দোয়া করার কায়দা-কানুন
১১
১ একদিন হুজুর ইছায় কুনু এক জাগাত দোয়া করাত আছলা।
দোয়া শেষ অইয়া হারলে তান এক সাহাবিয়ে কইলা,
“হুজুর,
এহিয়া নবীয়ে তো তান সাহাবিরে দোয়া করা হিকাইতা,
তে আপনেও আমরারে দোয়া করা হিকাউক্কা।”
২ ইছায় এরারে কইলা,
“দোয়া করার সময় তুমরা অউলা কইও,
ও আছমানি বাবা,
তুমার নাম পবিত্র কইয়া মানা অউক,
দুনিয়াত তুমার বাদশাই কাইম অউক।
৩ আমরার পরতেক দিনর রিজেক পরতিদিন যুগাই দিও;
৪ বাবা,
আমরার তামাম গুনারে মাফ করিয়া দিলাও,
যেলা আমরাও মাফি দিলাইছি আমরার অপরাধি অকলরে;
আর পরিক্ষা থাকি হেফাজত করো আমরারে।”
৫ বাদে ইছায় তারারে কইলা,
“ধরিলাও,
আধা রাইতকুর বালা তুমরার কুনু দুস্তর বাড়িত গিয়া কইলায়,
দুস্ত,
আমারে তিনখান রুটি করজ দেও।
৬ আমার এক বন্ধু পথেদি যাওয়ার বালা আখতাউ আমার বাড়িত উঠছইন।
অখন তানে কিতা খাওয়াইতাম,
আমার ঘরো তো কুন্তা নাই।
৭ তেউ দুস্তে ঘরো থনে জুয়াপ দিলা,
আমি দরজা বন্দ করিয়া আমার হুরুতাইন লইয়া হুতিরইছি,
আমারে কষ্ট দিও না।
অখন উঠিয়া কুন্তা দিতাম পারতাম নায়।
৮ অইলে আমি কইরাম,
অউ দুস্তে উঠিয়া বন্ধু হিসাবে কুন্তা দিতে না চাইলেও,
তুমি বার বার মিনত করলে হে উঠবোউ।
উঠিয়া তুমি যেতা চাইরায়,
ইতা ঠিকউ দিবো।
৯ “তে আমি তুমরারে কইরাম,
তুমরা চাও,
তেউ দেওয়া অইবো।
তালাশ করো,
তেউ পাইবায়।
দুয়ারো ঠুকা দেও,
তুমরার লাগি দুয়ার খুলা অইবো।
১০ যারা চায়,
তারাউ তো পায়।
যে তালাশ করে হে পায়।
যে দুয়ারো ঠুকা দেয়,
তার লাগি দুয়ার খুলা অয়।
১১ তুমরার মাজে ইলা কুনু বাফ আছে নি,
যার পুতে রুটি চাইলে তারে মাটি দিবো,
মাছ চাইলে হাফ দিবো,
১২ বা এন্ডা চাইলে বিছা দিবো?
১৩ তে তুমরা নাফরমান অইয়াও যুদি তুমরার হুরুতাইনরে ভালা ভালা চিজ দিতায় জানো,
তে যারা বেহেস্তি বাফর গেছে চাইব,
তাইন নিচয় তারারে পাক রুহ দান করবাউ।”
হজরত ইছায় কুন বলে কেরামতি দেখাইন
১৪ একদিন এক বেটার লগ থাকিয়া ইছায় এক বোবা জিন্নাত ছাড়াইলা।
জিন্নাতে ছাড়ার বাদে হি বেটার জবান খুলি গেল,
মাত-কথা মাতিলো।
ইতা দেখিয়া মানুষ তাইজ্জুব বনিগেলা।
১৫ অইলে কুনু কুনু মানষে কইলো,
“ই বেটায় জিনর বাদশা বেল-সবুলর বলে জিন ছাড়ায়।”
১৬ আরো কয়েক জনে তানরে পরিক্ষা করার নিয়তে,
তান আতর কুনু কেরামতি দেখতো চাইলো।
১৭ ইছায় তারার দিলর ভাব বুজিলিলা।
বুজিয়া কইলা,
“কুনু রাইজ্য নিজে নিজে ভাগ অইগেলে,
ই রাইজ্য বিনাশ অইযায়।
অউলা কুনু পরিবারো যেবলা বিবাদ লাগি যায়,
ই পরিবারও আর টিকে না।
১৮ তে জিন্নাত যুদি তার নিজর বিপক্ষে লাগি যায়,
তাইলে তার রাইজ্য কেমনে টিকবো?
তুমরা তো কইরায়,
আমি বেল-সবুলর বলে জিন্নাত ছাড়াই।
১৯ খুব ভালা কথা,
আমি যুদি বেল-সবুলর বলে জিন্নাত ছাড়াই,
তে তুমরার মানষে কিতাদি ছাড়ায়?
তুমরার মাতর বিচার তুমরার মানষেউ করবো।
২০ অইলে আমি যুদি আল্লাই কুদরতে জিন্নাত ছাড়াই,
তে তো আল্লার বাদশাই তুমরার নজদিক আইচ্ছে।
২১ “হুনো,
কুনু বলআলা মানষে অস্ত্র-শস্ত্র লইয়া তার বাড়ি পাহারা দিলে,
তার ছামানা নিরাপদ থাকে।
২২ অইলে তার থাকি জবরদস্ত আরক জন আইয়া হামলা করিয়া তারে আরাইলিলে,
হে যেতা অস্ত্র-শস্ত্রর বড়াই করছিল,
ই অস্ত্রও কাড়িয়া নিবোগি।
তার হকল মাল-ছামানাও লুটিয়া নিয়া বাটিলিবো।
২৩ “তে যে জন আমার পক্ষে নায়,
হে তো আমার বিপক্ষ।
যে আমার অইয়া কাম না করে,
হে তো আমার বিরুদ্ধে কাম করে।
২৪ “কুনু জিনে যেবলা এক বেমারির লগ ছাড়িয়া যায়গি,
গিয়া বসত করার লাগি মরুভুমিত ঘুরা-ঘুরি করে।
বাদে কুনুখানো রইবার জাগা না পাইয়া মনে মনে কয়,
দুর!
আমি যেন থাকি আইছি অনোউ হিরবার যাইগি।
২৫ ফিরত আইয়া হারি দেখে,
হি জাগা সুন্দর করি হাজাই-পাড়াই থওয়া।
২৬ অউ হে গিয়া তার থাকি আরো বদ সাতগু জিন লগে করি আনে।
আনিয়া অনো হামাইয়া বাসা বানায়।
এরদায় অউ বেমারির দশা পয়লা থাকি হেশে আরো খারাপ অয়।”
২৭ ইছায় অতা বয়ান কররা,
আখতাউ ভিড়র মাজ থাকি এক বেটিয়ে জুরে জুরে কইলো,
“হুজুর,
যে মাʼয় আপনারে পেটো লইছইন আর দুধ খাওয়াইছইন,
এইন বড় কপালি মা।”
২৮ ইছায় কইলা,
“ইখান হাছা কথা,
অইলে এর চাইতেও বড় কপালি তারা,
যারা আল্লার কালাম হুনে,
হুনিয়া অলা আমল করে।”
হজরত ইউনুছ নবীর আলামত
২৯ বাদে আরো বউত মানুষ হজরত ইছার গেছে আইলা।
তাইন এরারে কইলা,
“ই জমানার মানুষ তো নাফরমান।
তারা খালি কেরামতি তুকায়,
অইলে ইউনুছ নবীর আলামত ছাড়া দুছরা কুনু কেরামতি তারারে দেখাইল অইতো নায়।
৩০ ইউনুছ নবী নিজে নিজেউ যেলা নিনভ টাউনর মানষর গেছে এক আলামত অইছলা,
বিন-আদমও অউলা ই জমানার মানষর গেছে নিজেউ আলামত অইবা।
৩১ রোজ কিয়ামতর দিন দউকনর দেশর রানী উঠিয়া অউ জমানার মানষর দুষ জাইর করবা।
কারন বাদশা সুলাইমানর আখলর কথা হুনার নিয়তে তাইন দুনিয়ার হেশ মাথা থাকি আইছলা।
অইলে অখন তো সুলাইমান থাকিও আরো মহান একজন অনো আছইন।
৩২ কিয়ামতর দিন নিনভ টাউনর মুর্দা অকল উঠিয়া ই জমানার মানষর দুষ জাইর করবা।
কারন ইউনুছ নবীর তবলিগ হুনিয়া তারা তৌবা করছিলা।
অইলে অখন তো ইউনুছ থাকিও আরো মহান একজন ইনো আছইন,
তা-ও মানষে তৌবা করের না।
চউখ ভালা যার, দিল ভালা তার
৩৩ “কুনু মানষে তো লেম জালাইয়া হারি চকির তলে বা টুকরির তলে থয় না,
বরং গাছার উপরেউ থয়,
যাতে ঘরর মানষে ফর দেখে।
৩৪ তুমার চউখউ অইলো তুমার কায়ার বাত্তি।
চউখ যুদি ভালা অয়,
তে তুমার আস্তা শরিলো ফর অইবো।
আর চউখ খারাপ অইলে,
তুমার শরিলও আন্দারিত রইবো।
৩৫ তে খিয়াল রাখিও,
তুমার দিলো যে নুর আছে,
ইতা আন্দাইর অইযার কি না?
৩৬ তুমার আস্তা শরিলো যুদি ফর থাকে,
কুনু অংগ আন্দাইর না থাকে,
তে লেমে যেলা তার নিজর তেজে তুমারে ফর দেয়,
অউলা ই নুরেও তুমার আস্তা শরিলরে ফর করিলিবো।”
দিলরে পাক-পাকিজা রাখা জরুর
৩৭ ইছায় বয়ান কররা অউ সময় ফরিশি দলর একজনে তানরে খাইবার দাওত দিলা।
তাইন গিয়া এন ঘরর ভিতরে খানিত বইলা।
৩৮ ফরিশিয়ে দেখলা,
খাওয়াত বইবার কালো ইছায় ইহুদি নিয়ম মাফিক আত ধইছইন না,
অউ তাইন তাইজ্জুব বনিগেলা।
৩৯ তেউ ইছায় তানরে কইলা,
“হুনউক্কা,
আপনারা ফরিশি অকলে তো বাসন-বর্তনর বাইর গালা খুব সুন্দর করইন,
অইলে আপনারার ভিতরে তো নাফরমানি আর লালছে ভরা।
৪০ ও বেআখলর দল,
যেইন বারগালা বানাইছইন,
তাইনউ কিতা ভিতরগালাও বানাইছইন না নি?
৪১ এরলাগি আপনারার ভিতরে যেতা আছে,
অতা আগে আল্লার ওয়াস্তে লিল্লা-ছদগা দেউক্কা।
তেউ দেখবানে,
আপনারার হকলতাউ পাক-ছাফ অইযিব।
৪২ “হায়রে ফরিশি অকল,
লান্নত তুমরারে,
তুমরা খালি তেজপাতা,
পদিনা পাতা আর হক্কল হাগ-তরকারির দশ বাটর এক বাট আল্লার নামে যকাত দেও,
অইলে আল্লার মহব্বত আর হক ইনছাফর বায় তুমরার কুনু খিয়ালউ নাই।
আসলে অউ পয়লাতা মানার লগে লগে বাদরতাও আমল করা ফরজ।
৪৩ ও লান্নতি ফরিশি অকল!
মছিদো হামাইয়া ছামনর কাতারো বওয়া,
আর বাজার-আটো গিয়া ছালাম পাইতে তুমরা খুব পছন্দ করো।
৪৪ লান্নত তুমরার উপরে,
তুমরা অইলায় অ-চিনা কয়বরর লাখান।
মানষে না চিনিয়া এর উপরেদি আটা-ফিরা করে।”
৪৫ ইখান হুনিয়া একজন আলিমে ইছারে কইলা,
“হুজুর,
অখান কইয়া তো আপনে আমরারেও বেইজ্জত কররা।”
৪৬ ইছায় কইলা,
“নিচয়,
আপনারাও লান্নতি,
আপনারা মানষর কান্দো ভার বোঝাই করিয়া দেইন,
অইলে তারার আছানর লাগি আংগুলটাও লাড়ইন না।
৪৭ “হায়রে লান্নতি অকল,
তুমরা নবী অকলর রওজারে সুন্দর করিয়া পাক্কা করো,
অইলে তুমরার ময়-মুরব্বিয়েউ তো এরারে কাতল করছলা।
৪৮ অতা দেখিয়াউ বুজা যায়,
তুমরা তুমরার ময়-মুরব্বির কামর সাক্ষি অইরায়,
তুমরাও অলা অইরায়।
তারা নবী অকলরে কাতল করছিল,
আর তুমরা হউ নবীর রওজারে পাক্কা কররায়।
৪৯ এরদায় আল্লা পাকেও তান নিজর মর্জিয়ে কইলা,
আমি তারার গেছে আমার নবী-রছুল বেজিমু,
এরার কেউররে তারা জুলুম করবো,
আর কেউররে কাতল করবো।
৫০ এতে দুনিয়ার পয়লা থাকি অখন পর্যন্ত যতো নবীরে কাতল করা অইছে,
এরা হক্কলর দায়ী অইবা অউ জমানার মানুষ।
৫১ হুনউক্কা,
আমি আপনাইন্তরে কইরাম,
পয়লা আদমর পুত হাবিলর খুন থাকি শুরু করিয়া,
নবী জাকারিয়ার খুন পর্যন্ত হকল লউর সাজা অউ জমানার মানষর গেছ থাকি আদায় করা অইবো।
নবী জাকারিয়ারে তো জেরুজালেমর পবিত্র কাবা শরিফর কুরবানি খানা,
আর খাছ পাক জাগার মাজখানো কাতল করা অইছে।
৫২ হায়রে লান্নতি আলিম অকল,
তুমরা মানষরেও আল্লার পথ চিনাইরায় না,
নিজেও আল্লার বাদশাইত হামাইরায় না,
আর যেরা হামাইতো চার,
তারারেও বাধা দিরায়।”
৫৩-৫৪ বয়ান বাদে ইছা ইখান থাকি রওয়ানা দিলাইলা।
তেউ আলিম আর ফরিশি অকলে মিজাজ গরম করিয়া ইছারে ফান্দো ফালাইতা করি খুচাই-ফাড়াই মাতিলা।
নানান নমুনার ছওয়াল করিয়া তানরে আটকানির সুযোগ তুকাইলা।