হজরত ইছহাক (আঃ) (২৪:১—২৬:৩৫)
হজরত ইছহাক (আঃ) অর বিয়া
২৪
১ ইব্রাহিম ই সময় খুব মুরব্বি আর যাওয়াগির পথি অইগেছইন। মাবুদে তানরে হকল বায় থনে বরকত নাজিল করছলা। ২ আর তান খাছ গুলাম, বাড়ির পুরান যে গুলামর উপরে তান হকলতার ভার দেওয়া আছিল তারে কইলা, “তুমার আতখান আমার উরাতর তলে হারাও। ৩ আমি তুমারে আছমান-জমিনর মালিক আল্লা মাবুদর নামে কছম করাইয়ার, আমি যে কেনানী অকলর মাজে থাকিয়ার, তারার কুনু পুড়িরে আমার পুয়ার বউ বানাইয়া তুমি আনিও না। ৪ তুমি আমার দেশো গিয়া, আমার পুয়া ইছহাকর লাগি আমার খেশ-কুটুমর মাজ থাকি এগু কইনা চাইয়া আনবায়।” ৫ অউ হি গুলামে তানরে কইলা, “যুদি কুনু পুড়িয়ে আমার লগে ই দেশো আইতে রাজি না অইন, তাইলে যে দেশ ছাড়িয়া আপনে আইছইন, আপনার পুয়ারে আমি হনো লইয়া যাইতাম নি?” ৬ তাইন কইলা, “খবরদার! তুমি আমার পুয়ারে কুনুমন্তেউ হিনো লইয়া যাইও না। ৭ যে আছমানি আল্লা মাবুদে আমারে, আমার বাফর বাড়ি আর জনম মাটি থনে বার করিয়া আনছইন, তাইন আমার লগে বাত-ছওয়াল করি কছম করিয়া কইছইন, ই দেশখান তাইন আমার ওয়ারিশ অকলরে দিবা। তাইন তুমার আগেউ তান ফিরিস্তারে হনো পাঠাইবা, যাতে আমার পুয়ার লাগি তুমি হন থনে এগু কইনা আনতায় পারো। ৮ যুদি কুনু পুড়িয়ে তুমার লগে আইতে রাজি না অয়, তে আমার ই কছম থাকি তুমি খালাছ; তা-ও আমার পুয়ারে তুমি কুনু লাখানউ হিনো লইয়া যাইও না।” ৯ অউ হি গুলামে তান মুনিব ইব্রাহিমর উরাতর তলে আত হারাইয়া অউলা কছম করলা।১০ বাদে হউ গুলামে তান মুনিবর উটর পাল থাকি দশটা উট লইলা। আর মুনিবর ভালা ভালা জিনিস অকল লইয়া, ইরাম-নহরয়িম দেশর যেনো নাহুর থাকতা হবায়দি রওয়ানা অইলা। ১১ আর হাইঞ্জা বালা যেবলা বেটিন্তে পানি আনাত বার অইন, অউ সময় হি গুলামে টাউনর বারে এক কুয়ার কাছাত তান উট অকলরে থইলা। ১২ থইয়া অউ দোয়া করলা, “ও মাবুদ, আমার মুনিব ইব্রাহিমর আল্লা, আরজ করি, আইজ আমার ছামনে কামিয়াবি জাইর করো, আর আমার মুনিব ইব্রাহিমরে মেহেরবানি করো। ১৩ দেখো, ই টাউনর পুড়িন্তে পানি নেওয়াত আইরা আর আমি ইনো কুয়ার কাছাত উবাই রইছি। ১৪ তে অউ পুড়িন্তর মাজে আমি যারে কইমু, ‘আপনার খৈলা লামাইয়া আমারে থুড়া পানি খাওয়াউক্কা’, এর জুয়াপে যুদি হউ পুড়িয়ে কইন, ‘আপনে পানি খাউক্কা আর আপনার উট অকলরেও আমি পানি খাওয়াইমু’ তাইলে অউ পুড়িউ যানু তুমার গুলাম ইছহাকর লাগি তুমার পছন্দর পুড়ি অইন। তেউ আমি বুজমু, তুমি আমার মুনিবরে মেহেরবানি করলায়।”
১৫ তান দোয়া শেষ না অইতেউ বথুয়েলর পুড়ি রেবেকায় খৈলা কাখো লইয়া টাউন থাকি বার অইয়া আইলা। অউ বথুয়েল অইলা ইব্রাহিমর ভাই নাহুরর বিবি মিলকার পুয়া। ১৬ রেবেকা আছলা খুব সুন্দরি, আবিয়াতি, সতী নারী। তাইন কুয়া থাকি খৈলা ভরিয়া যেবলা উঠিয়া আইরা, ১৭ অউ সময়উ ইব্রাহিমর গুলামে দৌড়াইয়া তান গেছে গিয়া কইলা, “দয়া করি আপনার খৈলা থাকি আমারে থুড়া পানি খাওয়াউক্কা।” ১৮ রেবেকায় কইলা, “হুজুর, পানি খাউক্কা।” অউ কথা কইয়াউ তাইন জলদি করি খৈলাটা কাখো থনে আতো আনিয়া পানি খাইতে দিলা। ১৯ পানি খাওয়াইবার বাদে রেবেকায় তানরে কইলা, “আমি আপনার উট অকলরেও তারার পিয়াছ মিটাইয়া পানি খাওয়াইমু, তারা পেট ভরিয়া পানি খাইবা।” ২০ কইয়াউ তাইন জলদি করি পানির গামলাত খৈলার পানি ঢালিয়া হিরবার দৌড়াইয়া কুয়ার গেছে গেলা। আর হকল উটরে পানি তুলি দিলা। ২১ মাবুদে তান ই ছফর কামিয়াব করছইন কি না ইটা জানার লাগি হি গুলামে নীরবে রেবেকার বায় চাই রইলা।
২২ উট অকলে পানি খাইয়া হারলে, তাইন আধা তোলার একটা সোনার নাকর নথ আর দুই আতো দশ তোলার দুইটা সোনার বালা রেবেকারে দিয়া জিকাইলা, ২৩ “আপনার বাবার নাম কিতা? আপনে কউক্কাছাইন, আপনার বাফর বাড়িত আমরার রাইত থাকার জাগা অইবো নি?” ২৪ রেবেকায় কইলা, “আমার বাবার নাম বথুয়েল। দাদার নাম নাহুর আর দাদির নাম মিলকা। ২৫ তে আপনার উটর খানির লাগি আমরার বাড়িত বউত খের-ভুষি আছে আর রইবার জাগাও আছে।” ২৬ অউ হি গুলামে মাবুদর সইজদা করিয়া কইলা, ২৭ “হক্কল প্রশংসা মাবুদর, যেইন আমার মুনিব ইব্রাহিমর আল্লা। তাইন আমার মালিকরে তান দেওয়া ওয়াদা রাখতে আর ইমানদারি দেখাইতে ফাউরিছইন না। তাইন আমারেও পথ চিনাইয়া আমার মুনিবর কুটমর বাড়িত লইয়া আইছইন।”
২৮ রেবেকায় দৌড়াইয়া গিয়া তান মাʼর বাড়ির হকলরে ইতা জানাইলা। ২৯ রেবেকার এক ভাইর নাম আছিল লাবন। অউ লাবনে দৌড়াইয়া কুয়ার কাছাত আইলা এনরে দেখতা করি। ৩০ বনির আতর বালা আর নাকর নথ দেখিয়া, আর হি মানষে যেতা কইছে ইতা হুনিয়া, তাইন আইয়া দেখলা, মানুষটা কুয়ার কান্দাত তার উটর গেছে উবাই রইছে। ৩১ লাবনে তানরে কইলা, “ও মাবুদর রহমতর মানুষ, আউক্কা। বারে উবাই রইছইন কেনে? আমি আপনারার লাগি ঘর, আর উটর লাগি জাগা জুইত করিয়া আইছি।” ৩২ অউ হি গুলামে তারার বাড়িত গিয়া উট অকলর গাইট লামাইতেউ, লাবনে খের আর ভুষি আনিয়া দিলা। তানে আর তান লগর হকলরে আত-পাও ধোয়ার পানিও দিলা। ৩৩ বাদে তান ছামনে খানি দেওয়া অইলো, তেউ তাইন কইলা, “আমি কিতার লাগি ইনো আইছি, ইতা না হুনাইয়া খানি খাইতাম নায়।” লাবনে কইলা, “তে কইলাউক্কা।”
৩৪ অউ তাইন কইলা, “আমি ইব্রাহিমর গুলাম। ৩৫ আমার মালিকরে মাবুদে বউত বরকত নাজিল করছইন, আইজ তাইন বউত ধনি-মানী। মাবুদে তানরে বউত গরু-মেড়া, উট-গাধা, সোনা-রুপা, আর বান্দি-গুলাম দিছইন। ৩৬ তান বিবি ছায়রার মুরব্বি বয়সো মুনিবর একজন পুয়া অইছইন, আর অউ পুয়ারেউ তাইন, তান হকলতা দিলাইছইন। ৩৭ তাইন আমারে কছম করাইয়া কইছইন যেন, তাইন যে দেশো বসত কররা, হি কেনান দেশর কুনু পুড়িরে যাতে তান পুয়ার বউ না বানাই। ৩৮ এর বদলা তান বাফর আর তান খান্দানর বাড়িত গিয়া তান পুয়ার লাগি একজন কইনা চাইয়া নেই। ৩৯ অউ আমি আমার মুনিবরে কইলাম, ‘যুদি কুনু পুড়ি আমার লগে আইতে রাজি না অইন?’ ৪০ তাইন কইলা, ‘মাবুদ, যানরে আমি খেজমত করি, তাইনউ তান ফিরিস্তারে পাঠাই দিবা, যাতে তুমার ছফর কামিয়াব অয়। আর তুমি আমার নিজর বংশ আর আমার বাফর খান্দান থনে, এগু পুড়িরে আমার পুয়ার লাগি চাইয়া আনবায়। ৪১ তারার হিনো গেলে যুদি তারা কুনু পুড়িরে না দেইন, তাইলে তুমি আমার ই কছম থাকি খালাছ পাইবায়।’
৪২ “অউ আইজ আমি কুয়ার গেছে আইয়া দোয়া করলাম, ‘ও মাবুদ, আমার মুনিব ইব্রাহিমর আল্লা, তুমি যুদি আমার ই ছফর কামিয়াব করো তাইলে, ৪৩ দেখো, আমি অউ ভরা কুয়ার গেছে উবাই রইছি, আর কুনু পুড়িয়ে অনো পানি নেওয়াত আইলে আমি কইমু, খৈলা থাকি আমারে থুড়া পানি খাওয়াও। ৪৪ আর যুদি তাই কয়, তুমিও পানি খাও আর তুমার উট অকলরেও আমি পানি তুলিয়া দিমু, তাইলে অউ পুড়িউ যানু আমার মুনিবর পুয়ার লাগি তুমার পছন্দ করা পুড়ি অয়।’
৪৫ “আমার দোয়া শেষ না অইতেউ দেখি, রেবেকায় খৈলা কাখো লইয়া কুয়াত আইরা পানি তুলতা। পানি তুলার বাদে আমি কইলাম, ‘দয়া করিয়া আমারে থুড়া পানি খাওয়াউক্কা।’ ৪৬ তাইন জলদি করি কাখো থনে খৈলা লামাইয়া আমারে কইলা, ‘অউ নেইন, পানি খাইন। আমি আপনার উট অকলরেও পানি খাওয়াইমু।’ তেউ আমি পানি খাইলাম, আর তাইন আমার উট অকলরেও পানি খাওয়াইলা। ৪৭ বাদে আমি তানে জিকাইলাম, ‘আপনে কার পুড়ি?’ তাইন কইলা, ‘আমি বথুয়েলর পুড়ি, আমার দাদার নাম নাহুর আর দাদির নাম মিলকা।’ অউ আমি তান নাকো নথ আর আতো বালা ফিন্দাইয়া দিলাম। ৪৮ বাদে আমি মাবুদর সইজদা করলাম। আর যেইন আমার মুনিব ইব্রাহিমর আল্লা, হউ মাবুদর শুকুর আদায় করলাম, তাইনউ আমারে ঠিক পথে চালাইয়া আনছইন যাতে আমি আমার মুনিবর ভাতিজিরে, তান পুয়ার লাগি তুকাইয়া পাই। ৪৯ তেউ অখন আপনারা আমার মুনিবর বায় দরদ আর ইনছাফ করবা নি, কউক্কা। যুদি না করইন তা-ও কউক্কা, যাতে আমি ডাইনে-বাউয়ে যাইতাম পারি।”
৫০ অউ লাবন আর বথুয়েলে কইলা, “ঘটনা তো মাবুদ থাকিউ অইছে। অখন আমরার ভালা-বুরা মাতার কুন্তাউ নায়। ৫১ অউ দেখউক্কা, রেবেকা তো অনো আছে, তে মাবুদর হুকুম মত আপনার মুনিবর পুয়ার বউ বানাইবার লাগি এরে লইয়া যাইতা পারবা।”
৫২ ই মাত হুনিয়া ইব্রাহিমর গুলামে মাবুদর সইজদা করলা। ৫৩ এরবাদে তাইন সোনা-রুপার গয়না-গাটি আর কাপড়-চুপড় বার করিয়া রেবেকারে দিলা, এর লগে রেবেকার মা-ভাইরেও বউত দামি দামি উপহার দিলা। ৫৪ বাদে তাইন আর তান লগর হকলে খাওয়া-দাওয়া শেষ করিয়া হখানোউ রাইত কাটাইলা। বিয়ানে ঘুম থাকি উঠিয়া তাইন কইলা, “আমার মুনিবর গেছে যাওয়ার লাগি আমারে বিদায় দিলাউক্কা।” ৫৫ তেউ রেবেকার মা আর ভাইয়ে কইলা, “পুড়িগু আরো দশখান দিন আমরার গেছে থাকউক, বাদে যাইবোনে।” ৫৬ অউ হি গুলামে তারারে কইলা, “মাবুদে যেবলা আমার ই ছফর কামিয়াব করছইন, তাইলে আমারে দেরি না করাইয়া বিদায় দিলাউক্কা, আমার মুনিবর গেছে যাইগি।” ৫৭ এরা কইলা, “আমরা তাইলে পুড়িরে ছামনে আনিয়া জিকাইলাই।” ৫৮ আর রেবেকারে ডাকিয়া আনিয়া জিকাইলা, “তুমি কিতা তান লগে যাইবায় নি গো?” তাইন কইলা, “আইচ্ছা, যাইমুনে।” ৫৯ অউ তারা ইব্রাহিমর গুলাম আর তান লগর মানষর লগে তারার বইন আর তান বান্দি বেটিরে বিদায় দিলা। ৬০ আর রেবেকারে দোয়া করিয়া কইলা, “বইন গো, তুমি লাখ লাখ আওলাদর মা অও। তুমার আওলাদে দুশমন অকলরে ঘাইল করউক।” ৬১ রেবেকা আর তান বান্দি অকলে তৈয়ার অইয়া উটর উপরে চড়িয়া, ইব্রাহিমর গুলামর খরে অইয়া রওয়ানা দিলা। অউ লাখান হউ গুলামে রেবেকারে লইয়া বার অইলা।
৬২ ইছহাক ই সময় নেগেভো থাকতা। তাইন বের-লহয়-রোয়ী নামর জাগা থনে ফিরত আইলা। ৬৩ একদিন বিয়ালি বালা তাইন বন্দেদি আটাত বার অইলা। আখতাউ চউখ তুলিয়া চাইয়া দেখলা, কয়টা উট আইরা। ৬৪ রেবেকায়ও দুরই থনে ইছহাকরে দেখিয়াউ উটর উপর থাকি লামি গেলা। ৬৫ আর হউ গুলামরে জিকাইলা, “অউ যেইন বন্দর মাজেদি আমরার বায় আইরা, এইন কে?” গুলামে কইলা, “এইন তো আমার মুনিব।” অউ রেবেকায় বুরকার পর্দা লামাই দিলা। ৬৬ আর হি গুলামে যেতা যেতা করিয়া আইছইন, হকলতা ইছহাকরে জানাইলা। ৬৭ ইছহাকে তান মা বিবি ছায়রার তাম্বুত রেবেকারে লইয়া গিয়া তানে বিয়া করলা। আর তানরে মায়া করলা। তান মাʼর মউতর বাদে, রেবেকার মায়ায়উ তান জানো শান্তি পাইছলা।