুব বনিগেলা,
দলে দলে যতো মানুষ তান খরে অইয়া আওয়াত আছিল,
এরার বায় ফিরিয়া কইলা,
“আমি তুমরারে কইরাম,
ই ছুবেদার তো বিধর্মী রোমান মানুষ,
অইলে আমার বনি ইছরাইলর মাজেও তো অতো মজবুত ইমানদার আমি কুনুখানো দেখছি না।”
১০ হাছাউ ছুবেদারে যারারে পাঠাইছলা,
তারা ঘরো আইয়া দেখলা,
হি গুলামর বেমার কমিগেছে।
হজরত ইছায় মুর্দারে জিন্দা করলা
১১ থুড়া কয় দিন বাদে ইছায় তান সাগরিদ অকল আর আরো বউত মানুষ লইয়া নায়িন নামর এক গাউত আইলা।
১২ তাইন যেবলা হউ গাউত আইয়া হামাইরা,
অউ সময় মানষে খরারো করি এক মইয়ত লইয়া যাইরা।
ই মইয়ত আছিল এক ড়াড়ি বেটির একমাত্র পুয়া।
গাউর বউত মানুষ অউ খরারর লগে আছলা।
১৩ অউ ড়াড়ি বেটিরে দেখিয়া ইছার দিলো দয়া হামাইলো,
তাইন কইলা,
“ওগো,
কান্দিও না।”
১৪ কইয়া তাইন খরারর কান্দাত গিয়া খরারো ছইলা,
তেউ মইয়ত বইয়া নেওরা বেটাইন উবাই গেলা।
ইছায় কইলা,
“ও বেটা,
আমি কইরাম,
তুমি উঠো।”
১৫ তেউ হি মুর্দা বেটা উঠিয়া বইগেল,
বইয়া মাত-কথা মাতিলো।
ইছায় তারে তার মাʼর আতো সমজাই দিলা।
১৬ ইতা দেখিয়া হকলর ভিতরে ডর হামাইগেল।
তারা কইলা,
“ছুবহানাল্লা,
একজন মহান নবীয়ে আমরার মাজে তশরিফ আনছইন,
আল্লায় মেহেরবানি করিয়া তান বন্দা অকলর বায় চউখ ফিরাইছইন।”
১৭ ইছার অউ কেরামতির কথা আস্তা এহুদিয়া জিলাত আর আশ-পাশ হক্কল জাগাত মাশুর অইগেল।
হজরত ইছার দরবারো এহিয়া নবীর সাগরিদ
১৮ এহিয়া নবীর সাগরিদ অকল গিয়া অউ হক্কলতা এহিয়ারে জানাইলা।
১৯ অউ এহিয়ায় তান দুইজন সাগরিদরে ইছার গেছে পাঠাইলা।
তারা আইয়া ইছারে কইতা,
“হুজুরে কইছইন আমরা জানিয়া যাইতাম,
যেইন তশরিফ আনার কথা,
আপনেউ হেইন নি?
না আমরা আর কেউরর লাগি বার চাইতাম?”
২০ তেউ দুইও সাগরিদ আইয়া ইছারে কইলা,
“এহিয়া নবীয়ে আমরারে পাঠাইছইন,
আপনারে জিকাইতাম,
যেইন তশরিফ আনার কথা,
আপনেউ হেইন নি?
না আমরা আর কেউরর লাগি বার চাইতাম?”
২১ ঠিক অউ সময় ইছায় বউত মানষরে বেমার-আজার আর জিন-ভুতর আছর থাকি ভালা করলা।
বউত আন্দারেও দেখার খেমতা দিলা।
২২ অতা করিয়া হারলে এহিয়ার দুইও সাগরিদরে ইছায় কইলা,
“তুমরা যাওগি,
তুমরা অনো আইয়া নিজর চউখে যেতা দেখলায় আর হুনলায়,
অতা গিয়া এহিয়ারে জানাও।
তানরে কইও,
আন্দায়ও চউখে দেখরা,
লেংড়া অকলে আটিরা,
পচা-কুষ্ঠ বেমারি ভালা অইরা,
খালুয়ায়ও হুনরা,
মুর্দা মানুষ জিন্দা অইরা,
আর গরিব অকলর গেছেও আল্লাই খুশ-খবরি তবলিগ করা অর।
২৩ আর এরাউ কপালি মানুষ,
আমার বেয়াপারে যেরার দিলো কুনু বাধা না পায়।”
২৪ এহিয়ার সাগরিদ অকল গিয়া হারলে,
এহিয়ার বেয়াপারে ইছায় মানষরে কইলা,
“তুমরা মরুভুমিত কিতা দেখাত গেছলায়?
বাতাসে লড়ে-ছড়ে অতা খাগড়া-বন দেখাত গেছলায় নি?
২৫ না,
কিতা দেখাত গেছলায়?
সুন্দর কাপড় ফিন্নো কুনু মানষরে নি?
যেরা দামি দামি কাপড় ফিন্দিয়া জাক-জমক করে,
আর সুখির্তা দিন কাটায়,
তারা তো রাজবাড়িত থাকইন।
২৬ তে তুমরা কিতা দেখাত গেছলায়?
কুনু নবীরে দেখাত গেছলায় নি?
অয়,
হাছাউ আমি তুমরারে কইরাম,
ই এহিয়া তো খালি নবী নায়,
নবী থাকিও বড় জন।
২৭ এইন তো হউ জন,
যেন কথা আছমানি কিতাবো লেখা আছে,
 
হুনো,
তুমার আগে বেজিয়ার আমি
আমার পেগাম্বর,
এইন গিয়া ঠিক-ঠাক করবা
তুমার চলার পথ।
 
২৮ তে আমি তুমরারে কইরাম,
আস্তা দুনিয়ার কুনু আদমউ এহিয়া থাকি বড় নায়।
অইলে আল্লার বাদশাইর হকল থাকি হুরু জনও,
এহিয়া থাকি মহান।”
২৯ সমাজর হকল ধরনর আম মানষে আর ঘুষখুর খাজনা তুলরা অকলেও এহিয়ার তবলিগ হুনলা,
তারা তৌবার গোছল করিয়া আল্লা পাকরে হক ইনছাফকারি হিসাবে মানলা।
৩০ অইলে ফরিশি দলর মানষে আর মৌলানা অকলে এহিয়ার গেছে তৌবার গোছল না করিয়া,
তারার বেয়াপারে আল্লা পাকর যে খিয়াল আছিল,
ইটারে কুনু দাম দিলো না।
৩১ তেউ ইছায় হিরবার কইলা,
“কওছাইন,
অখন ই জমানার মানষরে আমি কিতার লগে তুলনা করতাম?
তারা কার লাখান?
৩২ তারা তো অমন হুরুতার লাখান,
যেতায় বাজারো বইয়া একে-অইন্যরে ডাকিয়া কয়,
 
বাশি তো বাজাইলাম দুস্ত তুমরার লাগিয়া,
তুমরা কেউ নাচিলায় না বাশি হুনিয়া।
মাত্বমর জারি-গান গাইলাম আমরা সবে,
কান্দিলায় না তুমরা কেউ মাত্বমর সুরে।
 
৩৩ তে এহিয়া নবী আইয়া হারি ভাত-রুটি আর আংগুরর শরবত না খাওয়ায়,
তুমরা কইলায় তানরে ভুতে ধরিলিছে।
৩৪ আর বিন-আদম আইয়া খানা-পিনা কররা দেখিয়া তুমরা কইরায়,
দেখরায় নি,
ই বেটা তো পেটুয়া আর মদখুর।
হে ঘুষখুর খাজনা তুলরা আর নাফরমান মানষর লগে দুস্তি করে।
৩৫ তা-ও আখল খাটাইয়া যেরা চলে,
তারার চাল-চলন থাকিউ পরমান মিলে,
আখলউ অইলো খাটি-নিখুত চিজ।”
খবিছ বেটির গুনা মাফ
৩৬ ফরিশি দলর একজন মানষে ইছারে তান বাড়িত খানির দাওত দিলা,
ইছা অউ বাড়িত গিয়া খানিত বইলা।
৩৭ অইলে অউ গাউত এক খবিছ বেটি আছিল।
ইছা অনো দাওতো আইছইন হুনিয়া হউ খবিছ বেটিয়ে দামি এক পাথরর বৈয়ামো করি আতর লইয়া অনো আইলো।
৩৮ আইয়া ইছার পিছন গালাবায় তান পাওর কান্দাত উবাইয়া,
কান্দিয়া চউখর পানিদি তান পাওর পাতা ভিজাইলিলো।
বাদে তাইর মাথার চুলদি পাও ফুছিয়া দিলো পাওর মাজে হুংগা দিতে দিতে আতর মাখাইলো।
৩৯ ইতা দেখিয়া ইছারে যেইন দাওত দিছলা,
এইন মনে মনে কইলা,
“ই বেটা কুনু নবী অইলে তো এমনেউ বুজলো অনে ই বেটি খেগু,
ইগু কত বড় খবিছ গুনাগার বেটি।”
৪০ ইছায় তারে কইলা,
“সাইমন,
তুমার লগে আমার কিছু কথা আছে।”
সাইমনে কইলা,
“কউক্কা হুজুর।”
৪১ ইছায় তানরে কইলা,
“মনে করো,
এক মাজনর গেছ থাকি দুইজন মানষে কিছু টেকা করজ নিছিল,
একজনে পাচশো,
আরক জনে পইঞ্চাশ দিনার।
৪২ তারার কেউররউ তাক্কত আছিল না ই টেকা ফিরত দেওয়া,
তেউ মাজনে এরা দুইও জনরে মাফ করি দিলাইলা।
অখন কওছাইন,
এরা কুন জনে মাজনরে বেশি ভালা পাইবো?”
৪৩ সাইমনে কইলা,
“আমার মনে কয়,
যার বেশি টেকা মাফ দেওয়া অইছে।”
ইছায় কইলা,
“তুমি ঠিকউ কইছো।”
৪৪ তেউ ইছায় অউ বেটির বায় চাইয়া কইলা,
“সাইমন,
অউ বেটিগুর বায় খিয়াল করো আর হুনো,
আমি তুমার ঘরো আইয়া হারলে তুমি তো আমারে পাও ধোয়ারও পানি দিছো না,
অইলে তাইর চউখর পানিদি আমার পাও ভিজাইয়া,
মাথার চুলদি ফুছিয়া দিছে।
৪৫ তুমি তো আমার লগে আইঞ্জা করি ধরিয়া হুংগা দিছো না,
অইলে দেখরায়নি আমি তুমার বাড়িত হামানির বাদ অনেউ তাই আমার পাওত হুংগা দেওয়াতউ আছে।
৪৬ তুমি কুনুজাত তাজিম করি আমারে আগুয়াই আনছো নি?
অইলে তাই আমার পাওত আতর ঢালিয়া তাজিম করছে।
৪৭ তে আমি তুমারে কইরাম,
তাই বেশি মায়া করছে করি বুজা যার,
তাই বড় গুনাগার অইলেও গুনার মাফি পাইছে।
যার থুড়া গুনা মাফ করা অয়,
হে থুড়া মায়া করে।”
৪৮ বাদে ইছায় বেটিরে কইলা,
“ওগো,
তুমার তামাম গুনা মাফ করা অইছে।”
৪৯ যারা ইছার লগে খানিত বইছলা তারা মনে মনে কইলা,
“এইন কে,
যেইন গুনাও মাফ করিলাইন?”
৫০ ইছায় হি বেটিরে কইলা,
“ও বেটি,
তুমার ইমানর বলেউ তুমি নাজাত পাইলায়,
অখন শান্তি অইয়া বাড়িত যাও।”