হজরত ইছার দুখ-কষ্ট আর মউত (২২:১-২৩:৫৬)
হজরত ইছা আল-মসীরে কাতল করার ফন্দি
২২
১ ইহুদি অকলর খামির ছাড়া রুটির ইদ কাছাত আইলো,
অউ ইদর নাম আজাদি ইদ।
২ ইবায় মৌলানা আর বড় ইমাম অকলে পরামিশ করলা,
হজরত ইছারে আম মানষর গেছ থাকি লুকাইয়া কিলা কাতল করতা।
তারা আম মানষরে খুব ডরাইতা।
ইহুদা ইস্কারিয়াতর বেইমানি
৩ অউ সময় তান বারোজন সাহাবির মাজর একজন,
এন নাম ইহুদা ইস্কারিয়াত,
এন ভিতরে শয়তান হামাইলো।
৪ এইন ইছারে ধরাইয়া দেওয়ার লাগি লুকাইয়া বায়তুল-মুকাদ্দছো গেলা।
গিয়া হনর দারোগা আর বড় ইমাম অকলর লগে পরামিশ করলা,
কুন নমুনায় ইছারে তারার আতো ধরাই দেওয়া যায়।
৫ তেউ ইমাম অকল খুব খুশি অইয়া ওয়াদা করলা,
তানরে ধরাইয়া দিলে তারে বখশিশ দিবা।
৬ এতে ইহুদাও রাজি অইয়া মানষর আফরখে,
তানরে ধরাই দেওয়ার সুযোগ তুকানিত রইলো।
হজরত ইছার আখেরি মেজবানি
৭ বাদে আজাদি ইদ আইলো,
অউ ইদর দিন মেড়ার বাইচ্চা কুরবানি দেওয়া অয়।
৮ তেউ ইছায় সাহাবি পিতর আর হান্নানরে হুকুম দিলা,
“তুমরা গিয়া আমরার লাগি ইদর খানি তিয়ার করো,
আমরা হকল আইয়া একলগে খাইমু।”
৯ এরা জিকাইলা,
“হুজুর,
আপনার খিয়াল কিতা,
আমরা কুনানো গিয়া খানা তিয়ার করতাম?”
১০ তাইন কইলা,
“হুনো,
টাউনো হামাইয়া হারলে তুমরা দেখবায়,
এক বেটায় পানির খৈলা ভরিয়া লইয়া যাইরা।
তুমরা এন খরে খরে যাইও,
গিয়া এইন যে ঘরো হামাইবা,
১১ হউ ঘরর মালিকরে কইও,
হুজুরে জিকাইছইন,
তান সাহাবি অকলরে লইয়া আজাদি ইদর খানি যে ঘরো খাইতা,
ই মুছাফির খানা কুয়াই?
১২ হে তুমরারে উপরর তালাত হাজাইল-পাড়াইল বড় এক কুঠা দেখাইয়া দিবো।
হনো গিয়া তুমরা রান্দা-বাড়া করিও।”
১৩ হাছাউ তারা গিয়া তান কথা মাফিক হকলতা পাইলা,
পাইয়া আজাদি ইদর খানিও তিয়ার করলা।
১৪ বাদে সময় আইলে ইছায় তান বারোজন সাহাবি লইয়া খানিত বইলা।
১৫ বইয়া কইলা,
“আমার বড় খিয়াল আছিল মছিবতর মুখামুখি অইবার আগে,
আখেরি ইদর খানি খান তুমরারে লইয়া খাইতাম।
১৬ আমি তুমরারে কইরাম,
আল্লার বাদশাইর আসল মর্জি-মুনশা পুরাপুর হাছিল না অওয়া পর্যন্ত,
আমি আর কুনু ইদর খানি খাইতাম নায়।”
১৭ বাদে তাইন শরবতর পিয়ালা লইয়া আল্লার শুকরিয়া জানাইয়া কইলা,
“অউ ফুটাইন তুমরা বাটিয়া খাইলাও।
১৮ আর হুনো,
আমি তুমরারে কইরাম,
আল্লার বাদশাই না আওয়া পর্যন্ত,
আমি আর আংগুরর কুনু শরবত খাইতাম নায়।”
১৯ এরবাদে রুটি আতো লইয়া আল্লার শুকরিয়া জানাইলা।
রুটি টুকরাইয়া সাহাবি অকলরে দিলা,
কইলা,
“মনো করিও ইটা আমার কায়া,
অউ কায়া আমি তুমরার লাগি সপি দিমু।
আমারে মনো করার লাগি তুমিতাইনও অলা করিও।”
২০ খাওয়ার বাদে শরবতর পিয়ালা আতো লইয়া কইলা,
“আমার লউর জরিয়ায় আল্লার লগে মানষর মিলনর যে নয়া উছিলা নাজিল অর,
অউ পিয়ালা অইলো এর নিশানা।
আমার অউ লউ তুমরার নাজাতর লাগি দিমু।
২১ তে দেখরায় নি!
আমারে যেগিয়ে ধরাইয়া দিবো,
হে অখন আমার লগে অউ দস্তারখানাত বইয়া খার।
২২ আল্লায় যেলা হুকুম করছইন,
আমি বিন-আদমর মউত তো অলাউ অইবো।
হায়রে হায়!
লান্নতি হউ আদম,
যেগিয়ে আমারে ধরাইয়া দিবো।”
২৩ সাহাবি অকলে একে-অইন্যরে জিকাইলা,
“তে আমরার মাজর কুন মানষে ইলা কাম করব?”
কুন জন হকল থাকি বড়
২৪ অউ সময় সাহাবি অকলর মাজে কুন জন হকল থাকি বড়,
অতা লইয়া তারার মাজে তর্কা-তর্কি লাগিগেল।
২৫ তেউ ইছায় তারারে কইলা,
“বিধর্মী দেশর রাজা অকলে তারার প্রজার উপরে মুনিবগিরি দেখাইন।
তারার জমিদাররে কওয়া অয় জনগনর দুস্ত।
২৬ অইলে তুমরা ইলান অইও না।
তুমরার মাজে যেইন হকল থাকি বড়,
এইন হকলর হুরু অউক।
আর যেইন নেতা,
এইন খাদিমদারর লাখান অউক।
২৭ কওছাইন কুন জন বড়?
যেইন খানা খাইন,
না যে খাদিমদারি করে?
যেইন খানা খাইন এইনউ নায় নি?
তে আমি নিজেউ তো তুমরার খাদিমদারি করিয়ার।
২৮ “হুনো,
আমার হকল বালা-মছিবতো তুমরা আমার লগে লগে আছলায়।
২৯ আর আমার বাতুনি বাফে আমারে যেলা গদি আর খেমতা দান করছইন,
আমিও অউলা তুমরারে খেমতা দান কররাম।
৩০ অউ খেমতা পাইয়া,
তুমরাও আমার বাদশাইত দাখিল অইয়া আমার লগে বইয়া খানা-পিনা খাইবায়,
আমার লগে গদিত বইয়া বনি ইছরাইলর বারো গুষ্টির বিচার-আদালত করবায়।
হজরত পিতরর বেয়াপারে আগাম খবর
৩১ “সাইমন,
সাইমন,
হুনো,
ধান-চাউল যেলা চাইনদি চানিয়াইন,
শয়তানেও তুমরারে অলা চানিয়াইতো চাইছে।
৩২ অইলে তুমার লাগি আমি আরজ করছি,
তুমার ইমান যানু কমজুর না অয়।
তে তুমি একবার গেলেগিও তৌবা করিয়া যেবলা ফিরত আইবায়,
অউ সময় তুমার অউ ভাইয়াইন্তর ইমানি বলও মজবুত করিও।”
৩৩ পিতরে কইলা,
“হুজুর,
আমি তো আপনার লগে অইয়া জেলো যাইতে,
বা জান দিতেও তিয়ার আছি।”
৩৪ তাইন কইলা,
“পিতর,
আমি তুমারে কইরাম,
আইজ পতাবালা মুরগায় বাং দিবার আগেউ,
তুমি তিন-তিনবার কইবায়,
তুমি আমারে চিনো না।”
৩৫ বাদে তান সাহাবি অকলরে জিকাইলা,
“কওছাইন,
আমি যেবলা তুমরারে টেকার থলি,
গাইট-বুছকি ইতা কুন্তা না দিয়া খালি পাওয়ে পাঠাইছলাম,
হি সময় তুমরার কুন্তার অভাব অইছিল নি?”
তারা কইলা,
“জি না,
কুনু অভাব অইছে না।”
৩৬ ইছায় কইলা,
“তে অখন আমি কই,
অখন যার টেকার থলি বা গাইট-বুছকি আছে,
হে অতা লগে রাখউক।
যার তলোয়ার নাই,
হে তার চাদ্দর বেচিয়া তলোয়ার খরিদ করউক।
৩৭ পাক কালামর আয়াতো তো লেখা আছে,
তানরে নাফরমান অকলর কাতারো মিলাইল অইবো।
ই আয়াত তো আমার উপর দিয়াউ ফলিবো।
আমার বেয়াপারে যততা লেখা আছে,
ইতা হক্কলতা অখন ফলিযার।”
৩৮ তেউ সাহাবি অকলে কইলা,
“হুজুর দেখউক্কা,
ইনো দুখান তলোয়ার আছে।”
তাইন কইলা,
“অতাউ তো বউত।”
জয়তুন পাড়ো হজরত ইছার তকলিফ
৩৯ খানা-পিনার বাদে ইছা বার অইয়া বরাবরকুর লাখান হউ জয়তুন পাড়ো গেলা,
সাহাবি অকলও তান খরে খরে গেলা।
৪০ হনো গিয়া হারলে ইছায় তারারে কইলা,
“তুমরা দোয়া করো,
যাতে কুনু পরিক্ষাত না পড়ো।”
৪১ কইয়া হারি সাহাবি অকলর গেছ থাকি চাইর নল পরিমান দুরই গিয়া,
জানু পাতিয়া দোয়া করাত বইলা।
৪২ তাইন কইলা,
“বেহেস্তি বাবা,
তুমার ইচ্ছা অইলে মছিবতর ই পিয়ালাটা আমার গেছ থনে হরাইলাও।
অইলে আমার ইচ্ছায় নায়,
তুমার ইচ্ছায়উ অউক।”
৪৩ তেউ বেহেস্ত থাকি এক ফিরিস্তা আইয়া ইছারে দরশন দিয়া তান বল বাড়াইলা।
৪৪ বাদে তাইন মনর দুখে পেরেশান বনিয়া আরো কাতর অইয়া দোয়া করলা।
এরলাগি তান গতরর ঘাম লউর ফুটার লাখান মাটিত পড়তো লাগলো।
৪৫ দোয়া শেষ করিয়া সাহাবি অকলর কান্দাত আইয়া দেখলা,
মনর দুখে কাতর অইয়া তারা ঘুমাই গেছইন।
৪৬ দেখিয়া তারারে কইলা,
“ঘুমাইরায় কেনে?
উঠিয়া দোয়া করো,
যাতে পরিক্ষাত না পড়ো।”
৪৭ ইছা মাতো রইছইন,
অউ সময় আখতাউ হিকানো বউত মানুষ আইলা।
এরার হক্কলর আগে আছিল ইহুদা,
হে ইছার বারোজন সাহাবির মাজর একজন।
ইহুদায় তানরে হুংগা দিবার লাগি কান্দাত আইলো।
৪৮ ইছায় তারে কইলা,
“ইহুদা,
আমি বিন-আদমরে হুংগা দিয়া ধরাই দিরায় নি?”
৪৯ অউ সময় ইছার কান্দাত যেরা আছলা,
তারা বুজিলিলা কিতা অর।
বুজিয়া কইলা,
“হুজুর,
অতারে আমরার তলোয়ারদি মারতাম নি?”
৫০ কইয়াউ এক সাহাবিয়ে তলোয়ারদি ছেদ মারি পরধান ইমামর গুলামর ডাইনর কান কাটিলিলা।
৫১ অইলে ইছায় কইলা,
“বাদ দেও,
আর মারিও না।”
অখান কইয়া তাইন হি গুলামর কান আতাই দিয়া তারে ভালা করিল্লা।
৫২ হজরত ইছারে আটক করাত যতো বড় ইমাম,
বায়তুল-মুকাদ্দছর দারোগা,
আর মুরব্বি অকল আইছলা,
ইছায় তারারে জিকাইলা,
“মানষে চুর-ডাকাইত ধরতে যেলা লাঠি-ছুলফি লইয়া যাইন,
তুমরা আমারে ধরাত অউলা আইছো নি?
৫৩ আমি তো পরতেক দিনউ বায়তুল-মুকাদ্দছো তুমরার ছামনে আছলাম,
হি সময় আমারে ধরলায় না কেনে?
ও,
অখন নিচয় তুমরার সময়,
আন্দাইরর রাজত্ব চালু অইছে।”
হজরত পিতরর অস্বীকার
৫৪ দুশমনর দলে ইছারে আটক করিয়া পরধান ইমামর বাড়িত লইয়া গেলাগি।
সাহাবি পিতর দুরই হরি হরি ইছার খরে অইয়া গেলা।
৫৫ উঠানর মাজে বাক্কা মানষে আগুইন ধরাইয়া থাবানিত লাগলা,
পিতরও অনো আইয়া শরিক অইলা।
৫৬ অউ সময় এক বান্দি বেটিয়ে আগুনির ফরর মাজে পিতররে দেখিয়া ভালা করি চাইয়া কইলো,
“অউ বেটাও হগুর লগে আছিল।”
৫৭ পিতরে কইলা,
“না বেটি,
আমি এরে চিনিউ না।”
৫৮ থুড়া বাদে আরক জনে পিতররে দেখিয়া কইলো,
“তুমিও অতার লগর একজন।”
তাইন কইলা,
“না-বা,
আমি নায়।”
৫৯ আরো একদ ঘন্টা বাদে আরক জনে বড় গলায় কইলো,
“অয়,
অয়,
অগুও এর লগে আছিল,
এ-ও তো গালিলর মানুষ।”
৬০ তাইন কইলা,
“দুর বেটা!
তুমি ইতা কিতা মাতো,
কুন্তা বুজি না।”
পিতরে অতা কইরা,
এরমাজে আখতাউ মুরগায় বাং দিলাইলো।
৬১ তেউ ইছায় মুখ ফিরাইয়া পিতরর বায় চাইলা।
চাইতেউ পিতরর মনো অইগেলগি,
হুজুরে তো আগেউ কইছলা,
“আইজ পতাবালা মুরগায় বাং দিবার আগেউ,
তুমি তিন বার কইবায়,
তুমি আমারে চিনো না।”
৬২ তেউ পিতর বারে গিয়া খুব কান্দন কান্দিলা।
দেশর ফতোয়া কমিটির ছামনে হজরত ইছা
৬৩ হজরত ইছারে ধরিয়া আনিয়া পারাদার অকলে তানরে ঠাট্টা-মশকরা আর মাইর-ধইর করলো।
৬৪ তান চউখ বান্দিয়া কইলো,
“হই,
তুই বুলে নবী,
তে অখন গাইবি কওছাইন,
তরে খেগিয়ে মারলো?”
৬৫ অউলা আরো বউততা কইয়া তানরে বেইজ্জত করলো।
৬৬ রাইত পুয়ানির বাদে দেশর ফতোয়া কমিটির মুরব্বিয়ান,
বড় ইমাম আর আলিম অকল দলা অইলা,
আর ইছারে তারার ছামনে আনাইয়া কইলা,
৬৭ “তুমি যুদি আল্লার ওয়াদা করা হউ আল-মসী অও,
তে আমরারে কও।”
ইছায় কইলা,
“আমি কইলেও তো তুমিতাইন একিন করতায় নায়।
৬৮ কুন্তা জিকাইলেও জুয়াপ দিতায় নায়।
৬৯ অইলে আমি বিন-আদম অখন থাকিউ আরশে-আজিমো আল্লার ডাইনর কুরছিত বইমু।”
৭০ তেউ হক্কলে জিকাইলো,
“তে তুমিউ কিতা আল্লার খাছ মায়ার জন ইবনুল্লা নি?”
তাইন কইলা,
“অয়,
তুমিতাইনউ তো কইরায়,
আমিউ হেইন।”
৭১ তেউ তারা হক্কলে কইলো,
“তে আর সায়-সাক্ষিদি কিতা করতায়?
আমরা নিজর কানেউ তো তার জবানবন্দি হুনলাম।”