উম্মতর লাগি হজরত ইছার জরুরি তালিম (১৮:১-৩৫)
বেহেস্তি বাদশাইত বড় কে?
১৮
১ অউ সময় সাহাবি অকলে হজরত ইছার কান্দাত আইয়া জিকাইলা,
“হুজুর,
বেহেস্তি বাদশাইর মাজে হক্কল থাকি বড় কে?”
২ তেউ ইছায় এক হুরুতারে ডাকিয়া আনিয়া তারার মাজে উবা করাই কইলা,
৩ “আমি তুমরারে হাছাউ কইরাম,
তুমরা যুদি মন ফিরাইয়া অউ হুরুতার লাখান না অও,
তে কুনুমন্তেউ বেহেস্তি বাদশাইত হামাইতায় পারতায় নায়।
৪ যে জনে নিজরে অউ হুরুতার লাখান হুরু মনো করে,
বেহেস্তি বাদশাইত হে-উ হকল থাকি দামি।
৫ আর যে জনে আমার লাগি অউ হুরুতার লাখান কুনু ছাবালরে কবুল করে,
হে আমারেউ কবুল করে।
গুনার কাম থাকি হুশিয়ার রওয়া
৬ “হুনো,
আমার তরিকার অউ হুরু-মুরু একজনরে যেগিয়ে গুনার পথে টানিয়া নেয়,
অগুর লাগি আরো ভালা অইলো অনে,
অগুর গলাত পাথর বান্দিয়া দরিয়াত ফালাই দেওয়া।
৭ হায়রে দুনিয়া,
গুনার পথে নেওয়ার লাগি তুমার মাজে কতো উছকানি আছে!
উছকানি তো আইবোউ আইবো।
অইলে লান্নত হউ জনর উপরে,
যেগিয়ে গুনা করানির লাগি উছকানি দেয়।
৮ তুমার আত বা পাও যুদি তুমারে গুনার পথে টানে,
তে ই আত-পাও কাটিয়া ফালাই দেও।
দুইও আত-পাও লইয়া দোজখো জলা থাকি,
আতুর অইয়াও বেহেস্তো যাওয়া তুমার লাগি ভালা।
৯ তুমার চউখে যুদি তুমারে গুনার পথে টানে,
তে ই চউখ তুলিয়া ফালাই দেও।
দুইও চউখ লইয়া দোজখো জলা থাকি,
কানা অইয়াও আখের পাওয়া তুমার লাগি ভালা।
১০ “হুনো,
আমি কইরাম,
তুমরা অউ হুরুতার লাখান কুনু ছাবালরেও এলামি করিও না।
তারার ফিরিস্তা অকলে বেহেস্তর মাজে হর-হামেশা আমার বেহেস্তি বাফ আল্লা পাকর মুখ দেখরা।
১১ জানো নি,
যেরা বে-পথে গেছেগি,
এরারে বাচানির লাগিউ আমি বিন-আদম ই দুনিয়াত আইছি।
১২ “মনো করো,
কুনু মানষর একশোগু মেড়া আছে,
এর মাজর এগু মেড়া আরাই গেলে হে বাকি নিরানব্বইটা বন্দো থইয়া,
হউ আরাইল অগু তুকানিত যায় না নি?
১৩ আমি তুমরারে হাছাউ কইরাম,
হে যুদি ইকটা তুকাইয়া পায়,
তে যে নিরানব্বইগু আরছিল না,
অগুইন থইয়া যেগু আরি গেছিল,
অগুর লাগিউ হে খুব খুশি-বাসি করে।
১৪ ঠিক অউ লাখান,
তুমরার বেহেস্তি বাফ আল্লায়ও চাইন না,
অউ হুরুতাইন্তর মাজর এগু হুরুতাও বিনাশ অউক।
অপরাধিরে বুজাও
১৫ “তুমার কুনু ভাইয়ে যুদি তুমার গেছে দুষ করিলায়,
তে হে যেবলা নিরালায় থাকে,
অউ সময় তুমি একলা গিয়া তারে বুজাইও।
তুমার বুজ যুদি মানিলায়,
তে অউ ভাইর লগে তুমার ভাইয়ালি বাচাইলিলায়।
১৬ অইলে হে যুদি তুমার বুজ না মানে,
তে আরো দুই-একজন মাজর মানুষ লইয়া যাইও।
গিয়া তারার ছামনে তারে বুজাইও।
তেউ মুছার শরিয়তর অউ হুকুম পুরা অইবো,
‘দুই-তিনজন সাক্ষির কথায় যেকুনু বেয়াপার পরমান অয়।’
১৭ এরার বুজও যুদি হে না মানে,
তে তার বেয়াপারে জমাতো নালিশ দেও।
জমাতর কথা যুদি মানিলায় তে ভালা,
আর না মানলে তারে বিধর্মী বা ঘুষখুর তশিলদার মনো করিয়া,
তারে তার পথে ছাড়ি দেও।
১৮ তে আমি তুমরারে হাছা কথা কইরাম,
অউ দুনিয়াইত তুমরা যেতারে নাজাইজ কইবায়,
ইতা আল্লার দরবারো নাজাইজ অইযিবো,
আর তুমরা যেতারে জাইজ কইবায়,
আল্লার দরবারোও ইতা জাইজ অইবো।
১৯ “হুনো,
আমি তুমরারে আরো কইরাম,
তুমরার মাজর দুইজন যুদি একমত অইয়া কুনু বেয়াপারে দোয়া করে,
তে আমার বেহেস্তি বাফ আল্লায় অউ দোয়া কবুল করবা।
২০ আমার নামে যে জাগাত দুই বা তিন জন জমা অয়,
হউ জাগাত আমিও আজির থাকি।”
মাফ করার বেয়াপারে তালিম
২১ অউ সময় পিতরে আইয়া ইছারে কইলা,
“হুজুর,
আমার ভাইয়ে যুদি আমার গেছে বার বার দুষ করে,
তে আমি কতবার তারে মাফ করতাম?
সাত বার নি?”
২২ ইছায় কইলা,
“খালি সাত বার নায়,
আমি কইরাম,
তারে সত্তইর গুন সাত বার মাফ করিও।
২৩ “হুনো,
বেহেস্তি বাদশাই অলা এক বাদশার লাখান,
যেইন তান উজির-নাজিরর গেছে হিসাব-নিকাশ চাইলা।
২৪ বাদশায় হিসাব লওয়াত বইলে এরার মাজর অলা এক জনরে তান ছামনে আনা অইলো,
বাদশায় এর গেছে লাখ লাখ টেকা পাওনা আছলা।
২৫ অউ পাওনা ফিরত দিবার খেমতা এর নাই।
এরদায় বাদশায় হুকুম দিলা,
হে সুদ্ধা তার বউ,
পুয়া-পুড়িন গুলাম হিসাবে বিকি খাইয়া,
হকল সয়-সম্পত্তি বেচিয়া তান পাওনা আদায় করার লাগি।
২৬ অউ হুকুম হুনিয়া হে বাদশার পাওত ধরিয়া কান্দিয়া কইলো,
‘হুজুর,
আমারে থুড়া সুযোগ দেউক্কা,
আমি আপনার হকল পাওনা দিলাইমু।’
২৭ অউ তাইন দয়া করিয়া তারে ছাড়ি দিলা,
আর হকল দেনা মাফ করি দিলাইলা।
২৮ “বাদে হে বারে গিয়া তার লগর আরক চাকরিয়ানরে পাইলো।
অউ জনর গেছে হে একশো টেকা পাওনা আছিল।
পাইয়া তারে গলাত টিপা মারি ধরিয়া কইলো,
‘অই,
তুই আমার পাওনা টেকা দে।’
২৯ হউ জনে তার পাওয়ো পড়ি মিনত করি কইলো,
‘আমারে থুড়া সুযোগ দেও,
আমি তুমার হকল পাওনা দিলাইমু।’
৩০ অইলে হে এর কথা মানলো না।
তার টেকা না দেওয়া পর্যন্ত তারে জেলো হারাই থইলো।
৩১ “ইতা দেখিয়া তার লগর উজির-নাজির অকল খুব বেজার অইলা।
তারা গিয়া ইতা বাদশারে জানাইলা।
৩২ বাদশায় হউ চাকরিয়ানরে আনাইয়া কইলা,
‘হায়রে নাফরমান,
তুমি আমারে মিনত করায় আমি তুমার হকল দেনা মাফ করি দিলাইছলাম।
৩৩ তে আমি যেলা তুমারে দয়া করছলাম,
তুমিও অউলা তুমার লগর চাকরিয়ানরে দয়া করা উচিত আছিল না নি?’
৩৪ বাদে বাদশায় গুছা করিয়া তারে জেলো হারাইলা,
তান পাওনা আদায় অওয়ার আগ পর্যন্ত জেলর জল্লাদ সিপাইয়ে তারে কড়াকড়ি সাজা দিলা।
৩৫ “ঠিক অউ লাখান,
তুমরাও যুদি তুমরার ভাইরে দিল থাকি মাফ করি না দেও,
তে আমার বেহেস্তি বাফ আল্লায়ও তুমরারে অউলা সাজা দিবা।”