রোমান হাকিমর ছামনে হজরত ইছা
২৩
 তারা হকলে একলগে দল বান্দিয়া ইছারে লইয়া রোমান হাকিম পিলাতর গেছে গেলা।
 গিয়া ইছার বিপক্ষে নালিশ দিলা।
তারা কইলা,
“আমরা দেখছি,
অউ বেটায় আমরার দেশর মানষরে বিগড়াই দের,
হে মানষরে নিষেধ করে আমরার বাদশা কৈছররে খাজনা দিতা না।
হে নিজেউ বুলে আল-মসী নামর এক বাদশা।”
 পিলাতে ইছারে জিকাইলা,
“তুমি কিতা ইহুদি অকলর বাদশা নি?”
তাইন জুয়াপ দিলা,
“আপনে যেলা কইন,
অলাউ।”
 তেউ পিলাতে বড় ইমাম আর হকল মানষরে কইলা,
“আমি তো ই আসামির কুনু দুষউ পাইরাম না।”
 অইলে তারা জিদ করিয়া কইলো,
“ই বেটায় গালিল জিলা থাকি আরম্ভ করিয়া আস্তা এহুদিয়া জিলার মানষরে বিগড়াইয়া,
অখন আমরার অনো আইয়াও হক্কলরে বিগড়াইলার।”
 ইখান হুনিয়া পিলাতে জিকাইলা,
“হে কিতা গালিলর মানুষ নি?”
 হাকিমে যেবলা হুনলা,
ইছার বাড়ি অইলো রাজা হেরোদর অধীনর গালিল জিলাত,
হুনিয়া তাইন ইছারে হেরোদর গেছে পাঠাই দিলা,
কারন হেরোদও অউ সময় জেরুজালেমো আছলা।
 ইছারে দেখিয়া হেরোদ খুব খুশি অইলা।
তাইন বউত দিন ধরি ইছারে দেখতা চাইরা।
আগে তাইন ইছার বেয়াপারে বউততা হুনছিলা,
এরলাগি তান মনর আশা আছিল,
ইছায় তানরে কুনু কেরামতি-মোজেজা দেখাইবা।
 তাইন ইছারে বউত নমুনার প্রশ্ন করলা,
অইলে ইছায় ইতার কুনু জুয়াপ দিলা না।
১০ আদালতো উবাইয়াও বড় ইমাম আর মৌলানা অকলে খুব গরম অইয়া ইছার বিপক্ষে নালিশ হুনানিত রইলা।
১১ এরলগে হেরোদে আর তান সিপাই অকলেও ইছারে ঠাট্টা-মশকরা,
বেইজ্জতি করলা,
হেশ-মেশ তানরে বাদশাই চকচকা লেবাছ ফিন্দাইয়া হাকিম পিলাতর গেছে ফিরত পাঠাই দিলা।
১২ এর আগে রাজা হেরোদ আর হাকিম পিলাতর মাজে দুশমনি আছিল,
অইলে অউ দিন থাকিউ তারার মাজে দুস্তি অইগেল।
১৩ বাদে পিলাতে বড় ইমাম,
মুরব্বি অকল,
আর আম মানষরে একখানো দলা করিয়া,
১৪ কইলা,
“অউ আসামিরে তুমরা ধরিয়া আনিয়া আমার গেছে নালিশ দিলায়,
হে হক্কল মানষরে বিগড়াইলার,
অইলে আমি তো তুমরার ছামনেউ তারে জেরা করলাম,
তে তুমরা যেলা নালিশ দিছো,
তার মাজে তো ইলা কুনু দুষউ পাইলাম না।
১৫ আর রাজা হেরোদেও নিচয় তার কুনু দুষ পাইছইন না,
এরলাগিউ তাইন তারে আমার গেছে ফিরত পাঠাইছইন।
আমি দেখরাম,
মউতর সাজার জুকা কুনু দুষউ হে করছে না।
১৬ তে আমি তারে ছিংলাদি মারিয়া ছাড়ি দিমু।”
১৭ আসলে হাকিম পিলাতর রেওয়াজও আছিল,
তাইন আজাদি ইদর অখতো একজন কয়দিরে খালাছ দিতা।
১৮ অইলে মানষে একলগে চিল্লাইয়া কইলো,
“না,
না,
অগুরে মারিলাও।
বারাব্বারে ছাড়ি দেও।”
১৯ অউ বারাব্বারে আগে জেলো হারাইল অইছিল,
হে জেরুজালেম টাউনো খুন আর সন্ত্রাস করছিল।
২০ অইলে পিলাতে ইছারে ছাড়ি দেওয়ার নিয়তে হিরবার তারার লগে বাতচিত করলা।
২১ তা-ও তারা একলগে চিল্লাইয়া উঠলো,
“অগুরে সলিবো দেও,
সলিবো দেও।”
(সলিব অইলো লাকড়িদি বানাইল মানষরে লটকাইয়া মারার এক জিনিস।)
২২ পিলাতে তিন-তিনবার তারারে জিকাইলা,
“কেনে?
ই আসামিয়ে কিতা দুষ করছে?
মউতর সাজার জুকা তার কুনু দুষউ আমি পাইরাম না।
আমি খালি ছিংলাদি মারিয়া তারে ছাড়ি দিমু।”
২৩ অইলে তারা মাইরমুখি অইয়া,
চিল্লাইয়া,
মিছিল লাগাইলা,
“অগুরে সলিবো লটকাও,
সলিবো লটকাও।”
চিল্লানির চুটে তারার দাবি পুরা অইলো।
২৪ তারার দাবি মাফিকউ পিলাতে রায় দিলাইলা।
২৫ তাইন হজরত ইছারে তারার বদ খাইশ মাফিক তারার আতো ছাড়ি দিলা আর হউ খুনি-সন্ত্রাসিরে খালাছ দিলাইলা।
সলিবর উপরে হজরত ইছা আল-মসীর মউত
২৬ হাকিমর রায় পাইয়া সিপাই অকলে ইছারে কাতল করাত লইয়া যাইরা।
অউ সময় সাইমন নামর কুরিনিয়ার একজন মানুষ গাউ থাকি টাউনো আওয়াত আছিল।
তারা অউ বেটারে ধরিয়া লাকড়িদি বানাইল সলিব তার কান্দো তুলিয়া দিয়া কইলো,
হে অগু লইয়া ইছার খরে খরে যাইতো।
২৭ ইছার খরে খরে বউত মানুষ আছিল,
এরার লগে বউত বেটিনও আছলা।
তারা তান লাগি বিলাপ আর আহাজারি করিয়া বুকুত থাবাইয়া কান্দন লাগাইলা।
২৮ অইলে ইছায় তারার বায় চাইয়া কইলা,
“ও জেরুজালেমর মাই অকল,
আমার লাগি কান্দিও না।
তুমরা নিজর লাগি আর নিজর পুয়া-পুড়ির লাগি কান্দো।
২৯ হুনো,
অমন এক দিন আইবো,
যেবলা মানষে কইবা আটখুরা বেটিনউ বড় কপালি।
যেরার কুনু হুরুতাউ অইছে না,
বুকর দুধও কুনুদিন খাওয়াইছে না,
তারাউ কপালি।
৩০ হি সময় মানষে বড় বড় পাড়রে কইবো,
তুমরা আইয়া আমরার উপরে পড়ো।
পাড়র টিল্লা অকলরে কইবো,
আমরারে লুকাইয়া রাখো।
৩১ তুমরা দেখরায় না নি,
তাজা গাছরেউ ইতায় অউ হালত কররা,
তে হুকনা গাছর কুন দশা অইবো।”
৩২ হজরত ইছার লগে করি মারার লাগি সিপাই অকলে দুইজন দাগি আসামিরে লইয়া আইলো।
৩৩ বাদে মাথার-খুলি নামর জাগাত আনিয়া,
তারা ইছারে আর হউ দুইও দাগি আসামিরে গাছর টুকরাদি বানাইল সলিবো লটকাইলো,
একজনরে তান ডাইন গালাত,
আরক জনরে বাউ গালাত লটকাইলো।
৩৪ অউ সময় ইছায় কইলা,
“বাবা,
এরারে মাফ করি দিলাও।
তারা তো বুজের না তারা ইতা কিতা করের।”
বাদে তারা তান কাপড়-চুপড় নিতা করি লটারি মারিয়া বাটা-বাটি করলা।
৩৫ বউত মানষে উবাইয়া ইতা দেখলা,
অইলে তারার মুরব্বি অকলে ইছারে টিটকারি মারিয়া কইলা,
“হে তো বউত মানষর জান বাচাইতো,
হে যুদি হাছাউ আল্লার ওয়াদা করা হউ আল-মসী অয়,
তে অখন তার নিজর জানও বাচাউক।”
৩৬ রোমান সিপাই অকলেও তানরে লইয়া মশকারি করলো,
তারা টেংগা আংগুরর শরবত লইয়া তান কান্দাত গিয়া কইলা,
৩৭ “তুমি যুদি ইহুদি অকলর হাছারর বাদশা অও,
তে অখন নিজর জান বাচাও না।”
৩৮ তান মাথার উপরে একখান সাইনবোর্ড লাগাইল অইলো,
হনো লেখা আছিল,
“হে ইহুদির বাদশা।”
৩৯ অউ সময় তান লগে আরো যে দুইজন আসামিরে সলিবো লটকাইল অইছিল,
অতা একজনে তানরে টিটকারি মারিয়া কইলো,
“তুমি বুলে হউ আল-মসী?
তে অখন আমরারে আর তুমারেও বাচাও না।”
৪০ অখান হুনিয়া দুছরা জনে এরে ধামকি দিয়া কইলো,
“তুমি কিতা আল্লারেও ডরাও না নি?
তুমিও তো অউ হমান সাজা পাইরায়।
৪১ আর আমরা তো পাইরাম আমরার উচিত সাজা,
আমরা যেলান কাম করছি অউলান পাইরাম।
অইলে এইন তো কুনু দুষউ করছইন না।”
৪২ বাদে হে কইলো,
“ও ইছা,
আপনে ফিরিয়া আইয়া যেবলা নিজে বাদশাই করবা,
অউ সময় খানো আমারে ইয়াদ রাখইন যানু।”
৪৩ তাইন কইলা,
“আমি তুমারে হক কথা কইরাম,
তুমি আইজ থাকিউ আমার লগে আরশে-আজিমো থাকবায়।”
৪৪ অউ সময় বেইল অনুমান দুইফর,
এরবাদ থাকি জোহরর বাদ পর্যন্ত তিন ঘন্টা ধরি আস্তা দেশ আন্দাইর অইগেল।
৪৫ সুরুজর ফর নিভিগেল।
এরমাজে জেরুজালেমো কাবা ঘরর পবিত্র হেরেম শরিফর পর্দাখান,
উপরে থাকি তল পর্যন্ত ছিড়িয়া দুই টুকরা অইগেল।
৪৬ হেশে ইছায় জুরে আওয়াজ করিয়া কইলা,
“বাবা,
আমার রুহ তুমার আতো সপিয়া দিলাইলাম।”
অখান কইয়াউ আখেরি দম ফালাইয়া ইন্তেকাল করলা।
৪৭ রোমান সিপাইর যে বড় অফিসার হনো পারা দেওয়াত আছলা,
এইন ইছার মউতর ই হালত দেখিয়া আল্লার তারিফ করিয়া কইলা,
“নিচ্চয়,
ই বেচাড়া খাটি দীনদার মানুষ আছলা।”
৪৮ আর ইতা দেখার লাগি যতো মানুষ দলা অইছলা,
তারাও ই হালত দেখিয়া বুকুত মারি মারি আহাজারি করিয়া ফিরিয়া গেলা।
৪৯ ইছার পরিচিত জন অকলে,
আর গালিল জিলা থাকি যেতা বেটিন তান লগে অইয়া আইছলা,
তারা হক্কলে দুরই উবাইয়া ইতা দেখলা।
হজরত ইছার কয়বর
৫০-৫১ দেশর ফতোয়া কমিটির একজন ইজ্জতি মেম্বার আছলা,
এন নাম ইউছুফ,
এন বাড়ি আরিমাথিয়া গাউত।
এইন তো পরেজগার আর হক মানুষ,
ইছারে কাতল করার অউ কু-ধান্দাত তাইন তারার লগে রাজি অইলা না।
তাইন আল্লার বাদশাইর লাগি বার চাওয়াত আছলা।
৫২ অউ ইউছুফ হাকিম পিলাতর গেছে গেলা,
গিয়া ইছার লাশ নিতা চাইলা।
৫৩ বাদে হজরত ইছার লাশ সলিব থাকি লামাইয়া,
কাফন ফিন্দাইলা,
আর পাথর খুদিয়া বানাইল অউলা এক কয়বরর মাজে দাফন করলা,
ই কয়বরো কুনুদিন আর কেউররে দাফন করা অইছে না।
৫৪ ই দিন আছিল ইহুদির জুম্মার আগর দিন,
থুড়া বাদেউ জুম্মাবার শুরু অইযিবো।
৫৫ আর যেতা বেটিন গালিল থাকি ইছার লগে অইয়া আইছলা,
তারা ইউছুফর খরে খরে গিয়া হউ কয়বর দেখলা,
আর কিলাখান তান লাশ দাফন করা অইলো এওতা দেখলা।
৫৬ বাদে তারা ফিরিয়া গিয়া হারি আতর-গোলাপ আর চন্দন-মলম বানাইলা,
হেশে শরিয়তর হুকুম মাফিক জুম্মার দিন জিরাইলা।