জুম্মাবারর বেয়াপারে তালিম
১২
১ এক জুম্মাবারে হজরত ইছা খেতর আইলেদি আটিয়া যাওয়াত আছলা।
তান সাগরিদ অকলর পেটো ভুক লাগায়,
তারা ধানর ছড়া ছিড়ি ছিড়ি খাওয়াত লাগলা।
২ ইতা দেখিয়া ফরিশি মজহবর মানষে ইছারে কইলা,
“আমরার শরিয়তে কয়,
জুম্মাবারে কুনু কাম করা জাইজ নায়,
তে আপনার সাগরিদ অকলে ধানর ছড়া ছিড়িরা কেনে?”
৩ ইছায় জুয়াপ দিলা,
“দাউদ নবী আর তান লগর মানষে একবার পেটর ভুকে যেতা করছলা,
ইতা আপনারা পড়ছইন না নি?
৪ তাইন আল্লার কাবা ঘরো হামাইয়া হউ পবিত্র রুটি খাইছলা,
ই রুটি খাওয়া তো তাইন আর তান লগর মানষর লাগি নাজাইজ,
ইতা খালি ইমাম ছাবর লাগি জাইজ আছিল।
৫ আর আপনারা তৌরাত শরিফো পড়ছইন না নি,
বায়তুল-মুকাদ্দছর ইমাম অকলে জুম্মাবারে জুম্মার দিনর নিয়ম ভাংলেও তারার কুনু গুনা অয় না।
৬ অইলে আমি আপনারারে কইরাম,
বায়তুল-মুকাদ্দছ থাকিও দামি এক মানুষ অনো আছইন।
৭ আল্লার কালামর অউ আয়াতর ভেদ যুদি আপনারা বুজতা,
যে আয়াতো আছে,
‘আমি দয়া দেখতাম চাই,
পশু-কুরবানি নায়।’
তে আপনারা নি-অপরাধিরে অপরাধি বানাইলা না অনে।
৮ হুনউক্কা,
জুম্মাবারর তামাম এখতিয়ার আমি বিন-আদমর আতো।”
হুকনা আত আলা বেমারির শিফা
৯ বাদে হজরত ইছা ইনথনে গিয়া অউ ফরিশি অকলর মছিদো হামাইলা।
১০ হনো অলা এক বেটা আছিল,
তার এক আত বেমারে হুকাই গেছে।
ইছার কুনু খুত বার করিয়া তানরে দুষি বানানির নিয়তে,
অউ মছিদর মানষে তানরে জিকাইলো,
“ছাব,
মুছার শরিয়ত মাফিক জুম্মাবারে কেউরর বেমার শিফা করা জাইজ নি?”
১১ ইছায় জুয়াপ দিলা,
“ধরউক্কা,
আপনারা একজনর এগু মেড়া যুদি জুম্মাবারে গাতর মাজে পড়িযায়,
তে অউ দিন ই মেড়ারে গাতো থাকি তুলতা নায় নি?
১২ আর মানষর দাম তো মেড়া থাকি বউত বেশি।
এরলাগি বুজা যায়,
জুম্মাবারেও নেক কাম করা জাইজ আছে।”
১৩ বাদে তাইন অউ হুকনা আত আলা বেটারে কইলা,
“তুমার আত খান বাড়াও।”
হে তার আত বাড়াইতেউ হুকনা আত অইন্য আতর লাখান পুরাপুর ভালা অইগেল।
১৪ বাদে হউ ফরিশি অকলে বারে গিয়া পরামিশ করলা,
ইছারে কিলা জানে মারা যায়।
হজরত ইছাউ আল্লার খাছ মায়ার জন
১৫ তারার অউ পরামিশর খবর ইছায় জানিলিলা,
এরলাগি তাইন হিনথনে হরি গেলা।
অউ সময় বউত মানুষ তান খরে খরে আইলা।
এরার মাজে যতো বেমারি আছলা,
তাইন এরা হকলরে ভালা করলা।
১৬ তাইন এরারে দড়াইয়া কইলা,
“খবরদার,
তুমরা আমার পরিচয় জাইর করিও না।”
১৭ ইতা অইছিল যাতে আগর আমলর নবী ইশায়ার মাজদি যেতা বাতাইল অইছিল,
অতা ফলিযায়।
তাইন কইছলা,
১৮ হুনো,
আমি আমার অউ গুলামরে পছন্দ করছি।
এইনউ আমার মায়ার জন,
তান উপরে আমি খুব খুশি।
এন উপরে আমি আমার রুহ দিমু,
হকল জাতির গেছে তাইন আমার হক বিচারর কথা জানাইবা।
১৯ তাইন কুনু তর্কা-তর্কি বা চিল্লা-চিল্লি করতা নায়,
পথে-ঘাটে কুনু মানষে তান আওয়াজ হুনতো নায়।
২০ হক বিচার কাইম অওয়ার আগ পর্যন্ত,
তাইন ছেছা নল-খাগড়া ভাংগিতা নায়,
আর মিট মিট করি জলরা লেমর ফিতাও লিমাইতা নায়।
২১ দুনিয়ার হকল জাতিয়ে তান উপরেউ ভরসা করবা।
হজরত ইছা আর জিনর বাদশা
২২ বাদে মানষে জিনর আছর আলা এক বেটারে ইছার গেছে লইয়া আইলো।
ই বেটা আছিল আন্দা আর বোবা।
তাইন অউ বেটারে ভালা করলা।
হে ভালা অইয়া মাত-কথা মাতিলো আর চউখেও দেখলো।
২৩ ইতা দেখিয়া হকল মানুষ তাইজ্জুব অইয়া কইলা,
“দাউদ নবীর খান্দানো যেইন জনম অওয়ার কথা,
এইনউ হেইন নি?”
২৪ ইখান হুনিয়া ফরিশি অকলে কইলা,
“ইগিয়ে তো জিনর বাদশা বেল-সবুলর বলে জিন্নাত ছাড়ায়।”
২৫ তারার মনর চিন্তা বুজিয়া ইছায় কইলা,
“কুনু দেশর ভিতরে দলাদলি লাগি গেলে,
ই দেশ তো বিনাশ অইযায়।
অউ লাখান কুনু পরিবারর মাজে বা কুনু টাউনো যেবলা দলাদলি লাগি যায়,
ইতাও আর টিকে না।
২৬ অউলা শয়তানে যুদি শয়তানরে খেদাই দেয়,
তে তো তার নিজর মাজেউ দলাদলি লাগি গেল।
তার রাজত্ব আর কিলা টিকবো?
২৭ আমি যুদি বেল-সবুলর বলে জিন্নাত ছাড়াই,
তে তুমরার মানষে কার বলে ছাড়ায়?
তুমরার মাতর বিচার তুমরার মানষেউ করবা।
২৮ অইলে আমি যুদি আল্লার রুহর বলে জিন্নাত ছাড়াই,
তে তো আল্লার বাদশাই তুমরার ধারো আইচ্ছে।
২৯ “কুনু বলআলা মানষর বাড়িত লুট-তরাজ করাত আইয়া,
পয়লা বলআলা জনরে না বান্দিলে,
কেমনে লুট-তরাজ করবো?
অইলে তারে বান্দিয়া হারলে লুট-পাট করতো পারবো।
৩০ “কেউ যুদি আমার পক্ষে না থাকে,
হে তো আমার বিপক্ষে।
যে জনে আমার লগে তুকায় না,
হে তো ছিতরায়।
৩১ আমি তুমরারে কইরাম,
মানষর তামাম নমুনার গুনা আর কুফুরির মাফি আছে,
অইলে পাক রুহর বেয়াপারে কুফুরি করলে,
ই কুফুরির কুনু মাফি মিলতো নায়।
৩২ আমি বিন-আদমর বিরুদ্ধে কেউ কুন্তা মাতিলেও হে মাফি পাইবো,
অইলে পাক রুহর বিরুদ্ধে মাতিলে তার কুনু মাফি নাই,
ই জিন্দেগিতও নাই,
আখেরোও নাই।
ফল দেখিয়া গাছ চিনা যায়
৩৩ “মনো রাখবা,
গাছ ভালা অইলে তার ফলও ভালা অয়,
আর গাছ বুরা অইলে তার ফলও বুরা অয়।
ফল দিয়াউ গাছ চিনা যায়।
৩৪ ও হাফর বাইচ্চাইন,
তুমরা নিজেউ তো খারাপ,
তে তুমরার মুখ থনে ভালা বুলি কেমনে বার অইবো?
মানষর দিল যেতাদি ভরা,
মুখ থাকি তো অতাউ বারয়।
৩৫ ভালা মানষর দিলর ভিতরর ভালাই থনে ভালা বুলি বারয়,
আর বাদ মানষর দিলর বুরাই থনে বাদ বুলি বারয়।
৩৬ অইলে আমি তুমরারে কইরাম,
যে মানষে আজে-বাজে বের-বেরি করে,
হাশরর ময়দানো তার পরতেক মাতর হিসাব দিতে অইবো।
৩৭ তুমার জবানেউ তুমারে দুষি বানাইবো,
আর অউ জবানেউ তুমারে নির্দুষিও বানাইবো।”
৩৮ বাদে কয়জন মৌলানা আর ফরিশিয়ে ইছারে কইলা,
“হুজুর,
আমরা আপনার একখান কেরামতি দেখতাম চাই।”
৩৯ ইছায় জুয়াপ দিলা,
“ই জমানার নাফরমান আর বেইমান অকলে খালি কেরামতি দেখতা চাইন,
অইলে ইউনুছ নবীর কেরামতি ছাড়া দুছরা কুনু কেরামতি তারারে দেখাইল অইতো নায়।
৪০ ইউনুছ নবী যেলা মাছর পেটো তিন দিন,
তিন রাইত আছলা,
আমি বিন-আদমও অউলা তিন দিন,
তিন রাইত মাটির তলে রইমু।
৪১ কিয়ামতর দিন হউ নিনভ টাউনর মুর্দা অকল উঠিয়া হারি,
ই জমানার মানষর দুষ জাইর করবা।
কারন ইউনুছ নবীর তবলিগ হুনিয়া তারা তৌবা করছিলা।
অইলে অখন তো ইউনুছ থাকিও আরো মহান একজন ইনো আছইন,
তা-ও মানষে তৌবা করের না।
৪২ রোজ কিয়ামতর দিন দউকনর দেশর রানী উঠিয়া আইয়া অউ জমানার মানষর দুষ জাইর করবা।
কারন বাদশা সুলাইমানর আখলর কথা হুনার খিয়ালে তাইন দুনিয়ার হেশ মাথা থাকি আইছলা।
অইলে অখন তো সুলাইমান থাকিও আরো মহান একজন অনো আছইন।
৪৩ “হুনো,
কুনু ভুতে যেবলা মানষর লগ ছাড়িয়া যায়গি,
অউ সময় হে আরামে থাকার খিয়ালে হকল হুকনা জাগাত আশ্রয় তুকায়।
অইলে আরামর জাগা না পাইয়া বাদে কয়,
৪৪ ধুর,
আমার আগর ঘরউ ভালা,
যেগুর গেছ থাকি আইছি,
অগুর গেছেউ ফিরিয়া যাইগি।
ফিরিয়া আইয়া দেখে ই ঘরখান খালি,
ছাফ-ছফা আর হাজাইল-পাড়াইল।
৪৫ দেখিয়া হে গিয়া তার থনে আরো খারাপ সাতগু ভুত লগে লইয়া আয়,
আইয়া অউ ঘরো রয়।
এরদায় অউ মানষর দশা পয়লা থাকি হেশে আরো বেশি খারাপ অয়।
তে ই জমানার নাফরমান অকলর দশাও অলাখান অইবো।”
হজরত ইছার মায়ার মানুষ কে?
৪৬ ইছায় যেবলা মানষর লগে মাতিরা,
অউ সময় তান মা আর ভাইয়াইন বারে আইয়া,
তান লগে দেখা করার লাগি বার চাওয়াত আছলা।
৪৭ তেউ একজন মানষে আইয়া তানরে কইলো,
“হুজুর,
আপনার মা আর ভাইয়াইন আপনার লগে মাতার লাগি বারে উবাই রইছইন।”