পবিত্র তৌরাত শরিফ পাচ নম্বর ছিপারা
দুছরা-বয়ানি
হজরত মুছা (আঃ) অর পয়লা নছিয়ত (১:১—৪:৪৩)
তুর পাড় ছাড়ার কথা
১
১ মুছা নবীয়ে জর্দান গাংগর পুব পারর আরাবা নামর মরুভুমিত বনি ইছরাইল জাতিরে অউ বয়ান করছলা, তাইন সুফ গাউর ছামনে উবাইয়া তারার লগে মাতিলা। এর একবায় আছিল ফারান, আর অইন্যবায় আছিল তোফল, লাবন, হাজিরুত আর দিজাহাব, অউ চাইর গাউ।২ সেয়ীরর পাড়িয়া পথেদি তুর পাড় থাকি কাদেশ-বর্নেয়া পর্যন্ত আটিয়া যাইতে খালি এগারো দিন লাগে। ৩ অইলে বনি ইছরাইল মিসর থাকি বার অইয়া উনচাল্লিশ বছর এগারো মাস পর্যন্ত, অর্থাত ছফরর চাল্লিশ বরছ চলার কালো, অনো ঘুরিলা। বাদে অউ মাসর পয়লা তারিখো মুছা নবীয়ে তারারে জানাইলা মাবুদে তানরে যেতা কইছলা। ৪ তাইন লাড়াই করি আমোরী অকলর বাদশা সীহোনরে আর বাশন দেশর বাদশা উজরে আরাইয়া হারলে ইতা কইলা। অউ সীহোনে বাদশাই করতা হিশবন টাউনো, আর উজে বাদশাই করতা অষ্টারোত আর ইদরি টাউনো।
৫ জর্দান গাংগর পুব পারর মোয়াব দেশো, মুছা নবীয়ে আল্লার দেওয়া তৌরাতর তালিম বয়ান করিয়া বুজাইলা। তাইন কইলা, ৬ “ও বনি ইছরাইল, হুনো, আমরা তুর পাড়র গালাত থাকার কালো মাবুদ আল্লায় আমরারে কইছলা, অউ পাড়র গালাত তুমরার বউত দিন গুজরি গেছে। ৭ তে অখন তুমরা হকলে তাম্বু তুলিয়া আমোরী অকলর পাড়িয়া এলাকা আর অউ এলাকার কান্দা-কাছার হকল জাগাত যাওয়ার লাগি রওয়ানা অও। ই জাগা হকলতা অইলো গিয়া: আরাবা মরুভুমি আর অউ মরুভুমির কান্দা-কাছার উচা পাড়িয়া জাগা আর নিচা পাড়িয়া জাগা, নেগেভ মরুভুমি আর দরিয়ার কিনারা, মানি কেনান দেশ থাকি আরম্ভ করিয়া লেবানন দেশ অইয়া ফোরাত গাং পর্যন্ত ইতা হকল জাগা। ৮ মনো রাখিও, ইতা হকল জাগা আমি তুমরারে দিলাইছি। আমি মাবুদে তুমরার বাফ-দাদাইন ইব্রাহিম, ইছহাক, ইয়াকুব আর তারার খান্দানরে যে দেশ দেওয়ার ওয়াদা করছলাম, তুমরা অখন গিয়া ইতা হকল জাগা দখল করিলাও।
হজরত মুছায় আরো কয়জনরে নেতা বানাইলা
৯ “তে ভাইয়াইনরে, হউ সময় আমি তুমরারে কইছলাম, তুমরা হকলর ভার তো আমি একলা বইবার সাইধ্য নাই। ১০ তুমরার মাবুদ আল্লায় তুমরারে অতো আওলাদ বাড়াই দিছইন, এরলাগি তুমরা আইজ আছমানর তেরার লাখান অইছো, গনিয়া ফুড়াইল যায় না। ১১ তুমরার বাফ-দাদার মাবুদ আল্লায় তুমরারে আরো আজার আজার গুন বাড়াউক্কা, আর তান ওয়াদা মাফিক তুমরারে রহম করউক্কা। ১২ অইলে আমি একলা কেমনে তুমরার কাইজ্জা-ফসাদ মিটাইতাম, আর তুমরার জিম্মাদারির ভার বইতাম? ১৩ এরলাগি তুমরার পরতেক খান্দান থাকি কয়জন আখলদার, জানরা-হুনরা আর হকল মানষর গেছে ইজ্জতি জনরে পছন্দ করো, আমি তুমরার জিম্মাদারি এরার আতো সমজাইমু।
১৪ “তুমরা জুয়াপ দিছলায়, আইচ্ছা, আপনে যেলা কইরা, অলাউ ভালা অইবো। ১৫ তেউ আমি তুমরার পরতেক খান্দান থাকি আখলদার, বুদ্ধিমান আর জানরা-হুনরা জনরে নিয়া তুমরার আজার জনর উপরে, শ জনর উপরে, পইঞ্চাশ জনর উপরে, দশ জনর উপরে সর্দার বানাই দিছলাম, আর অফিসারও বওয়াল করছলাম।
১৬ “হউ সময় আমি তুমরার হাকিম অকলরে হুকুম দিছলাম, কইছলাম, কাইজ্জা-ফসাদর বিচারো বাদি-বিবাদি দুইও পক্ষর মাত হুনিয়া হক ইনছাফ করিও, ইতা নিজর জাতির অউক বা ভিন জাতির অউক। ১৭ বিচারর সময় তুমরা কেউরর পক্ষ লইও না, ধনি-গরিব হকলর কথা হুনিও। আসলে বিচারর মালিক তো আল্লা, এরলাগি তুমরা কুনু মানষরে ডরাইও না। যে বিচারর মিমাংসা করা তুমরার লাগি কঠিন অয়, ইখান আমার গেছে আনিও, আমি দেখমু। ১৮ আর তুমরা কিলা কিতা করতায়, ইতা তো আমি হউ সময় কইয়া দিছলাম।
গুইয়া পাঠাইয়া দেশর খবর জানা
১৯ “বাদে আমরা মাবুদ আল্লার হুকুম পাইয়া, তুর পাড় ছাড়িয়া আমোরী অকলর পাড়িয়া এলাকা মুখা রওয়ানা অইলাম। তুমরা তো দেখছো, কতো বড় আর কতো মারাত্মক মরুভুমি পার অইয়া আমরা কাদেশ-বর্নেয়া আইয়া আজিলাম। ২০ আজিয়া হারি আমি কইছলাম, অখন তো তুমরা আমোরী অকলর হউ পাড়িয়া এলাকাত আইয়া পৌছি গেছো, ই দেশখান আমরার মাবুদ আল্লায় আমরারে দিলাইরা। ২১ হুনো, তুমরার মাবুদ আল্লার দান করা অউ আস্তা দেশউ তুমরার ছামনে পড়ি রইছে। অখন যাও, গিয়া তুমরার বাফ-দাদার মাবুদ আল্লার ওয়াদা করা অউ দেশরে দখল করো। কেউ ডরাইও না, নিরাশ অইও না।
২২ “অউ সময় তুমরা হকল আইয়া আমারে কইলায়, তে পয়লা কয়জন গুইয়ারে অউ দেশো পাঠাইল অউক, তারা গিয়া দেশখান দেখিয়া আইয়া আমরারে কইবা, কুন পথে যাওয়া আমরার লাগি ভালা আর যাওয়ার পথো কুন কুন টাউন পড়বো।
২৩ “তুমরার পরামিশ আমার পছন্দ অইলো, এরলাগি পরতেক খান্দান থাকি একজন করি মোট বারো জনরে আলগ করলাম। ২৪ তারা তুমরারে অনো থইয়া অউ পাড়র উপরে উঠলো, আর আশকুল নামর পাড়িয়া খালো গিয়া ভালা করি হকলতা দেখিয়া আইলো। ২৫ তারা হউ দেশ থাকি কিছু ফল-মুল আনিয়া আমরারে দেখাইয়া কইলো, আমরার মাবুদ আল্লায় আমরারে যে দেশখান দান কররা, ইখান তো বড় ভালা জাগা।
২৬ “অইলে তুমরা অউ দেশো যাইতে রাজি অইলায় না। তুমরা নিজর মাবুদ আল্লার হুকুমর বিরুধিতা করলায়। ২৭ তুমরা যারযির তাম্বুত হামাইয়া বকা-জকা শুরু করলায়, আর কইলায়, মাবুদে আমরার লগে দুশমনি করইন, এরলাগিউ আমরারে বিনাশ করার নিয়তে, আমোরী অকলর আতো ফালাইয়া মারার খিয়ালে, মিসর দেশ থাকি তাইন আমরারে বার করি আনছইন। ২৮ আমরা কিলা হিনো যাইমু? আমরার গুইয়া ভাইয়াইন্তে আইয়া জানো ডর হারাই দিছইন। তারা কইছইন, হিনর মানুষ বুলে আমরা থাকি বউত উচা-মোটা পয়লোয়ান। তারার টাউন অকলও বড় বড়, ইতার চাইরোবায় উচা উচা ওয়াল দিয়া বাউন্ডরি করা, আছমানো ছইলার লাগের। আর পয়লোয়ান আনাকী অকলরেও বুলে হনো দেখছইন।
২৯ “ইতা হুনিয়া আমি তুমরারে কইছলাম, তুমরা মন ঘাবড়াইও না, ইতারে ডরাইও না। ৩০ তুমরার মাবুদ আল্লা তো তুমরার আগে আগে যাইরা। তাইন তুমরার পক্ষ লইয়া তুমরার চখুর ছামনে মিসর দেশো যেলা যুদ্ধ করছলা, অখনও অউলা করবা। ৩১ আর অউ মরুভুমির মাজেও তো তুমরা দেখছো, অনো আইয়া পৌছার আগ পর্যন্ত, বাফে যেলাখান আপন পুতরে কুলো করি বইয়া নেইন, অউলাখান আল্লা মাবুদে তুমরারেও আস্তা পথ বইয়া আনছইন। ৩২ অততা হুনার বাদেও তুমরা তান উপরে ভরসা করলায় না। ৩৩ তাইনেউ তো তাম্বু গাড়িবার জাগা চিনানির লাগি আর পথ চিনাইয়া নিবার লাগি, রাইতকুর সময় আগুনির খুটি আর দিনকুর সময় মেঘর খুটির নমুনা অইয়া তুমরার আগে আগে গেছইন।
৩৪ “অইলে তুমরার ইতা জুয়াপ হুনিয়া মাবুদে খুব গুছা করলা, তাইন কছম খাইয়া কইলা, ৩৫ আমি মাবুদে তুমরার বাফ-দাদার গেছে কছম খাইছলাম অউ দেশখান দিতাম করি, তা-ও অখনকুর ইতা নাফরমান অকলে ই ভালা জাগা খান দেখার নছিব অইতো নায়, ৩৬ খালি যিফুন্নির পুয়া কালুত ছাড়া। ইখান দেখার সৌভাইগ্য অউ কালুতে পাইবো, হে আমার কথারে পুরাপুর মানছে, হে যেতা জাগা পাওদি পাড়াইয়া আইছে, ইতা জাগা আমি তারে আর তার আওলাদ অকলরে দিমু।
৩৭ “ভাইয়াইনরে, তুমরার কারনে মাবুদে আমার উপরেও গুছা করলা, গুছা করি আমারে কইলা, তুমি মুছাও হউ দেশো হামাইতায় পারতায় নায়। ৩৮ খালি তুমার খাদিম নূনর পুয়া ইউছা গিয়া হনো হামাইবো। তুমি তারে সাওস দিও, হে বনি ইছরাইলরে ই দেশর দখলদারি দিয়া মালিক বানাইবো। ৩৯ তুমরা কইছলায়, আমরার বেবুজ নাবালিক হুরুতাইন্তরে হউ দেশর মানষে ধরিয়া নিবোগি। অইলে আমি মাবুদে এরারেউ অউ কেনান দেশর মালিক বানাইমু, এরা ইখান দখল করবা। ৪০ তে অখন তুমরা হিরবার পিছাইয়া গিয়া নীল দরিয়ার পারেদি মরুভুমির বায় রওয়ানা দেও।
৪১ “ইখান হুনিয়া তুমরা কইছলায়, আমরা তো মাবুদর দরবারো গুনাগার অইগেছি। তা-ও আমরার মাবুদ আল্লার হুকুম মাফিক অখন গিয়া যুদ্ধ করমু। অখান কইয়া তুমরা অস্ত্র-শস্ত্র লইলায়, আর মনো করছলায়, পাড়ি এলাকাত উঠিয়া যুদ্ধ করাও খুব সুজা।
৪২ “অইলে মাবুদে আমারে কইলা, তুমি তারারে কও, তারা যানু যুদ্ধর লাগি পাড়ো না উঠে, কারন আমি তারার লগে রইতাম নায়, আর আমারে ছাড়িয়া যুদি তুমরার নিজর ইচ্ছায় যাও, তে দুশমনর গেছে আরিবায়। ৪৩ আমি তুমরারে হুশিয়ারি দেওয়ার বাদেও তুমরা ইতা মানলায় না। তুমরা মাবুদর হুকুমর উল্টা গিয়া বুক ফুলাইয়া অউ পাড়ো উঠাত লাগলায়। ৪৪ তেউ পাড়র বাসিন্দা আমোরী জাতিয়ে তুমরারে দেখিয়া পাল বান্দি বার অইলো, মউচাকর মউ-পুকর লাখান পাল বান্দিয়া তুমরার খরে খরে আইলো, আর মারতে মারতে সেয়ীরর হর্মা টাউন পর্যন্ত খেদাইয়া নিলো। ৪৫ বাদে তুমরা আইয়া মাবুদর গেছে কান্দন লাগাইলায়, অইলে মাবুদে কান বন্দ করিল্লা, ই কান্দন হুনলা না। ৪৬ অউ নমুনায় তুমরা বউত দিন কাদেশ এলাকাত রইলায়, লাম্বা সময় অনো গুজরিলো।”