বেইমান মেনেজারর কিচ্ছা
১৬
 বাদে হজরত ইছায় তান সাগরিদ অকলরে কইলা,
“হুনো,
কুনু এক জমিদারর এক মেনেজার আছিল।
অউ মেনেজারর বদনাম বার অইলো,
হে বুলে তার মুনিবর ধন-ছামানা বিনাশ করিলার।
 বদনাম হুনিয়া মুনিবে তারে আনাইয়া কইলা,
তুমার নামে ইতা কিতা হুনরাম?
তুমার হিসাব-নিকাশ হকলতা সমজাই দেও।
তুমারে আর চাকরিত রাখতাম নায়।
 ইখান হুনিয়া মেনেজারে মনে মনে কইলো,
অখন আমি কিতা করতাম?
মুনিবে তো আমারে বিদায় দিলাইরা।
আমি তো মাটি কামও করতাম পারতাম নায়,
ভিক করতেও শরম লাগে।
অখন খাইমু কিলা?
 আইচ্ছা,
এক কাম করি,
যাতে আমার মেনেজারি গেলেগিও মানষর ঘরো আশ্রয় পাই।
 অউ হে কিতা করলো,
যারার গেছে তার মুনিবর পাওনা আছিল,
এক এক করি এরারে আনাইলো।
আনাইয়া পয়লা জনরে কইলো,
তুমার গেছে আমার মুনিবর কত পাওনা আছে?
 হেইন কইলা,
একশো মন তেল।
মেনেজারে কইলো,
জলদি করি তুমার খাতা বার করো,
আর একশর বদলা পইঞ্চাশ মন লেখিলাও।
 বাদে মেনেজারে দুছরা জনরে জিকাইলো,
তুমার গেছে কত পাইন?
হেইন কইলা,
একশো ফুরার গম।
মেনেজারে কইলো,
তুমার হিসাবো আশি ফুরার লেখিলাও।
 ইতা হুনিয়া হি জমিদারে অউ বেইমান মেনেজারর তারিফ করলা।
তাইন কইলা,
হে ধান্দাবাজ অইলেও বউত বড় বুদ্ধিমানর কাম করছে।
তে কিতা মনো করো,
ইতায় বুজা যায় না নি,
আল্লারাইয়া মানষর আখল থাকিও,
ই জমানার দুনিয়াবি মানষর পেচ-পাইচ্ছা বেশি।
 হুনো,
আমি কিতা কইরাম,
তুমরাও নাফরমান অউ জগতর ছামানা দিয়া মানষর লগে দুস্তি পাতাও,
যাতে ই ছামানা ফুড়াইগেলেও তুমরারে বেহেস্তর বাগানো ফুলর মালা দেওয়া অয়।
১০ “যে মানুষ সামাইন্য বেয়াপারে হক-হালাল রয়,
হে বড় বেয়াপারেও হক-হালাল রয়।
অইলে যে জনে সামাইন্য বেয়াপারে বেইমানি করে,
হে বড় বেয়াপারেও বেইমানি করে।
১১ তে তুমরা যুদি দুনিয়াবি ধন-ছামানার বেয়াপারে হক না রও,
তাইলে কে তুমরারে বিশ্বাস করিয়া আসল ধন দিবো?
১২ পরর ছামানা যুদি তুমরা ঠিক-ঠাক মতো বেবহার করতায় না পারো,
তে কে তুমরার নিজর ছামানা তুমরার আতো দিবো?
১৩ কুনু গুলামে একলগে দুই মুনিবর গুলামি করতো পারে না।
তে অইলে হে একজনরে ইংসাইবো,
আরক জনরে মায়া করব।
একজনরে ইজ্জত দিবো আর আরক জনরে এলামি করব।
তুমরাও অউলা,
আল্লাতালা আর ধন-ছামানা দুইওতার গুলামি একলগে করতায় পারতায় নায়।”
১৪ ইখান হুনিয়া ফরিশি মজহবর মানষে ইছারে লইয়া ঢং-তামশা লাগাইলা,
তারা তো টেকা-পয়সারে খুব মায়া করতা।
১৫ ইছায় তারারে কইলা,
“তুমরাউ তো মানষর ছামনে নিজর পরেজগারি দেখাও,
অইলে আল্লায় তুমরার দিলর খবর জানইন।
মানষর গেছে যেতা খুব দামি,
আল্লায় ইতারে ঘিন্নাইন।
১৬ হুনো,
এহিয়া নবীর সময় পর্যন্ত মুছার শরিয়ত,
আর নবী অকলর ছহিফা জারি আছিল।
অইলে অখন আল্লার বাদশাইর খুশ-খবরি তবলিগ করা অর,
আর মানষেও দিলে-জানে অনো দাখিল অইতা চাইরা।
১৭ ই শরিয়তর একটা হরফ বাতিল অওয়ার চাইতে,
আছমান-জমিন বিনাশ অওয়াখান বউত সুজা।
১৮ তে হুনো,
যে বেটায় নিজর বউরে তালাক দিয়া আরক বেটিরে হাংগা করে,
হে জিনাকুর।
অউলা তালাক পাওয়া কুনু বেটিরে যেগিয়ে বিয়া করে,
হে-ও জিনাকুর।”
লাছার হকির আর এক ধনি মানুষ
১৯ “এক ধনি বেটা আছিল,
হে রাজা-বাদশা অকলর লাখান দামি দামি কাপড়-চুপড় ফিনতো,
আর হামেশা জাক-জমক করিয়া ফুর্তি-আমোদ করতো।
২০ মানষে লাছার নামর এক হকির বেটারে হামেশা অউ ধনির দুয়ারর ছামনে বওয়াইয়া থইতা,
তার আস্তা গতরো পচা-ঘা আছিল,
২১ আর পথর কুত্তাইন্তে আইয়া তার ঘা জিফরাদি লেইতা।
অউ ধনিয়ে ভাত খাইয়া হারি আড্ডি-গুড্ডি গুড়া-গাড়া যেতা তলে ফালাইতা,
অতা খাওয়ার লাগি তার খুব ইচ্ছা আছিল।
২২ একদিন অউ হকির বেটা মরিগেল,
মরার বাদে আল্লার ফিরিস্তা অকলে তারে ইব্রাহিম নবীর কুলো নিয়া বওয়াইলা।
এরমাজে হউ ধনি বেটাও মরিগেল,
তারে দাফন করা অইল।
২৩ বাদে হে দোজখর আজাব থাকি আখতা উপরেদি চাইয়া দেখলো,
দুরই বেহেস্তর মাজে ইব্রাহিম নবী বই রইছইন,
তান কুলো হউ লাছার।
২৪ দেখিয়াউ হে চিল্লাইয়া কইলো,
বাবা ইব্রাহিম!
আমারে রহম করউক্কা।
লাছাররে আমার গেছে পাঠাউক্কা,
হে তার আংগুলির আগাখান পানিত বুড়াইয়া আমার জিফরারে ঠান্ডা করউক।
দোজখর ই আগুনিত আমার বড় আজাব অর।
২৫ ইব্রাহিমে কইলা,
বাবারে,
মনো করিয়া দেখো,
তুমার সুখ তুমি দুনিয়াতউ কামাইলিছো,
আর লাছারে বউত কষ্ট করছে।
অখন ইনো আইয়া হে আরামে আছে,
আর তুমি আজাবো আছ।
২৬ হুনো,
ইতা ছাড়াও তুমরার আর আমরার মাজে অখন বউত বড় ফাক রাখা অইছে।
ইনর কেউ ইচ্ছা করলেও তুমরার গেছে যাইতো পারতো নায়,
আর তুমরাও কেউ ইচ্ছা করলে ইনো আইতায় পারতায় নায়।
২৭ অউ হি ধনি বেটায় কইলো,
বাবা,
তে দয়া করি লাছাররে আমার বাবার বাড়িখানো পাঠাউক্কা।
২৮ হনো আমার আরো পাচগু ভাই রইছইন।
হে গিয়া আমার ভাইয়াইনরে হুশিয়ার করউক,
তারা যানু ই দোজখর আজাব থাকি বাচইন।
২৯ ইব্রাহিমে জুয়াপ দিলা,
তারার গেছে তো হজরত মুছা আর নবী অকলর উছিলায় বউত কিতাব বেজা অইছে,
তারা অউ তালিম হুনউক।
৩০ হউ ধনিয়ে কইলো,
না,
না,
বাবা ইব্রাহিম!
মুর্দা থাকি কেউ জিন্দা অইয়া তারার গেছে গেলেউ,
তারা তৌবা করবা।
৩১ ইব্রাহিমে কইলা,
তারা যুদি হজরত মুছা আর নবী অকলর কথা না হুনে,
তে মুর্দা থাকি জিন্দা অইয়া গেলেও তারা মানতো নায়।”