বেহেস্তি বাদশা কেমনে আইবা
২৫
 এরবাদে ইছায় কইলা,
“বেহেস্তি বাদশাই অইলো অলা দশগু পুড়ির লাখান,
যেতা পুড়িন্তে বিয়ার দামান্দরে আগুয়াইয়া আনার লাগি লেম-লেমটন লইয়া বার অইলো।
 এরার মাজে পাচ জন আছিল আখলদার আর পাচ জন আছিল বেআখল।
 বেআখল পুড়িন্তে খালি লেম লইয়া বার অইলো,
লেমর কুনু তেল নিলো না।
 অইলে আখলদার পুড়িন্তে লেমর লগে ফিফাত করি তেলও নিলো।
 দামান্দ আইতে দেরি অওয়ায় তারা হকলউ উংগাইতে উংগাইতে ঘুমাই গেল।
 “বাদে আধা-রাইতকুর বালা চিল্লানি হুনা গেল,
‘দামান্দ আইচ্ছইন,
দামান্দ আইচ্ছইন,
জলদি বারও।’
 চিল্লানি হুনিয়া অউ পুড়িন উঠিয়া লেম-লেমটন ঠিক করাত লাগলা।
 হউ বেআখল পুড়িন্তে আখলদার পুড়িনরে কইলা,
‘আমরারে থুড়া তেল দেও না,
আমরার লেম লিমিযারগি।’
 তারা কইলা,
‘আমরার গেছে যেতা তেল আছে,
ইতা তো আমরারউ লাগবো।
তে তুমরা দোকান থাকি তেল আনাইলাও।’
১০ অউ বেআখল পুড়িন তেল আনাত গিয়া হারলেউ দামান্দ আইল্লা।
অউ সময় আখলদার অউ পুড়িন জুইত আছলা,
তারা দামান্দরে লইয়া বিয়া বাড়িত হামাইলো।
তারা হামানির বাদেউ দুয়ার বন্দ করা অইলো।
১১ বাদে অউ বেআখল পুড়িন্তে আইয়া দুয়ার বন্দ দেখিয়া কইলা,
হুনরা নি,
দুয়ার খান খুলউক্কা।
১২ দামান্দে জুয়াপ দিলা,
আমি হাছাউ কইরাম,
আমি তো তুমরারে চিনি না।”
১৩ অউ কিচ্ছার বাদে ইছায় কইলা,
“এরদায় তুমরা হুশিয়ার রইও,
হি দিন আর হি সময়র কথা তো কেউরর জানা নাই।”
তিন চাকরর কিচ্ছা
১৪ তাইন আরও কইলা,
“বেহেস্তি বাদশাই অলা একজন মানষর লাখান, এইন বিদেশ যাওয়ার বালা তান চাকর অকলর আতো আস্তা সম্পত্তির ভার সমজাই দিলা।
১৫ এরার যোইগ্যতা মাফিক তাইন একজনরে পাচ আজার টেকা,
দুছরা জনরে দুই আজার আর আরক জনরে এক আজার টেকা দিলা।
১৬ পাচ আজার টেকা যে পাইছিল,
হে অউ টেকাদি কারবার করিয়া আরো পাচ আজার লাভ করলো।
১৭ দুই আজার টেকা যে পাইছিল,
হে-ও আরো দুই আজার লাভ করলো।
১৮ অইলে এক আজার টেকা যে পাইছিল,
হে তার মালিকর ই টেকা কামো না লাগাইয়া গাত খুদিয়া মাটির তলে থইলো।
১৯ “বউত দিন বাদে হউ মালিক দেশো আইয়া তারার হিসাব-নিকাশ চাইলা।
২০ তেউ পাচ আজার টেকা যে পাইছিল,
হে আরো পাচ আজার লইয়া আইয়া মালিকরে কইলো,
‘ছাব,
আপনে আমারে পাচ আজার টেকা দিছলা,
অউ টেকাদি আমি আরো পাচ আজার লাভ করছি।’
২১ ইখান হুনিয়া মালিকে কইলা,
‘সাব্বাস,
তুমি খুব হক-হালালি মানুষ।
তুমি হুরু-মুরু বেয়াপারেউ হক-হালাল রইছো,
এরলাগি আমি তুমারে আরো বউত বড় দায়িত্ব দিমু।
আও,
আমার খুশির ভাগি অও।’
২২ বাদে দুই আজার টেকা যে পাইছিল,
হে আইয়া কইলো,
‘ছাব,
আপনে আমারে দুই আজার টেকা দিছলা।
আমি তো আরো দুই আজার লাভ করছি।’
২৩ তেউ মালিকে কইলা,
‘সাব্বাস,
তুমি খুব হক-হালালি মানুষ।
তুমি থুড়া বেয়াপারেউ হক-হালাল রইছো,
এরলাগি আমি তুমারে আরো বউত বড় দায়িত্ব দিমু।
আও,
আমার খুশির ভাগি অও।’
২৪ অইলে এক আজার টেকা যারে দিছলা,
হে আইয়া কইলো,
‘ছাব,
আমি জানি আপনে খুব কড়া মানুষ।
আপনে খেত না করিয়াও ধান কাটইন আর বাইন না দিলেও আলি হুরইন।
২৫ এরদায় আমি ডরাইয়া আপনার টেকা মাটির তলে লুকাইয়া থইছলাম।
অউ নেউক্কা আপনার টেকা।’
২৬ মালিকে কইলা,
‘হায়রে খবিছ,
তুইন তো কুড়িয়া।
তুই যুদি ইখান মনো করলে,
আমি খেত না করলেও ধান কাটি আর বাইন না দিলেও আলি হুরি,
২৭ তে আমার টেকা তুই বেপারির গেছে দিলে না কেনে?
তে তো আমি আইয়া মুল টেকার লগে কিছু লাভ পাইলাম অনে।’
২৮ বাদে তাইন অইন্য চাকর অকলরে কইলা,
‘তুমরা অগুর গেছ থাকি অউ টেকা নিয়া,
দশ আজার যার গেছে আছে তারে দেও।
২৯ হুনো,
যার আছে তারে আরো দেওয়া অইবো,
তার আরো বাড়িবো।
অইলে যার নাই,
তার যেতা আছে অতাও কাড়িয়া নেওয়া অইবো।
৩০ অউ বজ্জাত চাকররে নিয়া তুমরা আন্দাইর গাতো ফালাই দেও।
হউ গাতো মানষে কান্দা-কাটি করবো আর জালা-যন্ত্রনায় দাত কিড়িমিড়ি দিবো।’
আখেরাতর বিচারর বয়ান
৩১ “বিন-আদমে যেবলা ফিরিস্তা অকলরে লইয়া নিজর মহিমায় হিরবার আইবা,
আইয়া নিজর বাদশাইর গদিত বইবা।
৩২ অউ সময় দুনিয়ার তামাম জাতির মানষরে তান ছামনে আনা অইবো।
রাখালে যেলা মেড়া আর ছাগলরে আলাদা করে,
তাইনও অউলা হকল মানষরে আলগাইয়া দুই ভাগ করবা।
৩৩ তান ডাইন গালাবায় মেড়া আর বাউ গালাবায় ছাগলরে রাখবা।
৩৪ “এরবাদে বাদশায় তান ডাইন গালার মানষরে কইবা,
‘তুমরা যারা আমার বাতুনি বাফর রহম পাইছো,
তুমরা আও।
আর দুনিয়ার পয়লা থাকি তুমরার লাগি যে বাদশাই তিয়ার করি রাখা অইছে,
অউ বাদশাইর দখল সমজিয়া নেও।
৩৫ মনো আছে নি,
আমার যেবলা পেটো ভুক লাগছিল,
তুমরা আমারে খানি দিছলায়,
পিয়াছর সময় পানি দিছলায়,
আর মুছাফির হালতে আমারে আশ্রয় দিছলায়।
৩৬ আমি যেবলা উদলা আছলাম,
তুমরা কাপড় দিছলায়,
বেমারর সময় খেজমত করছলায়,
আর জেল খানাত আমারে দেখাত গেছলায়।’
৩৭ “অউ সময় হউ আল্লাওয়ালা মানষে কইবা,
‘মালিক,
আপনার ভুক লাগায় আমরা কুন সময় আপনারে খাওয়াইলাম?
কুন সময় আপনারে পানি দিলাম?
৩৮ আর কুন সময় মুছাফির হালতে আপনারে আশ্রয় দিলাম,
খালি গা দেখিয়া কুন সময় কাপড় দিলাম?
৩৯ আর কুন সময়উ বা বেমারি হালতো আপনার খেজমত করলাম,
বা জেল খানাত দেখাত গেলাম?’
৪০ অউ সময় বাদশায় তারারে কইবা,
‘আমি হক কথা কইরাম,
আমার অউ হুরু-মুরু একজন মানষর লাগি তুমরা যেবলা ইতা করছো,
এর মানি আমারেউ করছো।’
৪১ “বাদে বাদশায় তান বাউ গালার মানষরে কইবা,
‘ও লান্নতির দল,
আমার ছামন থাকি বাগো।
ইবলিছ-শয়তান আর তার চামছা জিন্নাত অকলর লাগি দোজখর যে আগুইন তিয়ার করা অইছে,
হনো যাও।
৪২ আমার পেটো ভুকর কালো তুমরা আমারে খাওয়াইছো না,
পিয়াছর সময় পানি দিছো না।
৪৩ আমার মুছাফির হালতো রইবার আশ্রয় দিছো না,
আমি যেবলা উদলা আছলাম,
কাপড় দিছো না,
বেমারর সময় চাইছো না,
আমারে দেখার লাগি জেলখানাতও গেছো না।’
৪৪ “অউ সময় তারা কইবা,
‘হুজুর,
আমরা কুন সময় ইতা করলাম?
আপনারে ভুকাসি,
পিয়াছি,
মুছাফির,
উদলা গতর,
বেমারি আর জেল খানাত দেখিয়াও সাইয্য করলাম না?’
৪৫ বাদশায় তারারে কইবা,
‘আমি হক কথা কইরাম,
আমার অউ হুরু-মুরু একজন মানষর লাগিউ তুমরা যেবলা ইতা করছো না,
এর মানি আমারেউ করছো না।’”
৪৬ হেশে ইছায় কইলা,
“অউ নাফরমান অকলে আখেরাতো চিরকাল সাজা পাইবা,
অইলে আল্লাওয়ালা মানষে আখেরি জিন্দেগি পাইবা।”